কপিল দেব। —ফাইল চিত্র
গত আইপিএলে বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীরের মধ্যে বিবাদ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। সেই বিবাদ নিয়ে ৯১ দিন পরে মুখ খুলেছেন কপিল দেব। ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক সমালোচনা করেছেন কোহলি, গম্ভীর দু’জনেরই। সেই সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেও নিশানা করেছেন তিনি।
একটি সাক্ষাৎকারে কপিল বলেন, ‘‘যেটা ঘটেছে খুব দুর্ভাগ্যজনক। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই আমার খুব কাছের। কোহলি দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। অন্য দিকে গম্ভীর এখন লোকসভার সাংসদ। তাই ওরা এই ভাবে ঝামেলা করলে তার প্রভাব মাঠের বাইরেও পড়ে। সেটা ওদের বুঝতে হবে। এটা ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে ভাল বিজ্ঞাপন নয়।’’
এই বিষয়ে বিসিসিআইয়ের সমালোচনাও করেছেন কপিল। তাঁর কথায়, ‘‘বিসিসিআইয়ের উচিত ক্রিকেটারদের বোঝানো। ওরা অনেকের আদর্শ। তাই এ ভাবে ব্যবহার করলে দেশের তরুণ প্রজন্মের উপর তার প্রভাব পড়ে। ক্রিকেট বোর্ডের উচিত, ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলা।’’
ক্রিকেট জীবনে তিনি নিজেও মাঠে অনেক বার মাথা গরম করেছেন। কিন্তু মাঠের ঝামেলা মাঠেই রেখে এসেছেন বলে জানিয়েছেন কপিল। তিনি বলেন, ‘‘আমার কি মাঠে ঝামেলা হয়নি? অনেক বার হয়েছে। ক্রিকেট মাঠে আবেগের বিস্ফোরণ হবেই। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে মাঠের ঝামেলা যেন মাঠেই শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সেই সব নিয়ে যাতে কেউ বিতর্ক না বাড়ায়। আমি কোনও দিন সেটা করিনি। কারণ, অন্যেরা এই সব ঝামেলা থেকে নিজের ফায়দা তোলার চেষ্টা করে। সেটা ওদের মাথায় রাখা উচিত ছিল।’’
গত ১ মে আইপিএলে আরসিবি বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টসের ম্যাচ চলাকালীন মাঠে লখনউয়ের ক্রিকেটার নবীন উল হকের সঙ্গে বিবাদ হয় কোহলির। পরিস্থিতি সামলাতে এগিয়ে আসতে হয় আম্পায়ারদের। সেই বিবাদ ম্যাচের পরেও চলতে থাকে। নবীন আউট হওয়ার সময় উত্তেজিত হয়ে উল্লাস করেন কোহলি। টুপি খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলেন। সেটা ভাল ভাবে নেননি নবীন। তাই হাত মেলানোর সময় কোহলিকে কিছু একটা বলেন লখনউয়ের বিদেশি ক্রিকেটার। পাল্টা কিছু বলেন কোহলিও। তার পরেই সেখানে আসেন গম্ভীর। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেন। তার পরেই বিবাদ বেড়ে যায়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে দেখে সেখানে এসে উপস্থিত হন দু’দলের বাকি ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা। কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেই দিল্লির। লখনউয়ের স্পিনার অমিত মিশ্র ও সহকারী কোচ বিজয় দাহিয়াও দিল্লির হয়ে খেলেছেন। সেই কারণে তাঁরা কোহলি, গম্ভীরকে ভাল ভাবে চেনেন। তাঁরাই বেশি উদ্যোগী হয়ে দু’জনকে আলাদা করেন। লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও ছিলেন সেখানে। কোহলিকে সরিয়ে নিয়ে যান আরসিবির অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি।
এই ঝামেলার জন্য কোহলি ও গম্ভীর দু’জনেরই ম্যাচ ফি-র ১০০ শতাংশ কেটে নেয় বিসিসিআই। তার পরেও ঝামেলা থামেনি। এক দিকে কোহলি যেমন বোর্ডকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন, অন্য দিকে গম্ভীর সমাজমাধ্যমে খোঁচা দেন ভারতীয় ব্যাটারকে। সেই বিষয়টা মাঠেই শেষ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন কপিল।