IPL 2025 Uncapped Cricketers

আইপিএলে সেরা ১০ ‘আনক্যাপড’ ক্রিকেটারকে বাছল আনন্দবাজার ডট কম, তালিকায় ধোনিও!

আইপিএলে প্রতি বছর কোনও না কোনও অনামি ক্রিকেটার তারকা হয়ে যান। এ বারেও ব্যতিক্রম নন। দেশের হয়ে না খেলা অনেক ক্রিকেটারই এ বারে ভাল খেলছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:১২
MS Dhoni

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ছবি: পিটিআই।

আইপিএল মানেই নতুন ক্রিকেটারদের উঠে আসা। এমন সব ক্রিকেটার যাঁদের নাম হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেটেও অত পরিচিত নয়, তাঁরাই নায়ক হয়ে উঠছেন। কেউ তুলে নিচ্ছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার মতো ক্রিকেটারের উইকেট, কেউ আবার বিশ্বের সেরা বোলারদের মাঠের বাইরে ফেলছেন অনায়াসে। কিন্তু তাঁরা কেউই দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলেননি। এঁদের ‘আনক্যাপড’ ক্রিকেটার বলা হয়।

Advertisement

এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত নজর কাড়া ১০ জন ‘আনক্যাপড’ ক্রিকেটারকে বাছল আনন্দবাজার ডট কম। এই তালিকায় রাখা হয়েছে ৫৩৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকেও! কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া ধোনি এ বারের আইপিএলের বিশেষ নিয়মে ‘আনক্যাপড’ ক্রিকেটার।

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (চেন্নাই সুপার কিংস)

এ বারের আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী, যে ক্রিকেটারেরা পাঁচ বছরের বেশি সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি, তাঁদের আনক্যাপড ক্রিকেটার হিসাবে সই করানো হয়েছে। ধোনিকে আনক্যাপড হিসাবে সই করায় চেন্নাই সুপার কিংস। ব্যাট হাতে এখনও সে ভাবে নজর কাড়তে পারেননি তিনি। কিন্তু উইকেটরক্ষক ধোনি একের পর এক ম্যাচে চমক দিচ্ছেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে সূর্যকুমার যাদবকে স্টাম্প করতে ০.১২ সেকেন্ড সময় নিয়েছিলেন তিনি। বেঙ্গালুরুর ফিল সল্টকে স্টাম্প করতে ধোনি সময় নেন ০.১৬ সেকেন্ড। বয়স ৪৩ বছর হলেও এখনও উইকেটের পিছন থেকে নজর কাড়ছেন তিনি।

বিগ্নেশ পুতুর (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স)

বাঁহাতি স্পিনারের বয়স ২৪ বছর। কব্জির মোচড়ে নজর কেড়েছেন পুতুর। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই চমকে দিয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলা এই স্পিনার কেরলের ক্লাব ক্রিকেটে খেলতেন। সেখান থেকেই তাঁকে খুঁজে এনেছে মুম্বই। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই তিন উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে আউট করেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়, শিবম দুবে এবং দীপক হুডাকে। মুম্বইকে যদিও ম্যাচটা জেতাতে পারেননি। কিন্তু পুতুর নজর কেড়ে নেন। তাঁর প্রশংসা করেন ধোনিও।

আশুতোষ শর্মা (দিল্লি ক্যাপিটালস)

২০২৩ সাল থেকেই আইপিএলে পরিচিত মুখ আশুতোষ। আগে খেলতেন পঞ্জাব কিংসের হয়ে। এখন তিনি দিল্লির ভরসা। ২৬ বছরের আশুতোষ লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ৩১ বলে ৬৬ রান করেন। তিনি প্রায় একার হাতেই ম্যাচ জেতান। আশুতোষ ব্যাট করতে নামার সময় দিল্লি ৬৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল। সেখান থেকে ২১০ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নেয় দিল্লি।

বিপরাজ নিগম (দিল্লি ক্যাপিটালস)

আশুতোষের সঙ্গে ওই ম্যাচ জেতানোর নেপথ্যে ছিলেন বিপরাজ। ২০ বছরের তরুণ ক্রিকেটার ১৫ বলে ৩৯ রান করেন। পাঁচটি চার এবং দু’টি ছক্কা মারেন বিপরাজ। আশুতোষ এবং বিপরাজ মিলে ২২ বলে ৫৫ রান করেন। উত্তরপ্রদেশের বিপরাজ ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ খেলেননি। তবে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে অন্ধ্রের বিরুদ্ধে তাঁর ৮ বলে ২৭ রানের ইনিংস নজর কেড়েছিল। তবে বিপরাজ ব্যাটার নন, বোলার হিসাবেই দলে জায়গা পান। লেগ স্পিনার তিনি। আইপিএলে দু’টি ম্যাচ খেলে এখনও পর্যন্ত নিয়েছেন একটি উইকেট। বোলার বিপরাজ যদিও আপাতত ব্যাট হাতেই বেশি নজর কাড়ছেন।

