অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরে হতাশ ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। ছবি: রয়টার্স
সত্যিই কি ভুল করেছিলেন বেন স্টোকস! ভুল করেছিলেন বার্মিংহ্যামে প্রথম দিন ডিক্লেয়ার করে! ভুল করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে ক্রমাগত মইন আলি ও জো রুটকে দিয়ে বল করিয়ে! ভুল করেছিলেন অফ স্টাম্পের বাইরে বল না করে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের শরীর লক্ষ্য করে বল করার পরিকল্পনা করে! অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরে আরও বেশি করে আলোচনার কেন্দ্রে ইংল্যান্ডের খেলার পদ্ধতি। সেই বাজ়বল। একটু বেশি আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়েই কি ডুবতে হল ইংল্যান্ডকে? ক্রিকেটাররা মনে করছেন, যা করেছেন বেশ করেছেন। আগামী দিনেও করবেন। আর যদি সেটা করতে গিয়ে হারতেও হয়, কুছ পরোয়া নেহি।
ইংল্যান্ডের কোচ হিসাবে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম ও অধিনায়ক হিসাবে স্টোকস দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বদলে গিয়েছে তাদের ক্রিকেটের ধরন। টেস্টের সংজ্ঞাটাই বদলে দিতে চাইছেন তাঁরা। সুনীল গাওস্কর ঘরানা থেকে বীরেন্দ্র সহবাগ ঘরানায় চলে গিয়েছে ইংল্যান্ড। যেখানে খেলার একটাই মন্ত্র, আক্রমণ। ব্যাট করতে নামুক বা বল, শুরু থেকে আক্রমণের পথে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। তার ফলও মিলেছে। নতুন জমানায় ১৪টি টেস্টের মধ্যে ১১টি জিতেছেন স্টোকসরা। এই ১৪টি টেস্টের ২৮টি ইনিংসে মাত্র এক বারই প্রতিপক্ষকে অলআউট করতে পারেনি ইংল্যান্ডের বোলাররা। সেটি বার্মিংহ্যামে মঙ্গলবারের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২ উইকেট থাকতে ম্যাচ জিতে গিয়েছে। যদি স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে নেথান লায়নের ক্যাচ স্টোকস না ফস্কাতেন তা হলে সেই রেকর্ড বোধ হয় ভাঙত না।
টেস্ট বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে ম্যাচের প্রথম বলে চার মেরে নিজেদের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন জ্যাক ক্রলি। টেস্ট যত গড়িয়েছে সেটা তত বেড়েছে। প্রথম দিন ৮ উইকেটে ৩৯৩ রানের মাথায় ডিক্লেয়ার দিয়েছিল ইংল্যান্ড। রুট তখন ১১৮ ও রবিনসন ১৭ রানে ব্যাট করছিলেন। কোনও অধিনায়ক কি এমনটা ভাবতে পারেন! কারণ, প্রথম ইনিংসে যতটা বেশি সম্ভব রান করতে চায় সব দল। কিন্তু স্টোকস চেয়েছিলেন, সারা দিনের ফিল্ডিংয়ের ধকলের পরে শেষ বেলায় কয়েকটা ওভারে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের চাপে ফেলতে। ডিক্লেয়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু স্টোকস মনে করছেন তিনি ঠিক। ইংরেজ অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। সেই কারণেই ডিক্লেয়ার করেছিলাম।’’ অধিনায়কের পাশে দলের প্রাক্তন অধিনায়ক জো রুট। তাঁর কথায়, ‘‘একদম সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টোকস। ওর উপর আমাদের ভরসা আছে। ফলাফল যা-ই হোক, খেলার ধরন বদলাব না। আমরা এ ভাবেই খেলব।’’
ধ্রুপদী ক্রিকেটার হিসাবে পরিচিত রুটের খেলার ধরনেও বদল এসেছে। নইলে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে দিনের প্রথম বলে কেউ রিভার্স স্কুপ মারতে যান! চতুর্থ দিন সকালে সেই দৃশ্যই দেখেছে বার্মিংহ্যাম। রুট নাকি সাজঘরেই বলে এসেছিলেন প্রথম বলে রিভার্স স্কুপ মারবেন। ব্রড, অ্যান্ডারসনেরা প্রথমে ভেবেছিলেন মজা করছেন রুট। কিন্তু তিনি যখন সত্যিই সেটা করলেন তখন সাজঘরে আনন্দের পরিবেশ। আরও এক বার বাজ়বল। দিনের শুরুতেই প্রতিপক্ষকে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া যে তাঁরা কী করতে চলেছেন। সেই ইনিংসে ৪৬ রান করে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে স্টাম্প আউট হয়েছেন রুট। টেস্ট কেরিয়ারে প্রথম বার। শুধু রুট কেন, ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নামা অ্যান্ডারসনও তো প্রথম বলে রিভার্স স্কুপ মেরেছেন। তিনিও নাকি রুটকে দেখে শিখেছেন। তাই তাঁর মতো খেলার চেষ্টা করেছেন। এই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট টেস্টে কি দেখা গিয়েছে এর আগে? যেখানে হারের কথা মাথায় না রেখে শুধুই ম্যাচ জেতার জন্য আক্রমণাত্মক খেলেন ক্রিকেটারেরা। বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেন দর্শকদের।
স্টোকসের প্রতিটি সিদ্ধান্তের ভাল-খারাপ দুটো দিক দেখা যাচ্ছে। যেমন, প্রথম দিন ডিক্লেয়ার করায় যেমন এক দিকে ইংল্যান্ড কিছু ওভার কম ব্যাট করেছে, তেমনই অন্য দিকে সেই সিদ্ধান্তের ফলেই হয়তো প্রায় একটা গোটা দিন খেলা ভেস্তে যাওয়ার পরেও ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। আবার উইকেটরক্ষক হিসাবে জনি বেয়ারস্টোকে খেলানোয় এক দিকে তিনি যেমন দ্রুত ৭৮ রান করেছেন, তেমনই অন্য দিকে তিনটি ক্যাচ ও একটি স্টাম্পের সুযোগ ছেড়েছেন। প্রায় দু’বছর প্রথম শ্রেণির ম্যাচ না খেলা মইন আলি এক দিকে যেমন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছেন তেমনই অন্য দিকে ৪৭ ওভার বল করে প্রায় ২০০ রান দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা ভাল দিকটার দিকেই তাকাচ্ছেন। তাঁরা চাইছেন এমন একটা ধারা তৈরি করতে যেখানে আক্রমণ ও বিনোদন এক হয়ে যাক। যাতে টেস্টের প্রতি আবার সবার আগ্রহ জন্মায়। রুট তো স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, ‘‘আমাদের এই খেলার জন্যই তো পরের চার টেস্টে সবার আগ্রহ তৈরি হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, আগামী দিনেও বাজ়বলই হবে তাঁদের খেলার ধরন। দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘একটা ম্যাচে হেরেছি বলে নিজেদের পরিকল্পনা বদলে ফেলব না। আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। টেস্ট খেলার একটা নতুন ধরন তৈরি করছি। তাতে হারতে হতেই পারে। দুঃখ হবে। কিন্তু সেখান থেকেও ভাল দিকটা নিয়ে পরের ম্যাচে খেলতে নামব। আবার এ ভাবেই খেলব।’’
হারের পরেও দলকে নিয়ে গর্বিত স্টোকস। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁদের খেলার ধরন বদলাবে না। তিনি বলেছেন, ‘‘খেলায় হার-জিত থাকতেই পারে। কিন্তু লড়াইটা আসল। আমরা মাঠে নেমে কী করছি সেটাই আসল। এমন ভাবে খেলতে চাই যাতে দর্শকদের টেস্ট দেখার আগ্রহ আরও বাড়ে। আমরা এ ভাবেই খেলব। হারতে খারাপ অবশ্যই লাগে। কষ্ট হয়। কিন্তু তাতে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। এই ম্যাচে হেরেছি। পরের ম্যাচ জিতব।’’
