বিরাট কোহলি। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নতুন পরিবার-নীতি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন বিরাট কোহলি। তাঁর দাবি ছিল, বিদেশ সফরে পরিবারের সঙ্গে থাকা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। জানা গিয়েছিল, কোহলির ক্ষোভের পর সুর নরম করতে পারে বিসিসিআই। কিন্তু তা নস্যাৎ করে দিয়ে বোর্ডের সচিব দেবজিৎ শইকীয়া স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও নিয়ম বদলাবে না।
বুধবার একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটে শইকীয়া জানিয়েছেন, আপাতত নীতি পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে বোর্ডের নীতির কোনও বদল হবে না। কারণ, ভারতীয় ক্রিকেটের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়ম ঘোষণার আগে অনেক আলোচনা হয়েছে। রাতারাতি কোনও নিয়ম তৈরি হয়নি। তাই সেটা বদলেরও কোনও সম্ভাবনা নেই।”
শইকীয়ার মতে, বোর্ডের নতুন নিয়ম নিয়ে কারও অসন্তোষ থাকতেই পারে। তিনি তা বলতেও পারেন। কারণ, ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত বোর্ড নেবে। শইকীয়া বলেন, “বোর্ড জানে, নতুন নিয়ম নিয়ে কারও অসন্তোষ থাকতে পারে। গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যেকের অধিকার রয়েছে নিজের মনে কথা বলার। এই নিয়ম এক জন ক্রিকেটারের জন্য করা হয়নি। প্রত্যেক ক্রিকেটার, কোচ, ম্যানেজার, সাপোর্ট স্টাফকে এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। সকলের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই সকলকেই তা মেনে চলতে হবে।”
কয়েক মাস আগে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে ব্যর্থতার পর বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের স্ত্রী, বান্ধবীদের যাওয়া নিয়ে নতুন নির্দেশ জারি করেছে বিসিসিআই। ৪৫ দিনের কম বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে ক্রিকেটারেরা পরিবার নিয়ে যেতে পারবেন না নতুন নিয়ম অনুযায়ী। ৪৫ দিনের বেশি সফরে সর্বোচ্চ ১৪ দিন পরিবার সঙ্গে রাখতে পারবেন তাঁরা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ক্রিকেটার ৪৫ দিনের বেশি সময়ের বিদেশ সফরে পরিবারকে ১৪ দিনের জন্য সঙ্গে রাখতে চাইলে তাঁকে কোচ, অধিনায়ক এবং বোর্ডের অনুমতি নিতে হবে। পরিবার সঙ্গে থাকার দিন নির্দিষ্ট করে জানাতে হবে। সেই ক’দিন পরিবারের শুধু থাকার খরচ বহন করবে বোর্ড। সন্তানের বয়স ১৮ বছরের কম হলে তবেই তার খরচ বোর্ড বহন করবে। ৪৫ দিনের বেশি একটি বিদেশ সফরে এমন সুযোগ এক বারই পাওয়া যাবে। ৪৫ দিন পর্যন্ত বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে পরিবারকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে দেশে ফেরার পর বোর্ডের এই নিয়ম নিয়েই সুর চড়িয়েছেন কোহলি। শনিবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘‘মনে হয় না মানুষ পরিবারের মূল্যবোধ সম্পর্কে কিছু বোঝে। আমি খুব হতাশ। মনে হয়, যাঁরা এই বিষয়গুলির সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নন, তাঁদের পরামর্শ শোনা হয়েছে। হয়তো তাঁদেরই মনে হয়েছে পরিবারের সদস্যদের জন্য পারফরম্যান্স খারাপ হয়। মাঠে কঠিন সময় কাটানোর পর পরিবারকে কাছে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিক থাকার জন্য এটা কত জরুরি, সেটা হয়তো বোঝানো যাবে না।’’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘কঠিন পরিস্থিতিতে পরিবার পাশে থাকলে স্বাভাবিক থাকা যায়। স্বাভাবিক থাকলে তবেই তো দায়িত্ব পালন করা যাবে। আমি অন্তত পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। ঘরে কেউ একা একা বিমর্ষ ভাবে থাকতে চায় না।” কোহলি অভিযোগ করলেও বোর্ড যে তার তোয়াক্কা করছে না, তা শইকীয়ার কথা থেকেই স্পষ্ট।