মহম্মদ আজহারউদ্দিন। —ফাইল চিত্র।
হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে আবার লড়বেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। সংস্থার সভাপতি পদেই লড়াই করতে চান প্রাক্তন অধিনায়ক। ক্রিকেট প্রশাসনকে দুর্নীতি মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আজহারউদ্দিন।
২০১৯ সালে প্রথম বার হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হয়েছিলেন আজহারউদ্দিন। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে তাঁকে এই পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সংস্থার প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ করেছিল অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওকে। তিনি নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। আগামী মাসে হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন হতে পারে। সংস্থার নির্বাচনের ইঙ্গিত পাওয়ার পর বুধবার আবার সভাপতি পদে লড়াইয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন আজহারউদ্দিন।
ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘সম্ভবত ১৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন হবে। আমি নির্বাচনে লড়াই করব। প্রশাসক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে আমি খুশি। ৫৭টি ক্লাব মিলে গত ১৪ বছর ধরে সংস্থায় অচলাবস্থা তৈরি করেছিল। সংস্থাকে ঠিক মতো কাজ করতে দিত না ওই ক্লাবগুলির জোট। আশা করি এই সিদ্ধান্ত সংস্থার উন্নতিতে সহায়ক হবে।’’ আজহারউদ্দিন আরও বলেছেন, ‘‘আমি কোনও ক্লাবের কর্তা নই। কোনও ক্লাবের মালিকও নই। প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসাবে আমি নির্বাচনে লড়াই করতে পারব।’’ আগামী এক দিনের বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচের আয়োজন করবে হায়দারাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। বিশ্বকাপের আগে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচও হবে হায়দরাবাদে। ১৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন হলে নতুন কমিটি বিশ্বকাপের ম্যাচগুলি আয়োজন করবে।
আজহারউদ্দিন চান হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর করতে। এ নিয়ে বলেছেন, ‘‘সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল ক্রিকেটের মান উন্নত করা। পরিকাঠামো উন্নত করতে হবে আমাদের। আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হতে হবে আমাদের। অন্য সব রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থা আর্থিক ভাবে বেশ ভাল জায়গায় রয়েছে। অথচ দেখুন আমাদের ভাঁড়ার শূন্য। সব সময় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। চেষ্টা করতে হবে এই নির্ভরতা যতটা সম্ভব কমানোর। কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো সামর্থ্য তৈরি করতে হবে নিজেদের।’’
হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার বেহাল আর্থিক অবস্থার পাশাপাশি পরিকাঠামোগত সমস্যার কথাও বলেছেন আজহারউদ্দিন। আগের দফায় চেষ্টা করেও সভাপতি হিসাবে তেমন কাজ করতে না পারার আক্ষেপ রয়েছে তাঁর। প্রাক্তন ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘আমাদের হাতে মাত্র একটাই মাঠ রয়েছে। অন্য রাজ্য সংস্থাগুলোর মতো একাধিক মাঠের ব্যবস্থা করতে হবে। স্থানীয় লিগের ম্যাচ আয়োজন করার জন্য আমাদের লাখ লাখ টাকা খরচ করে মাঠ ভাড়া করতে হয়। যদিও সেই মাঠগুলোর মান যথেষ্ট ভাল নয়। পরিকাঠামো ভাল না হলে ক্রিকেটের মান খারাপ হবেই। আমাদের এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’’
এত সমস্যার কারণ কী? দুর্নীতির সঙ্গে যোগ্য প্রশাসকের অভাবকেও দায়ী করেছেন আজহারউদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘‘সংস্থা এবং কর্তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ক্রিকেটের সার্বিক উন্নয়ন। আগের দফায় শেষ দু’বছর আমাকে নানা মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। তার মধ্যেই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। মানতে অসুবিধা নেই, আমরা যথেষ্ট ভাল কাজ করতে পারিনি।’’
মঙ্গলবার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও জানিয়েছেন, ৫৭টি ক্লাব নির্বাচনে কোনও ভাবেই অংশ নিতে পারবে না। তাদের কোনও প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না এবং ভোট দিতে পারবেন না। ৫৭টি ক্লাবের ক্ষেত্রেই স্বার্থের সংঘাতের যুক্তি দিয়েছেন তিনি।
হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছিল আদালতে। তার পরিপ্রক্ষিতেই ২০২৩ সালের প্রথম দিকে সুপ্রিম কোর্ট সংস্থার নির্বাচিত কমিটিকে ভেঙে প্রশাসন নিয়োগ করেছিল।