ইংল্যান্ডের বাজ়বল দেখে মজা পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নারও। তিনি বলেছেন, ‘‘খুব দ্রুত খেলা হচ্ছিল। ওরা দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু দিনের শেষে এটা খেলা। সেখানে ফলাফলটাই আসল। তাই ওদের খেলায় ভয় না পেয়ে আমরা নিজেদের খেলাটা খেলেছি। আক্রমণ সামলে প্রতি আক্রমণ করেছি। তাই জিতেছি।’’ ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা উইকেট ছুড়ে এসেছেন বলে মনে করেন ওয়ার্নার। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ওদের অনেককে দেখলাম উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসতে। ওরা যে ধারার ক্রিকেট খেলতে চাইছে সেখানে এটা হতেই পারে। তাতে অবশ্য আমাদেরই লাভ হয়েছে।’’
সত্যিই একটি নতুন ধারার ক্রিকেট খেলছে ইংল্যান্ড। কিন্তু টেস্টে কি শুধুই আক্রমণাত্মক খেললে হবে! বলা হয়, পাঁচ দিনের ক্রিকেট থেকেই কোনও ক্রিকেটারের জাত বোঝা যায়। যে কারণে, সুনীল গাওস্কর থেকে শুরু করে বিরাট কোহলি, সবাই টেস্টের কথা বলেন। এই ফরম্যাটে সফল হতে গেলে আক্রমণের পাশাপাশি ধৈর্যও প্রয়োজন। দু’পা এগোনোর আগে প্রয়োজনে এক পা পিছিয়ে আসতে হয়। শুধু টেকনিক নয়, প্রতিপক্ষের সঙ্গে মানসিকতার লড়াই হয়। ঠিক যে ক্রিকেটটা অস্ট্রেলিয়া খেলেছে। ইংল্যান্ডের আক্রমণ সামলেছে তারা। কিন্তু একদম রক্ষণাত্মকও হয়ে যায়নি। প্রয়োজনে পাল্টা আক্রমণের পথেও গিয়েছে। এক দিকে উসমান খোয়াজা দেখিয়েছেন, উইকেট কামড়ে পড়ে থাকলে রান করা সম্ভব। অন্য দিকে আবার ট্রাভিস হেড, প্যাট কামিন্সরা প্রয়োজনে বড় শট খেলে খেলার গতি বদলে দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের বাজ়বলকে হারিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ধ্রুপদী টেস্ট খেলে। সেই কারণেই হয়তো স্টোকসদের সমালোচনা হচ্ছে। সব সময় আক্রমণ না করে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেকে।
চলতি বছরই নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধেও প্রথম ইনিংসে ডিক্লেয়ার দিয়ে হারতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। প্রথম দিনই ৮ উইকেটে ৪৫৩ রান করে ডিক্লেয়ার দিয়েছিলেন স্টোকসরা। সেই ম্যাচেও শতরান করে অপরাজিত ছিলেন রুট। নিউ জ়িল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ২০৯ রানে অলআউট হয়ে যায়। ফলোঅন করানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে নিউ জ়িল্যান্ড ৪৮৩ রান করে। জয়ের জন্য চতুর্থ ইনিংস ২৫৮ রান দরকার ছিল। কিন্তু ২৫৬ রানে অলআউট হয়ে যান স্টোকসরা। ১ রানে হারে ইংল্যান্ড। স্টোকসরাই প্রথম দল যাঁরা এক ক্যালেন্ডার বছরে দু’টি টেস্টে প্রথমে ব্যাট করে ডিক্লেয়ার দিয়ে হেরেছেন।
সেটাই মেনে নিতে পারছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন। তাঁর কাছে ফলাফলই আসল। হুসেন বলেছেন, ‘‘হেরে বিনোদনের অজুহাত দেওয়ার কোনও মানে নেই। ইংল্যান্ড তো এর আগে নিউ জ়িল্যান্ডেও হেরেছিল। দুটো ম্যাচই আমাদের জেতা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা হেরেছি। এর কোনও অজুহাত নেই।’’ হুসেনের মতে, এর আগেও তো অস্ট্রেলিয়াকে ইংল্যান্ড হারিয়েছে। তখন তো বাজ়বল খেলার দরকার পড়েনি। তিনি বলেছেন, ‘‘২০০১ সাল থেকে তো আমরা ধ্রুপদী টেস্ট খেলেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছি। সেখানে তো বাজ়বল খেলতে হয়নি। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নদের সামনে আমরা এমন ভাবে খেলছি যেন ক্রমতালিকায় ১০ নম্বরে থাকা কোনও দলের বিরুদ্ধে খেলছি। ওদেরকে জেতার সুযোগ করে দিয়েছি আমরা। ওরা শুধু সেই সুযোগটা নিয়েছে।’’
