India Vs Bangladesh

ওপেন করতে হবে জানতেন তিন সপ্তাহ আগেই, গম্ভীরদের আস্থার মর্যাদা দিতে পেরে খুশি ‘ব্যর্থ’ সঞ্জু

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার পর ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন না সঞ্জু। দল পাশে থাকায় তিনি খুশি। আরও বেশি খুশি হয়েছেন গম্ভীর, সূর্যকুমারদের মুখে হাসি দেখে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১১:০৫
picture of Sanju Samson

সঞ্জু স্যামসন। ছবি: বিসিসিআই।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ২০১৫ সালে। প্রায় এক দশকেও ভারতীয় দলে জায়গা পাকা করতে পারেননি সঞ্জু স্যামসন। প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করতে পারেননি। বার বার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ফর্মে থাকলে ব্যাট হাতে কী করতে পারেন, তা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেখিয়ে দিয়েছেন হায়দরাবাদে। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে প্রথম শতরান করে আলোচনায় উঠে এসেছেন সঞ্জু।

Advertisement

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিনটি ম্যাচেই সঞ্জুকে দিয়ে ইনিংস শুরু করেছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। শনিবার ৪৭ বলে ১১১ রানের ইনিংস খেলেছেন। নতুন ভূমিকা নিয়ে সঞ্জু বলেছেন, ‘‘সিরিজ় শুরুর তিন সপ্তাহ আগে দল থেকে আমাকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। মনে হয় কোচ গম্ভীর, অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এবং ব্যাটিং কোচ অভিষেক নায়ার মিলে আমাকে দিয়ে ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আগে থেকে জানতে পারায় মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি।’’ ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি কী ভাবে নিয়েছেন? সঞ্জু বলেছেন, ‘‘রাজস্থান রয়্যালসের অ্যাকাডেমিতে চলে গিয়েছিলাম। ওখানে নতুন বলে ব্যাট করার প্রচুর অনুশীলন করেছি। বোলারদের সব রকম বলে শট খেলার চেষ্টা করেছি। এই ধরনের প্রস্তুতি নিতে পারলে কাজে আসে। অন্য সিরিজ়গুলোর তুলনায় এ বার আমি ১০ শতাংশ বেশি প্রস্তুতি নিয়েছি। দল থেকে পরিষ্কার বার্তা পাওয়া গেলে প্রস্তুতি নিতে সত্যিই সুবিধা হয়।’’

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার পর ভারতীয় দলে আবার সুযোগ পাওয়া নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন না সঞ্জু। আইপিএলে রাজস্থানের অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দু’টি ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছিলাম। তার পর ভাবিনি পরের সিরিজ়ের দলে থাকব। কিন্তু দলের সকলকে পাশে পেয়েছি। আমাকে বলা হয়েছিল, ‘আমরা তোমার পাশে আছি। তুমি চেষ্টা কর। ফল যাই হোক।’ ব্যর্থতা নিয়ে আমাকে ভাবতেই দেওয়া হয়নি। শুধু মুখে পাশে থাকার কথা বলেনি। সেটা কাজেও করে দেখিয়েছে। এটাই আমার আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনেছে।’’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা কম নেই সঞ্জুর। তবু কখনও হাল ছাড়েননি ২৯ বছরের ক্রিকেটার। সঞ্জু বলেছেন, ‘‘বড় মঞ্চে খেলা সহজ নয়। ভারতের জার্সি গায়ে তো নয়ই। ব্যর্থ হলে মনে হতে পারে, অন্তত নিজের জন্য কিছু রান করার চেষ্টা করি। আমি সে ভাবে ভাবি না। আমার কাছে সমর্থকেরা, সতীর্থেরা এবং দলই সব।’’

শনিবারের ম্যাচে বাংলাদেশের রিশাদ হোসেনকে এক ওভারে পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন সঞ্জু। প্রতিটি শট উড়ে গিয়েছে গ্যালারিতে। সঞ্জু জানিয়েছেন, প্রায় এক বছর ধরে এমন একটা কিছু করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এমন একটা কিছু করার চেষ্টা এক বছর ধরে করছিলাম। কিন্তু চাইলেই তো করা যায় না। এত দিনে করতে পারলাম। টিম ম্যানেজমেন্ট আমার উপর যে আস্থা রেখেছে, তার প্রতিদান দিতে পেরে ভাল লাগছে। কোচ, অধিনায়কের মুখের হাসি আমাকে খুশি করেছে।’’

ব্যর্থতা নিয়ে সঞ্জু বলেছেন, ‘‘কী করতে পারি আর কী করেছি, এই ভাবনাগুলো হতাশা নিয়ে আসে। ব্যর্থ হলে এই ধরনের ভাবনা মাথায় আসেই। অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি চাপ এবং ব্যর্থতা কী ভাবে সামলাতে হয়। আমি অনেক বার ব্যর্থ হয়েছি। তাই বিষয়টা ভালই জানি। নিজের মনকে ঠিক ভাবে চালনা করতে হয়। শুধু নিজের কাজ নিয়ে ভাবার চেষ্টা করি। অনুশীলন চালিয়ে যাই। নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে পারলে এক দিন না এক দিন ফল পাওয়া যায়ই।’’

বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দেওয়ার পর দলের লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছেন সঞ্জু। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য এখন ব্যাট হাতে সব প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা। বল হাতেও একই জিনিস করতে চাইছি আমরা।’’

আরও পড়ুন
Advertisement