সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
ক্রিকেটে অবশেষে ‘অভিষেক’ হল ‘টাইম্ড আউট’ নিয়মের। সোমবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচে অ্যাঞ্জেলা ম্যাথেউজ এই নিয়মের জাঁতাকলে পড়ে আউট হয়ে গেলেন। কিন্তু ১৬ বছর আগে একই ভাবে আউট হতে পারতেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বিপক্ষের অধিনায়ক গ্রেম স্মিথ সে বার সহানুভূতি দেখিয়েছিলেন সৌরভের প্রতি। সোমবার যা দেখালেন না শাকিব আল হাসান।
২০০৭ সালে কেপ টাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। সেই টেস্ট ম্যাচে শুরুতেই একটি উইকেট হারিয়েছিল তারা। ফিল্ডিংয়ের সময় কিছু ক্ষণ বাইরে ছিলেন বলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যাট করতে নামতে পারছিলেন না সচিন তেন্ডুলকর। চার নম্বরে নামার কথা ছিল ভিভিএস লক্ষ্মণের। তিনি তখন স্নান করতে ব্যস্ত ছিলেন। পড়ে ছিলেন সৌরভ, যাঁর নামার কথা ছিল পাঁচে। তখন তিনি ট্র্যাকস্যুট পরে সাজঘরে বসে।
পরিস্থিতি বুঝে তড়িঘড়ি জামাকাপড় বদলে ব্যাট করতে নামেন সৌরভ। ভাল করে প্যাড, গ্লাভস পরার আগেই মাঠে নেমে পড়তে হয় তাঁকে। আইসিসি-র নিয়মানুযায়ী নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রোটিয়া অধিনায়ক স্মিথ গোটা দলকে নিয়ে ধৈর্য ধরে সৌরভের নামা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। আম্পায়ারের কাছে ‘টাইম্ড আউট’-এর আবেদন করেননি।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ২৫তম ওভারে ঘটে এই ঘটনা। সাদিরা সমরবিক্রম আউট হওয়ার পরে খেলতে নামেন ম্যাথেউজ। নির্ধারিত সময়েই মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু ব্যাট করতে যাওয়ার আগে হেলমেট পরার সময় ম্যাথেউজের হেলমেটের স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে যায়। ফলে তিনি নিজের দলের ডাগআউটের দিকে ইঙ্গিত করে বিকল্প একটি হেলমেট আনতে বলেন। সেই হেলমেট আনতে যে সময় লাগে, তার মাঝেই আম্পায়ারের দ্বারস্থ হন শাকিব। দাবি করেন, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে। তা হলে কেন ম্যাথেউজকে আউট দেওয়া হবে না?
শাকিবের আবেদনের পরে ম্যাথেউজের সঙ্গে আম্পায়ারেরা কথা বলেন। শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তাঁর হেলমেটের স্ট্র্যাপ ছিঁড়ে যাওয়ায় দেরি হয়েছে। নইলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ব্যাট করতে নামছিলেন তিনি। বাংলাদেশের আবেদনের পরে অনেক ক্ষণ ম্যাথেউজ, শাকিব ও আম্পায়ারদের মধ্যে আলোচনা হয়। কিন্তু আম্পায়ারেরা ক্রিকেটের নিয়মের মধ্যে থেকে ম্যাথেউজকে আউট দেন। একমাত্র যদি বাংলাদেশ আবেদন তুলে নিত, তা হলে ম্যাথেউজ বেঁচে যেতেন। কিন্তু শাকিব নিজের আবেদন থেকে সরেননি। সেই কারণে আউট হতে হয় ম্যাথেউজকে।
আইসিসি-র নিয়ম বলছে, একজন ব্যাটার আউট হওয়া বা অবসৃত হওয়ার ৩ মিনিটের মধ্যে (বিশ্বকাপে ২ মিনিট) নতুন ব্যাটার অথবা নন-স্ট্রাইকারকে এসে বল খেলার জন্যে তৈরি থাকতে হয়, যদি না আগে থেকে নতুন ব্যাটার আম্পায়ারের কাছে ‘টাইম’-এর আবেদন করে থাকেন। এই নিয়ম না মানা হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাটারকে ‘টাইম্ড আউট’ দেওয়ার অধিকার রয়েছে আম্পায়ারের।