ICC ODI World Cup 2023

১০ অঘটন: শুধু আফগানদের কাছে ইংল্যান্ডের হারই নয়, বিশ্বকাপ অবাক করেছে বার বার

রবিবার ‘ডেভিড’ হয়ে উঠলেন রশিদেরা, তেমনই বিভিন্ন সময়ে শক্তিশালী দলগুলির বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে তথাকথিত ছোট দলগুলি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:৪২
Rashid Khan

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রশিদ খানদের জয়। ছবি: পিটিআই।

রশিদ খানদের বিরুদ্ধে হার ভুলে যেতে চাইবেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারেরা। বিশ্বকাপে একাধিক বার ক্রিকেটবিশ্বের তথাকথিত ছোট দলগুলি হারিয়ে দিয়েছে ‘গোলিয়াথ’দের। রবিবার যেমন ‘ডেভিড’ হয়ে উঠলেন রশিদেরা, তেমনই বিভিন্ন সময়ে শক্তিশালী দলগুলির বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে তথাকথিত ছোট দলগুলি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এমনই ১০টি ম্যাচ।

Advertisement

আয়ারল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ়, ২০১৫

সে বারের বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড শুরুই করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে হারিয়ে। চার উইকেটে জিতেছিল উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের আয়ারল্যান্ড। যদিও তিনি মনে করেন না যে, এই জয় কোনও অঘটন ছিল বলে। ৮৭ রানে চার উইকেট হারিয়েছিল ক্যারিবিয়ান দল। যদিও সেখান থেকে লেন্ডল সিমন্সের শতরানে ৩০৭ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়। ২৫ বল বাকি থাকতে জয়ের রান তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড। পল স্টার্লিং (৯২) এবং এড জয়েস (৮৪) ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন।

বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান, ১৯৯৯

সেই সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বে সবে পা রাখছে। টেস্ট খেলিয়ে দলের তকমাও ছিল না তাদের। সেই সময় বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল তারা। প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ২২৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। সেই রান তাড়া করতে নেমে ৪২ রানে ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান। তখনই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে, পাকিস্তানের পক্ষে ম্যাচ জেতা কঠিন হবে। সেই আশঙ্কা সত্যি করে ১৬১ রানে শেষ হয়ে যায় পাকিস্তান। তাতে যদিও সাকলিন মুস্তাকদের সেমিফাইনালে ওঠা আটকায়নি।

বাংলাদেশ বনাম ভারত, ২০০৭

শুধু পাকিস্তান নয়, ভারতের বিরুদ্ধেও বিশ্বকাপের মঞ্চে জয় আছে বাংলাদেশের। সে এক অঘটনের বিশ্বকাপ ছিল। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং বারমুডার সঙ্গে এক গ্রুপে ছিল ভারত। প্রথম ম্যাচেই ভারত হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। ১৯১ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল রাহুল দ্রাবিড়ের ভারত। সেই সময় তরুণ মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংস খেলেছিল ম্যাচ জিতিয়েছিল। সেই হারের ধাক্কায় ভারত সে বারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়।

জ়িম্বাবোয়ে বনাম ভারত, ১৯৯৯

বিশ্বকাপের মঞ্চে জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল ভারতকে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২৫২ রান তোলে জ়িম্বাবোয়ে। সেই রান তুলে জিততে ভারতের শেষ দু’ওভারে দরকার ছিল ৯ রান। কিন্তু ২৪৯ রানে অল আউট হয়ে যায় ভারত। হেনরি ওলঙ্গা ম্যাচ জিতিয়েছিলেন ৩ উইকেট নিয়ে।

জ়িম্বাবোয়ে বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯৯৯

বড় দলকে হারানো অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিল জ়িম্বাবোয়ে। ভারত ছাড়াও সে বার তারা হারিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। প্রথমে ব্যাট করে জ়িম্বাবোয়ে ২৩৩ রান করেছিল সে বার। জ়িম্বাবোয়ের নিল জনসন নায়ক হয়ে উঠেছিলেন। ব্যাট হাতে ৭৬ রান করেছিলেন তিনি। বল হাতেও ছিলেন বিধ্বংসী মেজাজে। নতুন বলে তিনি এবং হিথ স্ট্রিক নাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রোটিয়াবাহিনীকে। ১৮৫ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।

