গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
একটা ক্যাচ ক্রিকেট বিশ্বে স্মরণীয় করে রেখেছে জন্টি রোডসকে। ১৯৯২ বিশ্বকাপে তাঁর ধরা পাকিস্তানের ইজাজ আহমেদের ক্যাচের কথা এখনও ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখে মুখে ফেরে। নিউ জ়িল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপ্সকেও ক্রিকেটপ্রেমীরা মনে রাখতে পারেন একটি ক্যাচের জন্য। তাঁর ক্যাচ ফেরাল ৩২ বছর আগের স্মৃতি।
শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে গালিতে ফিল্ডিং করছিলেন ফিলিপ্স। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে অলি পোপের যে ক্যাচটা ফিলিপ্স ধরলেন, তা নিঃসন্দেহে বছরের সেরা ক্যাচের তালিকায় থাকবে। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ক্যাচের তালিকায় জায়গা পেলেও বিস্ময়ের হবে না। এই প্রথম নয়, আগেও বেশ কিছু ভাল ক্যাচ নিয়েছেন ফিলিপ্স। ক্যাচ ধরার দক্ষতার জন্য সতীর্থেরা তাঁকে ডাকেন ‘বাজপাখি’ বলে। তিনি যে সত্যিই সতীর্থদের দেওয়া নামের যোগ্য, তা আরও এক বার বুঝিয়ে দিলেন। ক্রিকেটজীবনে বেশ কিছু অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিলেও রোডস স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন ব্রিসবেনে নেওয়া সেই ক্যাচের জন্য। ফিলিপ্সকেও একই ভাবে স্মরণীয় করে রাখতে পারে ক্রাইস্টচার্চের ক্যাচ।
ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা ক্যাচের তালিকা বার বার বদলে গিয়েছে। নানা সময়ে বিভিন্ন ক্রিকেটার জায়গা করে নিয়েছেন ভাল ক্যাচ ধরে। আবার কিছু ক্যাচ তালিকায় স্থায়ী ভাবে থেকে গিয়েছে। যেমন ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে ভিভ রিচার্ডসের দেওয়া ক্যাচ পিছন দিকে বেশ খানিকটা দৌড়ে তালুবন্দি করেছিলেন কপিল দেব। তখনকার দিনে সেই ক্যাচ ছিল অবিশ্বাস্য। এখনকার আধুনিক ক্রিকেটেও কপিলের মতো ক্যাচ ধরা সহজ নয়। আবার গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে ডেভিড মিলারের মারা ছক্কাকে অবিশ্বাস্য ভাবে ক্যাচে পরিণত করেছিলেন সূর্যকুমার যাদব। ১৯৮৩ সালে কপিলের সেই ক্যাচ বা ২০২৪ সালে সূর্যকুমারের ক্যাচ— দু’টি ক্যাচই ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ক্রিকেটের ইতিহাসে ভাল ক্যাচের সংখ্যা কম নয়। রিকি পন্টিং, মহম্মদ আজহারউদ্দিন, যুবরাজ সিংহ, এবি ডিভিলিয়ার্স, পল কলিংউডের মতো ক্রিকেটার বেশ কিছু স্মরণীয় ক্যাচ নিয়েছেন।
নিউ জ়িল্যান্ডের ফিল্ডিং শুক্রবার ভাল হয়নি। ছ’টি ক্যাচ ফেলেছেন কিউয়ি ক্রিকেটারেরা। ইংল্যান্ডের হ্যারি ব্রুক একাই চার বার বেঁচে গিয়েছেন ক্যাচ দিয়ে। ব্যক্তিগত ১৮ রানের মাথায় ব্রুকের দেওয়া প্রথম ক্যাচ ধরতে পারেননি ফিলিপ্সই। তার পর ৪১, ৭০ এবং ১০৬ রানের মাথায়ও তিনটি ক্যাচ দিয়েছেন ইংরেজ ব্যাটার। টম লাথাম, ডেভন কনওয়ে, টম ব্লান্ডেলেরা ধরতে পারেননি। স্বভাবতই ঘরের মাঠে চাপে ছিল নিউ জ়িল্যান্ড। সেই চাপের মধ্যেই ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৫৩তম ওভারে পোপের দেওয়া ক্যাচ তালুবন্দি করেছেন ফিলিপ্স। এ রকম ক্যাচ ধরলে বিশ্বের যে কোনও ক্রিকেটার গর্বিত হতে পারেন। বিশ্বের যে কোনও গোলরক্ষক ফিলিপ্সের মতো উড়ে গিয়ে গোল বাঁচাতে পারলেও কম কৃতিত্বের হত না।
ফিলিপ্সের ক্যাচেই শেষ হয় পঞ্চম উইকেটে ব্রুক-পোপের ১৫১ রানের জুটি। তার আগে নিউ জ়িল্যান্ডের ৩৪৮ রানের জবাবে ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল ইংল্যান্ড। কিউয়ি ক্রিকেটারেরা ক্যাচ ফেলে ফেলে বেন স্টোকসের দলকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে এনেছেন। দিনের শেষে ফিলিপ্সের ক্যাচই স্বস্তি টম লাথামের দলের কাছে। দ্বিতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ৫ উইকেটে ৩১৯। ব্রুক ১৩২ রানে এবং স্টোকস ৩৭ রানে অপরাজিত রয়েছেন। পোপ করেছেন ৭৭ রান।