মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
গত বিশ্বকাপে ২৪টি উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার হয়েছিলেন মহম্মদ শামি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তাঁর পারফরম্যান্স এখনও মনে রয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের। সেই ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়ার পর মাটিতে নমাজ পড়ার ভঙ্গিতে বসে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন শামি। যা নিয়ে অনেকে তাঁর সমালোচনা করেছিলেন। বিশ্বকাপের পরই সমালোচকদের জবাব দিয়েছিলেন শামি। সেই ঘটনা নিয়ে আবারও সরব হয়েছেন বাংলার ক্রিকেটার।
সেই ঘটনা নিয়ে আবার মুখ খুলেছেন শামি। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শ্রীলঙ্কার ইনিংস ৫৫ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মূল কারিগর বলেছেন, ‘‘কিছু লোক বলেছিলেন, আমি উইকেট নেওয়ার পর সেজদা করতে চেয়েছিলাম। অথচ আমি তা করিনি। অনেকে আমাকে দেশ থেকে বের করে দিতে বলেন। অনেকে আমার জাত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আসলে যার মনে যে নোংরামি রয়েছে, সেগুলি প্রকাশ করে ফেলেন। আমার বোলিং নয়, তাঁদের আগ্রহ অন্য কিছু নিয়ে।’’
শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ১৮তম ওভারে কাসুন রাজিথাকে আউট করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেছিলেন শামি। তা নিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি টানা পাঁচ ওভার বল করছিলাম। নিজের সব টুকু দিয়ে বল করছিলাম। কিছুটা বেশি চেষ্টাও করছিলাম। স্বভাবতই ক্লান্ত লাগছিল। কয়েকটা বল ব্যাটের খুব কাছ দিয়ে চলে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম উইকেট পেয়ে হাঁটু মুড়ে বসে পরেছিলাম। সতীর্থদের কেউ আমাকে পিছন থেকে হালকা ধাক্কা দেওয়ায় সামনের দিকে একটু ঝুঁকে যাই সে সময়। সেই মুহূর্তের ছবি সমাজমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পরে। লোকে ভেবে নেয়,আমি বোধহয় সেজদা করছিলাম। অথচ ব্যাপারটা এক দমই তা নয়। যাঁরা এ সব বলেন, তাঁদের একটাই পরামর্শ দেব। দয়া করে এই ধরনের কাজ বন্ধ করুন।’’
ক্ষুব্ধ শামি আরও বলেছেন, ‘‘প্রথমত বলে রাখি, কাউকে ভয় পাই না। আমি এক জন মুসলিম। আগে অনেক বার বলেছি, মুসলিম হিসাবে আমি গর্বিত। একই সঙ্গে আমি ভারতীয় হিসাবেও গর্বিত। আমার কাছে দেশ সবার আগে। কারও সমস্যা হলেও পরোয়া করি না। আমি আনন্দের সঙ্গে বাঁচি এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করি। তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে কিছু নেই। যাঁরা শুধু সমাজমাধ্যমে এই সব খেলা খেলেন, তাঁদের আমি পাত্তা দিই না। আর আমি সত্যিই সেজদা করতে চাইলে, ঠিকই করতাম। এটা নিয়ে কারও ভাবার দরকার নেই।’’
৩৩ বছরের জোরে বোলার এখনও মাঠে ফিরতে পারেননি। বিশ্বকাপের পর থেকে গোড়ালির চোটের চিকিৎসা করছেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মেডিক্যাল টিমের পরামর্শে লন্ডনে গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। সম্ভবত আইপিএলে মাঠে ফিরবেন শামি। তবে বিশ্বকাপের শ্রীলঙ্কা ম্যাচের সেই ঘটনা নিয়ে যে তাঁর ক্ষোভ এখনও কমেনি তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন এ বারের অর্জুন পুরস্কার জয়ী।