Ranji Trophy

রঞ্জি ফাইনালে শুধু ব্যাটিং-বোলিং নয়, ফিল্ডিংয়েও বাংলাকে টেক্কা দিচ্ছে সৌরাষ্ট্র

মধ্যাহ্নভোজের পর অভিনব কায়দায় ক্যাচিং অনুশীলন দেখা গেল সৌরাষ্ট্রের ফিল্ডারদের। রঞ্জি ফাইনালে শুধু ব্যাটিং বা বোলিং নয়, ফিল্ডিংয়েও বাংলাকে টেক্কা দিচ্ছে সৌরাষ্ট্র।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:২৪
saurashtra team celebrating

ফিল্ডিংয়েও পারদর্শিতার উদাহরণ দিচ্ছে জয়দেব উনাদকাটের দল। ছবি: পিটিআই

শনিবার ইডেন গার্ডেন্সে তৃতীয় দিনের খেলা তখনও শুরু হয়নি। সৌরাষ্ট্রের ডাগ আউটের সামনে ছোট জায়গায় গোল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে চলছিল ফুটবল খেলা। ম্যাচের নামার আগে গা গরম নেওয়ার চেনা প্রয়াস। একই সঙ্গে, ফিটনেসও ভাল রাখে ফুটবল নিয়ে হালকা কসরত। এ ছাড়া, মধ্যাহ্নভোজের পর অভিনব কায়দায় ক্যাচিং অনুশীলন দেখা গেল সৌরাষ্ট্রের ফিল্ডারদের। সব মিলিয়ে, রঞ্জি ফাইনালে শুধু ব্যাটিং বা বোলিং নয়, ফিল্ডিংয়েও বাংলাকে টেক্কা দিচ্ছে সৌরাষ্ট্র।

অতীতে ভারতীয় দলে ফুটবল নিয়ে কসরত করা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। গ্রেগ চ্যাপেলের আমল থেকে শুরু হয়। সচিন তেন্ডুলকর, রাহুল দ্রাবিড় বা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রত্যেকেই কোনও না কোনও সময় ফুটবল নিয়ে কসরত করেছেন। তার পরে ভারতীয় দলে এসেছেন বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, কেএল রাহুলরা। তাঁদেরও অনুশীলনের মাঝে ফুটবল নিয়ে কসরত করতে দেখা যেত। রবি শাস্ত্রী কোচ থাকাকালীন বেশ কিছু ক্রিকেটার চোট পাওয়ায় এখন সেই প্রথা নেই। কিন্তু সৌরাষ্ট্র দলে তেমন কিছু নেই। ফলে শেলডন জ্যাকসন, অর্পিত বাসবড়া, প্রেরক মানকড়দের মজা করে ফুটবল খেলতে দেখা গেল। কোচেরা বলেন, এতে দলগত ঐক্য আরও বাড়ে। সৌরাষ্ট্রের খেলায় সেই জিনিস বার বার দেখা গিয়েছে।

Advertisement
সচিনের ফুটবল অনুশীলন।

সচিনের ফুটবল অনুশীলন। ফাইল ছবি

ক্যাচিং অনুশীলনের মধ্যেও অভিনবত্ব। তখন তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্নভোজের বিরতি চলছে। সৌরাষ্ট্র দলের দুই সাপোর্ট স্টাফ মাঠের এক ধারে নেমে পড়লেন কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে। একজন কোচের হাতে টেনিস র‌্যাকেট। আর একজন কোচের হাতে বল। তিনি বল ছুড়ে দিচ্ছেন। অপর জন টেনিস র‌্যাকেট দিয়ে সেটি ফিল্ডারদের দিকে মারছেন। কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা সেই ফিল্ডারদের দ্রুত গতিতে ক্যাচ নিতে হচ্ছে। ক্লোজ়-ইন (স্লিপ, লেগ স্লিপ, ফরোয়ার্ড শর্ট লেগ) ফিল্ডিংয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্যেই এ ধরনের অনুশীলন। প্রথম একাদশের কোনও ক্রিকেটার সেই অনুশীলনে ছিলেন না। তবে তাঁরাও নিয়মিত এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই যান। প্রমাণ পাওয়া গেল সুমন্ত গুপ্তের আউটের ক্ষেত্রে। অফস্টাম্পের বাইরে চেতন সাকারিয়ার বলে খোঁচা দিলেন। দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা প্রেরক ক্ষিপ্র ভাবে সেই ক্যাচ তালুবন্দি করলেন। অন্য দিকে, সৌরাষ্ট্রের ইনিংসের শেষ দিকে একটি সহজ ক্যাচ ফেলে দেন অভিমন্যু ঈশ্বরণ।

আরও এক ধরনের অনুশীলন দেখা গেল। এটি মূলত বোলারদের জন্য। সৌরাষ্ট্রের দুই কোচ পাশাপাশি দাঁড়িয়েছিলেন। উল্টো দিকে এক এক করে ক্রিকেটার কিছুটা দৌড়ে এসে বল করছিলেন। একজন কোচ সেই বল ধরছিলেন। টেনিস র‌্যাকেট হাতে থাকা অপর কোচ সঙ্গে সঙ্গে সেই বোলারের উদ্দেশে ক্যাচ ছুড়ে দিচ্ছিলেন। অর্থাৎ, বল করার পরেই ফলো থ্রুতে ক্যাচ উড়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে যাতে তা তালুবন্দি করে নেওয়া যায়, তার জন্যেই এমন অনুশীলন। সৌরাষ্ট্রের ক্রিকেটাররা বেশ পারদর্শিতার সঙ্গে নাগাড়ে সেই কাজ করে গেলেন।

রঞ্জি ফাইনালে বাংলার ভবিষ্যৎ কী, তা এখনও হয়তো জানা যায়নি। কিন্তু ফিল্ডিংয়ে যে ইতিমধ্যেই তারা বাংলাকে টেক্কা দিয়েছে, তা প্রমাণিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement