চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। —ফাইল চিত্র।
আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) বোর্ডের বৈঠক পিছিয়ে গেল। শুক্রবার বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। শনিবার, ৩০ নভেম্বর এই বৈঠক হওয়ার কথা। তবে আইসিসি-র পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
বৈঠক কবে হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানায়নি আইসিসি। মনে করা হচ্ছে, ভারত এবং পাকিস্তান যুযুধান দু’দেশের বোর্ডকে আরও কিছুটা সময় দিতে চাইছে আইসিসি। আবার একটি অংশ মনে করছে, আগামী ১ ডিসেম্বর জয় শাহ আইসিসির সর্বোচ্চ পদের দায়িত্ব নেওয়ার পর বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে থাকার কথা আইসিসির পূর্ণ সদস্য ১২টি বোর্ডের প্রতিনিধি, তিনটি সহযোগী সদস্য বোর্ডের প্রতিনিধি, এক জন নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক, আইসিসির চেয়ারম্যান এবং সিইওর।
২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আইসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানে দল পাঠানো হবে না। জয় শাহেরা হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের কথা বলেছেন। ভারতের ম্যাচগুলি সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আয়োজনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রতিযোগিতা আয়োজনের অধিকার ছাড়তে নারাজ। হাইব্রিড মডেল মানবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কর্তারা। মনে করা হচ্ছে, আইসিসি দুই দেশের বোর্ডকেই আরও খানিকটা সময় দিতে চাইছে। সেই কারণেই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতা আয়োজনের রূপরেখা এবং সূচি চূড়ান্ত করতে শুক্রবার ভারতীয় সময় দুপুর ৩.৩০ মিনিটে আইসিসি বোর্ডের সদস্যদের বৈঠকে বসার কথা ছিল। বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ভার্চুয়াল মাধ্যমে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের কিছু ক্ষণ আগে আইসিসি জানিয়েছে, বৈঠক হবে শনিবার। যদিও বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার রশিদ লতিফ প্রথম সমাজমাধ্যমে বৈঠক পিছিয়ে যাওয়ার খবর জানান।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পাকিস্তানে হওয়ার কথা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সম্পর্ক বন্ধ। কোনও বহুদলীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্যও পাকিস্তানে যায় না ভারতীয় ক্রিকেট দল। গত বছর এশিয়া কাপের সময়ও রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের পাকিস্তানে পাঠায়নি বিসিসিআই। ভারতের ম্যাচ-সহ বেশ কিছু খেলা হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। সে ভাবেই কি হবে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি? ভারতের ম্যাচগুলি কি অন্য কোনও দেশে হবে? না কি পুরো প্রতিযোগিতাই সরিয়ে দেওয়া হবে পাকিস্তান থেকে? পুরো প্রতিযোগিতা অন্য দেশে সরে গেলে বা হাইব্রিড মডেলে হলে পাকিস্তান কি অংশগ্রহণ করবে? এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বৈঠকের পর।
ভারত এবং পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজনের কথা ভাবছেন না আইসিসি কর্তারা। পরিস্থিতি সামলাতে হাইব্রিড মডেলে প্রতিযোগিতা আয়োজনের বিষয়টি মেনে নেওয়ার জন্য পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তাদের অনুরোধ করা হতে পারে। আইসিসি সূত্রে খবর, সে ক্ষেত্রে পিসিবিকে প্রায় ৫৯১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে।
১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম আইসিসির কোনও প্রতিযোগিতার আয়োজক পাকিস্তান। ২০২১ সালে পাকিস্তানকে প্রতিযোগিতা আয়োজনের দায়িত্ব দিয়েছিল আইসিসি। এই প্রতিযোগিতায় ভারত দল না পাঠালে ভবিষ্যতে ভারতে কোনও প্রতিযোগিতায় দল না পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে পিসিবি। সব মিলিয়ে জটিল সমস্যার সমাধান করতে হবে আইসিসিকে।