কেন উপগ্রহ ধ্বংস করতে পারে রাশিয়া? -ফাইল ছবি।
শুধু বিশেষ একটি দেশে যুদ্ধই নয়। ইউক্রেনে জিততে মরিয়া রাশিয়া এ বার দেশ, মহাদেশের সীমানা পেরিয়ে যুদ্ধটা ছড়িয়ে দিতে চলেছে মহাকাশেও।
আমেরিকার গোয়েন্দা উপগ্রহগুলির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে যে সংস্থা সেই ‘ন্যাশনাল রিকনাইস্যান্স অফিস’ (এনআরও)-এর অধিকর্তা ক্রিস্টোফার স্কোলেস এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এনআরও অফিসের কর্তারা মনে করছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধটিকে এ বার আরও দূর নিয়ে যেতে পারে রাশিয়া। রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হানার শিকার হতে পারে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ বিভিন্ন দেশের উপগ্রহগুলি। কক্ষপথে অচল হয়ে পড়া উপগ্রহগুলিকে ধ্বংস করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে মহাকাশে আবর্জনার পরিমাণ একলাফে বহু গুণ বাড়িয়ে বিপদে ফেলে দিতে পারে দিনে ১৫ থেকে ১৬ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকেও। ইউক্রেনের কোথায় কোন পথে কত রুশ সেনা ঢুকছে বা ঢুকতে চলেছে তা যাতে কক্ষপথে থাকা বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা উপগ্রহগুলি আগেভাগে জেনে নিতে না পারে তার জন্য সেগুলিকেও ধ্বংস করতে পারে রাশিয়া। তাতে শুধু উপগ্রহগুলিই ধ্বংস হবে না, মহাকাশে আবর্জনার পরিমাণ উদ্বেগজনক ভাবে বাড়িয়ে তুলে বিভিন্ন মহাকাশযানকেও তাদের যাত্রাপথে নানা ধরনের বিপদের মুখে ফেলে দিতে পারে। তার ফলে, ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে মহাকাশ গবেষণারও।
আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিওরিটি স্পেস অ্যাসোসিয়েশনের মহাকাশের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশে গোয়েন্দামূলক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত সম্মেলনে বুধবার এই সব আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এনআরও-র অধিকর্তা ও কয়েক জন শীর্ষস্তরের কর্তা।
এনআরও-র অধিকর্তা স্কোলেস বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে ইউক্রেনের যুদ্ধটাকে যে ভাবে হোক জিততে চাইছে রাশিয়া। তাই যত দূর যাওয়া সম্ভব রাশিয়া তত দূরই যাবে। এমনকি, যুদ্ধটাকে নিয়ে যেতে পারে মহাকাশেও।’’ বৃহস্পতিবারই ইউক্রেনে প্রবল পরাক্রমে ঢুকে পড়ে রুশ সেনা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, রাশিয়া ইতিমধ্যেই ইউক্রেন সীমান্তে দেড় লক্ষ সেনা মোতায়েন করেছে।
তাঁর এই ধারণা যে শুধুই কথার কথা নয় তা বোঝাতে এ ব্যাপারে রাশিয়া কী কী পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে তারও খুঁটিনাটি স্কোলেস জানান ওই সম্মেলনে। তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই জিপিএস ব্যবস্থাকে অচল করে দিতে তৎপর হয়েছে মস্কো। তার জন্য আমেরিকা যাতে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে জন্য নাসা-সহ আমেরিকার সবক’টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে তাদের পাঠানো উপগ্রহগুলির নিরাপত্তা আরও আটোসাঁটো করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, প্রয়োজনে আমাদের উপগ্রহগুলির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রগুলিকে কিছু দিনের জন্য বন্ধ করে রাখতে। রুশ হানাদারি থেকে সেগুলিকে যাতে বাঁচানো যেতে পারে। রাশিয়া সাইবার অপরাধীদেরও প্রিয় দেশ। তাই নানা ধরনের সাইবার অপরাধের কবল থেকেও দেশ ও উপগ্রহগুলিকে কী ভাবে বাঁচানো যেতে পারে তা নিয়েও জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।’’