পাকিস্তান ক্রিকেট দল। —ফাইল চিত্র।
ন’বছর পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ় জিতল পাকিস্তান। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ়ে ২-১ ব্যবধানে জয় শান মাসুদের দলের। শেষ টেস্টে পাকিস্তান জিতল ৯ উইকেটে। পাকিস্তানের দুই স্পিনার সাজিদ খান এবং নোমান আলি মিলে রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টে নিলেন ১৯টি উইকেট।
ইংল্যান্ডকে শেষ বার টেস্ট সিরিজ়ে পাকিস্তান হারিয়েছিল ২০১৫ সালে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে হয়েছিল সেই সিরিজ়। সে বার তিন ম্যাচের সিরিজ় ২-০ জিতেছিল পাকিস্তান। এ বারে প্রথম টেস্টে হেরে যাওয়ার পরেও ফিরে আসে তারা। পর পর দু’টি ম্যাচ জিতে নেয়। সঙ্গে সিরিজ়ও। গত বার যখন ইংল্যান্ড খেলতে এসেছিল পাকিস্তানে, সে বার তিনটি টেস্টেই হেরেছিলেন বাবর আজ়মেরা। এ বার তাঁকে বাদ দিয়ে সিরিজ় জিতল পাকিস্তান।
তৃতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে হারানোর নেপথ্যে পাকিস্তানের দুই স্পিনার। আগের টেস্টে সাজিদ এবং নোমান মিলেই ইংল্যান্ডের ২০টি উইকেট নিয়েছিলেন। তৃতীয় টেস্টে তাঁরা নিলেন ১৯টি উইকেট। সাজিদ নিলেন ১০টি উইকেট এবং নোমান নিলেন ৯টি। প্রথম ইনিংসে তাঁদের দাপটে ইংল্যান্ড শেষ হয়ে যায় ২৬৭ রানে। পাকিস্তান জবাবে তুলে দেয় ৩৪৪ রান। শতরান করেন সাউদ শাকিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড শেষ হয়ে যায় ১১২ রানে। নেপথ্যে সেই সাজিদ এবং নোমান। মাত্র ৩৬ রানের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের সামনে। সহজেই টেস্ট জিতে নেয় তারা।
বাবর আজ়ম, শাহিন শাহ আফ্রিদি এবং নাসিম শাহকে বাদ দিয়ে খেলতে নেমে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে নিয়েছিল পাকিস্তান। তৃতীয় টেস্টেও তাঁদের দলে রাখা হয়নি। সেই টেস্টও জিতে নিল পাকিস্তান। এমনিতেও রাওয়ালপিণ্ডির উইকেটে পেসারদের জন্য প্রায় কিছুই নেই। পাকিস্তান দলে কোনও পেসারও নেই। অলরাউন্ডার আমের জামাল আছেন, যিনি মিডিয়াম পেস বল করেন। যদিও তাঁকে দিয়ে প্রথম ইনিংসে এক বলও করাননি অধিনায়ক মাসুদ। তিনি ভরসা রেখেছিলেন তাঁর দুই স্পিনারের উপর। তাঁরা দু’জনে মিলে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট তুলে নেয়। একটি উইকেট নেন জাহিদ মেহমুদ। তিনিও স্পিনার।
পাকিস্তান ব্যাট করতে নামলে ইংল্যান্ডও শুরু থেকে স্পিনার নিয়ে আসে। জ্যাক লিচ বোলিং শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে নতুন বলে অন্য প্রান্তে ছিলেন দলের একমাত্র পেসার গাস অ্যাটকিনসন। ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ সামলে শাকিল ২২৩ বলে ১৩৪ রান করেন। গোটা ইনিংসে মাত্র পাঁচটি চার মারেন তিনি। অর্থাৎ, ১৩৪ রানের মধ্যে ১১৪ রান দৌড়ে নিয়েছেন শাকিল। তিনিই দলকে লিড নিতে সাহায্য করেন। শেষ বেলায় সাজিদের ৪৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংস এবং নোমানের ৪৫ রানে ভর করে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হয় ৩৪৪ রানে। ব্যাটে, বলে তাঁরাই এই টেস্টের নায়ক।
৭৭ রানে লিড নিয়েছিল পাকিস্তান। শুক্রবার দিনের শেষে ইংল্যান্ড পিছিয়ে ছিল ৫৩ রানে। হাতে ছিল সাত উইকেট। কিন্তু শনিবার খুব বেশি রান করতে পারেনি তারা। ১১২ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। মাত্র ৩৬ রানের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের সামনে। এক উইকেট হারিয়ে যে রান তুলে নেয় পাকিস্তান।