কেনিয়া বনাম শ্রীলঙ্কা, ২০০৩

সে বারের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলেছিল কেনিয়া। বড় দলের বিরুদ্ধে তারা একের পর এক অঘটন ঘটিয়েছিল। সেই সময় শ্রীলঙ্কা ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী দল। কেনিয়াকে মাত্র ২১০ রানে শেষ করে দেওয়ার পরেও হেরে গিয়েছিলেন সনৎ জয়সূর্যেরা। কেনিয়ার কলিন ওবুয়া ১০ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। ১৫৭ রানে অল আউট হয়ে যান কুমার সঙ্গকারারা।

আয়ারল্যান্ড বনাম পাকিস্তান, ২০০৭

ক্রিকেট বিশ্বে আয়ারল্যান্ড নিজেদের পরিচয় তৈরি করেছিল ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে। পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৩২ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল। আইরিশ পেসারদের সামলাতে পারেননি পাক ব্যাটারেরা। বৃষ্টির জন্য সেই রানের লক্ষ্য কমে হয় ১২৭ রান। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় আয়ারল্যান্ড। যদিও সেই ঘটনাকে ছাপিয়ে যায় পরের দিন পাকিস্তানের কোচ বব উলমারের মৃত্যু।

জ়িম্বাবোয়ে বনাম অস্ট্রেলিয়া, ১৯৮৩

প্রথম বার বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিল জ়িম্বাবোয়ে। প্রথম ম্যাচেই সামনে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া। যে দলে রয়েছেন ডেনিস লিলি এবং জেফ থমসনের মতো ক্রিকেটার। তরুণ অ্যালান বর্ডারও তখন দলে। সেই ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে জ়িম্বাবোয়ে এক সময় ৯৪ রানে ৫ উইকেট হারায়। সেখান থেকে অধিনায়ক ডানকান ফ্লেচারের ব্যাটে ভর করে ২৩৯ রান তোলে জ়িম্বাবোয়ে। অস্ট্রেলিয়া শেষ হয়ে যায় ২২৬ রানে। হাতে উইকেট থাকলেও ওভার শেষ হয়ে গিয়েছিল।

কেনিয়া বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ়, ১৯৯৬

নিপুণ বোলিংয়ের দাপটে সে বার ক্যারিবিয়ান দৈত্যদের হারিয়ে দেয় কেনিয়া। প্রথমে ব্যাট করে কেনিয়া মাত্র ১৬৬ রান করে। এর মধ্যে ৩৭ রান অতিরিক্ত পেয়েছিল তারা। সেটাই কাল হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের জন্য। মাত্র ৯৩ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল ব্রায়ান লারাদের দল। বিশ্বকাপে সেটাই ক্যারিবিয়ানদের সব থেকে কম রানের ইনিংস।

ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ়, ১৯৮৩

বিশ্বকাপের ইতিহাসে সব থেকে বড় অঘটন ঘটিয়েছিলেন কপিল দেবরা। বিশ্বকাপের ফাইনালে তাঁরা হারিয়ে দিয়েছিলেন দু’বারের বিশ্বজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে। সেই সময়ের সব ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের কাছেই অবিশ্বাস্য ছিল ভারতের ফাইনালে ওঠা। সেখানে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ়কে হারিয়ে কপিলেরা বিশ্বকাপ জিতবেন, তা ভাবা আরও কঠিন ছিল। সেই অসাধ্য কাজটাই সাধন করেছিলেন কপিলেরা। ১৮৩ রান করেছিল ভারত। সেই রান তাড়া করে জয় ভিভ রিচার্ডসদের কাছে যে কঠিন হবে তা ভাবা যায়নি। কিন্তু ৩৩ রানের মাথায় ভিভ আউট হতেই খেলা রং পাল্টাতে শুরু করে। কপিল উল্টো দিকে দৌড়ে গিয়ে ক্যাচ নিয়েছিলেন ভিভকে আউট করতে। ১৪০ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়।

আরও পড়ুন
Advertisement