ক্যাচ ফস্কানোর মুহূর্তে কোহলি। ছবি: সমাজমাধ্যম।
চলতি আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের ফিল্ডিং বার বার কাঠগড়ায় এসেছে। প্রতিটি ম্যাচে একাধিক ক্যাচ ছেড়েছে তারা। ফিল্ডিংয়ের সময় বল ফস্কেছে বার বার। সেই একই ‘রোগ’ রাজস্থান এবং বেঙ্গালুরুরও হল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। রবিবার রাজস্থানকে ৯ উইকেটে হারাল বেঙ্গালুরু। তবে চিন্তা থেকে গেল দু’দলের ফিল্ডিং নিয়েই।
রাজস্থানের ইনিংস চলাকালীন বেঙ্গালুরুর ফিল্ডারেরা যে ভাবে একের পর এক বল ফস্কেছেন তা প্রশ্ন তুলতে বাধ্য। সহজ সহজ ক্যাচও ধরতে পারেননি। এমনকি কোহলির হাত থেকেও ক্যাচ ফস্কেছে। ১৭তম ওভারের শেষ বলে সুযশ শর্মাকে তুলে মেরেছিলেন ধ্রুব জুরেল। লং-অফে লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দেন কোহলি।
তার আগে যশ দয়ালও একই কাজ করেন। এ বার সুযশের বলে রিয়ান পরাগ চালিয়েছিলেন। দয়াল দৌড়ই শুরু করেন দেরিতে। শেষ মুহূর্তে ক্যাচ ধরার চেষ্টা করলেও আঙুলের ফাঁকে লেগে বল চার হয়ে যায়। তার ঠিক আগের বলেই জিতেশের সামনেও একটি সুযোগ এসেছিল। তিনি সেটি কাজে লাগাতে পারেননি।
এর উল্টো চিত্রও রয়েছে। ১৩তম ওভারের শেষ বলে ঘটনাটি ঘটেছে। ক্রুণাল পাণ্ড্যের বল ডিপ মিড উইকেটে পাঠিয়েছিলেন যশস্বী। শরীর ছুড়ে দিয়ে সেই বল নিশ্চিত ছয় হওয়া থেকে আটকান সল্ট। মাত্র এক রান পান যশস্বী।
বেঙ্গালুরুর যদি এই অবস্থা হয় তা হলে পিছিয়ে ছিল না রাজস্থানও। তারা একই ওভারে ফিল সল্ট এবং কোহলির ক্যাচ ফেলেছে। এই দু’জনই ম্যাচ জিতিয়েছেন বেঙ্গালুরুকে। চতুর্থ ওভার করতে আসেন সন্দীপ শর্মা। তাঁর প্রথম বল তুলে মারেন। লং-অনে সহজ ক্যাচ ফেলেন রিয়ান পরাগ। সেই ওভারেরই পঞ্চম বলে সল্টের ক্যাচ ফেলে দেন সন্দীপ নিজেই। সল্ট ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন। ব্যাটের কানায় লেগে তা বোলার সন্দীপের দিকেই এগিয়ে আসে। সন্দীপ ধরতে পারেননি।
ষষ্ঠ ওভারে আসে যশস্বীর ক্যাচ ফেলার পালা। সল্টের ক্যাচ ফেলে দেন যশস্বী। বল তালুবন্দি করলেও কব্জি মাটিতে ধাক্কা খাওয়ায় বল হাত থেকে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সেই বল বোলারের প্রান্তে ছুড়ে দেন যশস্বী। সন্দীপ উইকেটের কাছে ছিলেন না। থাকলে বল ধরে উইকেট ভেঙে দিতে পারতেন। শেষের দিকে মাহিশ থিকশানা আরও একটি সহজ ক্যাচ ফেলেন।
বেঙ্গালুরুর জয়ে আবার নায়ক হয়ে থাকলেন সল্ট এবং কোহলি। আরও একটা অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতল বেঙ্গালুরু। শুরু থেকে আগ্রাসী মেজাজে খেলতে থাকেন সল্ট। দু’বার জীবন পাওয়ার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে যান। ৩৩ বলে ৬৫ করে আউট হন সল্ট। কোহলি অপরাজিত থাকেন ৪৫ বলে ৬২ রানে। ভাল খেলেন দেবদত্ত পাড়িক্কলও। তিনি ২৮ বলে ৪০ রানে অপরাজিত থাকেন।
তার আগে যশস্বীর সৌজন্যে লড়াকু রান তোলে রাজস্থান। বাকি ব্যাটারেরা উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। কঠিন পিচে রান তোলাও সহজ কাজ ছিল না। জয়পুরের দুপুরে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে খেলতে নেমেছিল দুই দল। ম্যাচের আগে দুই বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, এই পিচে ভাল রান ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত সঞ্জু স্যামসন রান পাবেন। এখনও পর্যন্ত ওই পিচে খেলে তিনি কখনও আউট হননি। তার কিছু ক্ষণ পরে রিয়ান পরাগ জানান, রান তুলতে গেলে পরিশ্রম করতে হবে।
ম্যাচ শুরুর পর দেখা গেল রিয়ানের কথাই ঠিক। শুরু থেকেই রাজস্থানের ব্যাটারেরা খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ভুবনেশ্বর কুমার এবং জশ হেজ়লউড চাপে রেখেছিলেন সঞ্জু এবং যশস্বীকে। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে মাত্র একটি ওভারে ১০-এর বেশি রান তোলে রাজস্থান।
জীবন পেয়েও খুব ভাল খেলতে পারেননি রিয়ান। তাঁকেও রান করতে পরিশ্রম করতে হচ্ছিল। দয়ালের বলে বিরাট কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। তবে অর্ধশতরানের পর চালিয়ে খেলার চেষ্টা করছিলেন যশস্বী। তিনি ফেরেন ১৬তম ওভারে। হেজ়লউডের বল প্যাডে লাগার পর পরিষ্কার বোঝাই যাচ্ছিল আউট। তবু যশস্বী একটি রিভিউ নষ্ট করেন।