পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আউট হয়ে ফিরছেন বৈভব সূর্যবংশী। ছবি: সমাজমাধ্যম।
নজর ছিল বৈভব সূর্যবংশীর দিকে। কয়েক দিন আগেই আইপিএলের নিলামে তাঁকে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছে রাজস্থান রয়্যালস। মাত্র ১৩ বছর বয়সে কোটিপতি হওয়া বৈভব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যর্থ। ২৮২ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১ রান করে আউট হলেন তিনি। পাকিস্তানের বোলারদের সামনে নিখিল কুমার ছাড়া ভারতের কোনও ব্যাটারই রান পেলেন না। ফলে ৪৪ রানে হারতে হল ভারতকে। প্রথম ম্যাচ জিতে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ শুরু করল পাকিস্তান।
এর আগে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে দু’দলের মধ্যে ১২টি ম্যাচ হয়েছিল। ভারত জিতেছিল ৯টি। পাকিস্তান ৩টি। পরিসংখ্যানে ভারত এগিয়ে থাকলেও এই ম্যাচে দেখে এক বারও মনে হল না এগিয়ে থেকে নেমেছে তারা। উল্টে পাকিস্তানের পরিকল্পনা অনেক বেশি স্পষ্ট দেখাল। অনেক বড় ব্যবধানে হারতে পারত ভারত। ২০০-র আগেই অল আউট হয়ে যেতে পারত তারা। কিন্তু শেষ উইকেটে লড়াই করেন মহম্মদ এনান ও যুধাজিৎ গুহ। বিশেষ করে এনান কয়েকটি বড় শট খেলেন। তবে তত ক্ষণে খেলার ছবি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাদের লড়াই জলে যায়। হেরে মাঠ ছাড়ে ভারত।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার শাহজাইব খান ও উসমান খান পাকিস্তানের জয়ের ভিত গড়ে দেন। শাহজাইব আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছিলেন। অন্য প্রান্তে উসমান ধরে খেলছিলেন। নতুন বল কাজে লাগাতে পারেননি ভারতীয় বোলারেরা। প্রথম ৩০ ওভারে পাকিস্তানের কোনও উইকেট ফেলতে পারেননি তাঁরা। ওপেনিং জুটিতে ১৬০ রান করেন শাহজাইব ও উসমান। ৬০ রান করে উসমান আউট হলেও শাহজাইব নিজের ব্যাটিং চালিয়ে যেতে থাকেন। শতরান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৪৭ বলে ১৫৯ রান করে আউট হন শাহজাইব। ৫টি চার ও ১০টি ছক্কা মারেন তিনি। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ভারতের বিরুদ্ধে কোনও ব্যাটারের করা সর্বাধিক রান এটি।
দেখে মনে হচ্ছিল, ৩০০ রানের বেশি করবে পাকিস্তান। কিন্তু শেষ দিকে পর পর উইকেট হারায় তারা। আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টায় উইকেট পড়তে থাকে তাদের। ফলে ৩০০ রান হয়নি। ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮১ রান করে পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যও বড় হয়ে দাঁড়াল ভারতের সামনে।
পাকিস্তানের শুরুটা যেমন হয়েছিল ভারত তার ঠিক উল্টো শুরু করে। আইপিএলে দল পাওয়া ১৩ বছরের বৈভবের কাঁধে দায়িত্ব ছিল। কিন্তু বাইরের বলে যে ভাবে ব্যাট লাগিয়ে সে আউট হল তা তার কেরিয়ারের শুরুতে খুব একটা ভাল বিজ্ঞাপন নয়। রাজস্থানের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের কাছে বকুনি খেতে পারে বৈভব। একই অবস্থা আয়ুষ মাত্রে, আন্দ্রে সিদ্ধার্থ ও অধিনায়ক মহম্মদ অমনের। শুরুটা করলেও কেউ বড় রান করতে পারেননি।
ভারতের হয়ে ভাল দেখাল নিখিল কুমারকে। বাকিরা যেখানে বাজে শট খেলে আউট হলেন, সেখানে নিখিল ভাল খেললেন। অপর প্রান্তে পর পর উইকেট পড়ায় ধরে খেলতে হচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু সুযোগ পেলেই বড় শট মারছিলেন তিনি। তাঁকে ফাঁদে ফেলে পাকিস্তান। ৬৭ রানের মাথায় স্পিনার নাভিদ আহমেজ খানের বল ক্রিজ় ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্প আউট হন তিনি।
১৯০ রানে ৯ উইকেট পড়ে যায় ভারতের। তখনও ১০ ওভার খেলা বাকি ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল, অনেক তাড়াতাড়ি অল আউট হয়ে যাবে দল। সেখান থেকে দলের সম্মান বাঁচালেন এনান-যুধাজিৎ জুটি। কিন্তু দলকে জেতাতে পারলেন না তাঁরা। ২৩৭ রানে শেষ হয়ে গেল ভারতের ইনিংস।