IPL 2025

‘স্বার্থপর’ কোহলি, ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’ রাহুল! ডুবল বেঙ্গালুরু, অপরাজিত দিল্লি

টস জিতে দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক অক্ষর পটেল বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু শুরু থেকে ফিল সল্ট যে ভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন, তাতে বিপদ হতেই পারত। হল না বিরাট কোহলির ভুলে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:০০
KL Rahul

লোকেশ রাহুল। ছবি: পিটিআই।

একটা রান আউট বদলে দিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর পুরো ইনিংস। বল হাতে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও লোকেশ রাহুল ঝড়ে উড়ে গেল বিরাট কোহলিদের দল। বেঙ্গালুরু রাহুলের ঘরের মাঠ। আইপিএলে তাঁর উত্থান বেঙ্গালুরু জার্সিতেই। সেই দলের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ঝড় তুললেন তিনি। ৯৩ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে পিচে ব্যাট ঠুকে সেটা বুঝিয়েও দিলেন তিনি। রাহুলের দাপটে দিল্লি জিতল ৬ উইকেটে।

Advertisement

টস জিতে দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক অক্ষর পটেল বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু শুরু থেকে ফিল সল্ট যে ভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিলেন, তাতে বিপদ হতেই পারত। হল না বিরাট কোহলির ভুলে। সল্ট এক্সট্রা কভারের দিকে বল মেরে রান নেওয়ার জন্য এগিয়েছিলেন। কোহলি প্রথমে সেই ডাকে সাড়া দিলেও মাঝপথ থেকে সল্টকে ফিরতে বলেন। কিন্তু পা পিছলে সল্ট পড়ে যান। তাঁর পক্ষে ফেরা সম্ভব হয়নি। যে ব্যাটার প্রথম ৪ ওভারে ৬২ রান তুলে দিয়েছিলেন, সেই সল্ট আউট হতেই ধাক্কা খায় দল। পরের দু’ওভারে মাত্র ২ রান উঠল। গোটা ব্যাটিং ধাক্কা খেল সেখানেই। কোহলি বুঝতে পেরেছিলেন রান নিতে গেলে তিনি আউট হতে পারেন, সেই কারণেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সল্টকে। নিজের উইকেট বাঁচাতে গিয়েই কি দলের বিপদ ডেকে আনলেন?

সল্ট ঝড় তুলেছিলেন ওপেন করতে নেমে। মিচেল স্টার্ক এবং অক্ষর পটেলের ওভারে তখন একের পর এক ছক্কা হাঁকাচ্ছেন ইংরেজ ওপেনার। ১৭ বলে ৩৭ রান করে ফেলা সল্টের সেই ইনিংস ধাক্কা খেল রান আউটে। বিরাট কোহলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হলেন তিনি। সেটাই বেঙ্গালুরুর ইনিংসে বড় ধাক্কা দিয়ে গেল। এর পর এক এক করে দেবদত্ত পাড়িক্কল (১), বিরাট কোহলি (২২), লিয়াম লিভিংস্টোন (৪), জীতেশ শর্মারা (৩) সাজঘরে ফিরলেন।

শেষ দিকে টিম ডেভিড ২০ বলে ৩৭ রানের ইনিংস না খেললে আরও কম রানে থেমে যেত বেঙ্গালুরুর ইনিংস। অধিনায়ক রজত পাটীদার (২৩ বলে ২৫) রান করলেও তাঁর মন্থর ইনিংস দলকে ভরসা দিতে পারেনি।

দিল্লির দুই স্পিনার ভিপরাজ নিগম এবং কুলদীপ যাদব বিপক্ষের উইকেট যেমন তোলেন, তেমনই রান আটকে রাখেন। দু’জনেই দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন। কোহলির উইকেটটি তোলেন ভিপরাজ। স্পিনারদের মধ্যে একমাত্র অক্ষর ৪ ওভারে ৫২ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি। যদিও তিনি পাওয়ার প্লে-র মধ্যে দু’ওভার বল করেন। যে সময় সল্ট বড় শট খেলছিলেন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মুকেশ কুমার এবং মোহিত শর্মা। মিচেল স্টার্ক ৩ ওভারে ৩৫ রান দিলেও উইকেট নিতে পারেননি।

রান তাড়া করতে নেমে ৩০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট চলে গিয়েছিল দিল্লির। ফ্যাফ ডু’প্লেসি (২), জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক (৭) এবং অভিষেক পোড়েল (৭) পর পর আউট হয়ে দলের চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিজ্ঞ রাহুল সেই চাপ বেশি ক্ষণ থাকতে দেননি। তিনি ৫৩ বলে ৯৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। বেঙ্গালুরু যে রাহুলের ঘরের মাঠ তা বোঝা যাচ্ছিল প্রতিটা শটে। যে পিচে তাঁর দলের অন্য ব্যাটারেরা সমস্যায় পড়ছিলেন, সেখানেই অনায়াসে খেললেন রাহুল। একের পর এক বড় শট খেললেন। বৃষ্টি আসার সম্ভাবনা দেখে জস হেজলউডের এক ওভারে নিলেন ২২ রান। বেঙ্গালুরু আর কিছু রান বেশি করলে হয়তো শতরানও করে ফেলতেন রাহুল।

এই মাঠ যে তাঁরই সেটা ম্যাচ শেষে তাঁর উচ্ছ্বাসের ভঙ্গিতেই স্পষ্ট। যে ভাবে পিচের উপর ব্যাট ঠুকলেন, তাতে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন মাঠে যেন নিজের পতাকা পুঁতে দিলেন তিনি। ঘরের মাঠে নিজের নাম লিখে দিলেন। পুরনো দলের বিরুদ্ধে তাঁর সেই আগ্রাসন পুরস্কার নেওয়ার সময়েও দেখা যায়। তিনি হাত মেলাননি বেঙ্গালুরুর কর্তার সঙ্গে।

রাহুলকে যোগ্য সঙ্গত দিলেন ট্রিস্টিয়ান স্টাবস। ৩৮ রানে অপরাজিত রইলেন তিনি। রাহুল এবং স্টাবসের ১১১ রানের জুটি এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত রাখল দিল্লিকে। আর বাইরের মাঠে একের পর এক ম্যাচ জিতেও ঘরের মাঠে জয়ের খোঁজে রইল বেঙ্গালুরু। তাদের বার বার হারিয়ে দিচ্ছে দলের প্রাক্তনীরাই। গুজরাত টাইটান্সের হয়ে মহম্মদ সিরাজ হারিয়ে দিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুকে। বৃহস্পতিবার হারিয়ে দিলেন রাহুল।

Advertisement
আরও পড়ুন