দিগ্বেশ রাঠী (লখনউ সুপার জায়ান্টস)

আইপিএলে তিন ম্যাচে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন দিগ্বেশ। তিনিও লেগস্পিনার। দিল্লির এই বোলারকে কিনেছে লখনউ সুপার জায়ান্টস। মুস্তাক আলি ট্রফিতে পাঁচ ম্যাচে আট উইকেট নিয়েছিলেন দিগ্বেশ। নিলামের আগে যদিও প্রথম দু’টি ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু লখনউ তাঁকে নিয়ে যে ভুল করেনি সেটা প্রমাণিত। প্রতি ম্যাচেই উইকেট নিচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে দিগ্বেশ চর্চায় চলে আসেন উইকেট নিয়ে তাঁর উৎসবের কারণে। পঞ্জাব কিংসের প্রিয়াংশ আর্যকে আউট করে বাঁ হাতটি একটি পাতার মতো সামনে রেখেছিলেন দিগ্বেশ। ডান হাতটি কলমের কায়দায় ধরে পাতার উপর কিছু লেখার ভঙ্গিমা করেন। যে কারণে ম্যাচের পর তাঁর ২৫ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা করা হয়। একটি ডিমেরিট পয়েন্টও দেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী দিনে অপরাধ করলে বড় শাস্তি পেতে হতে পারে।

প্রভসিমরন সিংহ (পঞ্জাব কিংস)

পঞ্জাবতনয় প্রথম ম্যাচে রান পাননি। কিন্তু পঞ্জাব কিংসের হয়ে ওপেন করতে নেমে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ৩৪ বলে ৬৯ রান করেন তিনি। তাঁর দাপটে উড়ে যায় লখনউয়ের বোলিং আক্রমণ। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন পঞ্জাবের হয়ে। ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ এবং অনূর্ধ্ব-২৩ দলেও খেলেছেন। ২০১৯ সালের নিলামে ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রভসিমরনকে কিনেছিল পঞ্জাব। তবে খুব একটা খেলার সুযোগ পেতেন না। এ বারের নিলামের আগে ৪ কোটি টাকা দিয়ে তাঁকে রেখে দেয় পঞ্জাব।

প্রিয়াংশ আর্য (পঞ্জাব কিংস)

দিল্লি প্রিমিয়ার লিগে ছ’বলে ছ’ছক্কা মেরেছিলেন প্রিয়াংশ। তাঁকে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছিল পঞ্জাব। প্রথম ম্যাচে ২৩ বলে ৪৭ রান করে বুঝিয়ে দেন, তাঁর উপর ভরসা রেখে ঠিক করেছে তারা। আগামী দিনে এই ফর্ম ধরে রাখতে পারেন কি না সে দিকে নজর থাকবে।

অঙ্গকৃশ রঘুবংশী (কলকাতা নাইট রাইডার্স)

এ বারের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার রঘুবংশী। প্রতি ম্যাচে রান করছেন। এখনও পর্যন্ত চারটি ম্যাচ মিলিয়ে তিনি ১২৮ রান করেছেন। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৩২ বলে ৫০ রানও করেন। গত বারও আইপিএলে নজর কেড়েছিলেন তিনি। সেই কারণেই এ বারের নিলামে কলকাতা তাঁকে ৩ কোটি টাকা দিয়ে কিনে নেয়।

অশ্বনী কুমার (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স)

বাঁহাতি পেসার নজর কেড়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে। ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। তরুণ পেসারের জন্ম পঞ্জাবে। ২৩ বছরের এই পেসার ডেথ ওভারে ভাল করার জন্য নজর কেড়েছিলেন। মুম্বই যদিও তাঁকে ডেথ ওভারে বল করায়নি। তাতেও সাফল্য পেতে সমস্যা হয়নি। নিলামে ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছিল মুম্বই। তাঁর মতো ক্রিকেটারদের খুঁজে আনার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে মুম্বইয়ের স্কাউটদেরও।

শশাঙ্ক সিংহ (পঞ্জাব কিংস)

গত বারের আইপিএলেও নজর কেড়েছিলেন শশাঙ্ক। যে কারণে তাঁকে নিলামের আগে ছাড়েনি পঞ্জাব কিংস। এ বারেও নিজের মেজাজেই রয়েছেন শশাঙ্ক। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ১৬ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। তাঁর দাপটেই সেই ম্যাচে ২৪৩ রান তুলেছিল পঞ্জাব। ৩৩ বছরের এই ব্যাটার ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বইয়ের হয়ে খেলেন। ২০১৭ সালের আইপিএলে তাঁকে দলে নিয়েছিল দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। এর পর রাজস্থান রয়্যালস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদও তাঁকে নিয়েছিল। কিন্তু কেউই সে ভাবে ব্যবহার করতে পারেনি। শশাঙ্কও নজর কাড়তে পারেননি। ২০২২ সালে তাঁকে দলে নেয় পঞ্জাব কিংস। বদলে যায় শশাঙ্কের ভাগ্যও।

Advertisement
আরও পড়ুন