ফাইল চিত্র।
কিছু দিন আগেই তাঁরা শ্রীলঙ্কা সফর শেষ করে দেশে ফিরেছেন। সে সময়ে দ্বীপরাষ্ট্রের যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিত তাঁরা দেখেছিলেন, তা রীতিমতো ধাক্কা দিয়ে গিয়েছিল প্যাট কামিন্সদের। বিশেষ করে সেখানকার শিশুদের অবস্থার কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন কামিন্সরা। যার পরেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, শ্রীলঙ্কা সফরে পাওয়া পুরস্কার অর্থ দান করে দেওয়ার।
টেস্ট অধিনায়ক কামিন্স নিজেই ইউনিসেফ অস্ট্রেলিয়ার দূত। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কামিন্স এবং সীমিত ওভারের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের নেতৃত্বে ৪৫ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ২৫ লক্ষ টাকা) তুলে দেওয়া হবেইউনিসেফের হাতে।
জুন-জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট এবং সীমিত ওভারের সিরিজ় খেলতে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তখনই শ্রীলঙ্কার মানুষের দুর্দশা স্বচক্ষে দেখতে পান ক্রিকেটারেরা। বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসার কামিন্স তো এক বার বলেইছিলেন, ‘‘আমাদের গাড়ির চালক এবং হোটেল স্টাফের মুখে শুনেছি, ওরা কী ভাবে মাঝে মাঝে একবেলা করে খাচ্ছে বাচ্চাদের মুখে খাদ্য তুলে দেওয়ার জন্য।’’ কামিন্সরা দেখেছিলেন, কী ভাবে পেট্রল পাম্পের সামনে মানুষের লম্বা লাইন। গলে টেস্ট ম্যাচ চলার সময় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারেরা শুনেছিলেন, মাঠের বাইরে হাজার-হাজার মানুষের বিক্ষোভের গর্জন। যা ভীষণ ভাবে নড়িয়ে দিয়েছিল তাঁদের।
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে সেখানকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূ্ল্য প্রায় ৮০ গুণ বেড়ে গিয়েছিল। পেট্রল পাওয়া যাচ্ছিল না। যে কারণে স্কুল সপ্তাহে তিন দিন করে দেওয়া হয়।
অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারেরা যে আর্থিক সাহায্য করেছেন, তা চলে যাবে ইউনিসেফের কর্মসূচিতে। যে কর্মসূচিতে রয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কার শিশুদের জন্য শিক্ষা, পানীয় জল সরবরাহ করার নানা পরিকল্পনা। কামিন্স বলেছেন, ‘‘শ্রীলঙ্কার মানুষের জীবনযাত্রা কী ভাবে ধাক্কা খেয়েছে, তা আমরা ভাল করেই বুঝেছিলাম।’’ অস্ট্রেলীয় টেস্ট অধিনায়ক আরও বলেছেন, ‘‘আমরা সবাই যখন দেখলাম, ওখানে কী চলছে, তখন পুরস্কারমূল্য দান করে দেওয়ার ব্যাপারে দু’বার ভাবতে হয়নি। ৫০ বছর ধরে শ্রীলঙ্কায় কাজ করছে ইউনিসেফ।’’
অস্ট্রেলিয়ার সীমিত ওভারের অধিনায়ক ফিঞ্চ বলেছেন, ‘‘ওই পরিস্থিতিতেও আমাদের দারুণ ভাবে স্বাগত জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কার মানুষ। আশা করছি, আমাদের ওই সফর একটু হলেও ওখানকার মানুষদের মনে আনন্দ ফুটিয়ে তুলেছিল।’’