ইংল্যান্ডের এই বাজ়বল ক্রিকেটের সমালোচনা করেছেন বাংলার ক্রিকেটার তথা রাজ্যের মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেছেন, ‘‘এ ভাবে খেলে কী হবে? আসল খেলার ফল। আমরা ছোট থেকে শিখেছি আগে নিজেকে বাঁচতে হবে। তার পরে জেতার চেষ্টা করতে হবে। সেখানে পরিস্থিতি বিচার না করে একই পদ্ধতিতে খেলার কোনও মানে হয় না।’’ মনোজের মতে, প্রথম ইনিংসে স্টোকসের ডিক্লেয়ার দেওয়ার সিদ্ধান্ত একেবারে ভুল। তিনি বলেছেন, ‘‘তখন শতরান করে খেলছিল রুট। ডিক্লেয়ার না দিলে আরও ৩০-৪০ রান হতে পারত। তা হলে খেলার ছবিটা অন্য হত। স্টোকস হয়তো বৃষ্টি বা অন্য কিছুর কথা ভেবে ডিক্লেয়ার করেছিল। কিন্তু সেটা একদম ভুল ছিল। প্রথম ইনিংসে যতটা সম্ভব রান করতে হয়। সেখানে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তো অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে ফিরিয়ে দিল স্টোকস। ডিক্লেয়ার না করলে খেলা হয়তো ড্র হত। ইংল্যান্ডকে হারতে হত না।’’ এমনকি রুটের রিভার্স স্কুপ খেলারও সমালোচনা করেছেন গত মরসুমে রঞ্জিতে বাংলার অধিনায়ক। মনোজ বলেছেন, ‘‘রিভার্স স্কুপ কখনওই টেস্ট ক্রিকেটের শট নয়। ওটা তখনই মারা যায় যখন বলে কোনও সুইং থাকে না। তবে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক চাইলে সেই শটও বন্ধ করতে পারেন। আসলে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হবে। সেটা না করে যখন যা মনে হল করলাম, সেটা করে টেস্ট জেতা যায় না।’’
বাংলার আর এক ক্রিকেটার অনুষ্টুপ মজুমদার আবার মনে করছেন, সাফল্য পাচ্ছে বলেই ইংল্যান্ড বাজ়বল খেলছে। তিনি বলেছেন, ‘‘গত এক বছর ধরে এ ভাবে ক্রিকেট খেলেই ইংল্যান্ড সাফল্য পেয়েছে। তাই ওরা এ ভাবে খেলছে। কিন্তু এত আক্রমণাত্মক খেললে ঝুঁকিও বাড়ে। ওরা টেস্টে একটা নতুন ধারা তৈরি করতে চাইছে। কিন্তু কত দিন এই ক্রিকেট ওরা খেলতে পারবে সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।’’ স্টোকসের কিছু সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছেন এই ডান হাতি ব্যাটার। অনুষ্টুপ বলেছেন, ‘‘স্টোকস যে কেন প্রথম দিন ডিক্লেয়ার করল সেটাই বুঝতে পারলাম না। অস্ট্রেলিয়া কিন্তু ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেই জিতল। নতুন বল নিতেও দেরি করেছে স্টোকস।’’
সমালোচনা হবেই। অন্তত ২৮ জুন লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামার আগে পর্যন্ত নানা পরামর্শ শুনকে হবে স্টোকসকে। কিন্তু স্টোকস কি সে সব কানে তুলবেন! মনে হয় না। কারণ, প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার আগেই তো তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি আমরা হারি, তা হলেও কিছু এসে-যায় না। সবাইকেই জীবনের কোনও না কোনও মুহূর্তে হারতে হয়। আসল হল, কী ভাবে সেই হার হচ্ছে। আমরা এ ভাবেই হারতে চাই। লড়াই করে হারতে চাই। যাতে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে আয়নার দিকে তাকাতে পারি। আবার পরের দিন একই ভাবে নেমে লড়াই করতে পারি।’’ তাঁর এই কথা থেকেই পরিষ্কার, বাজ়বলকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন তাঁরা। তাতে হারলেও দুঃখ নেই। সেই হার থেকেও ভাল দিকগুলি নিয়ে আবার পরের ম্যাচে নামবেন স্টোকসরা। আবার প্রথম বলে রিভার্স স্কুপ মারার চেষ্টা করবেন রুট। আবার প্রথম দিনই ডিক্লেয়ার করবেন স্টোকস।