Milky Way Galaxy

Milky Way Galaxy: আকাশগঙ্গা ছায়াপথে এ বার মিলল ‘গঙ্গোত্রী’র হদিশ, জানালেন ভারতীয় বিজ্ঞানীই

আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রে এমন একটি সুদীর্ঘ তরঙ্গ ছায়াপথের মাথার মুকুটে যেন একটি পালকের মতো। যার হদিশ দিলেন এক ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

Advertisement
সুজয় চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২১ ১৬:১৮
আকাশগঙ্গা ছায়াপথের দু’টি বাহু। একটি উপরের দিকে উঠে গিয়েছে। অন্যটি নেমেছে নীচে। কেন্দ্রে সেই ‘গঙ্গোত্রী’ (হলুদ রং)। ছবি- ভি এস বীণা।

আকাশগঙ্গা ছায়াপথের দু’টি বাহু। একটি উপরের দিকে উঠে গিয়েছে। অন্যটি নেমেছে নীচে। কেন্দ্রে সেই ‘গঙ্গোত্রী’ (হলুদ রং)। ছবি- ভি এস বীণা।

গঙ্গোত্রীর সুদীর্ঘ প্রবাহ আকাশগঙ্গা ছায়াপথে! হদিশ মিলল এই প্রথম।

ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের ঠিকানা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রে এমন একটি সুদীর্ঘ তরঙ্গ ছায়াপথের মাথার মুকুটে যেন একটি পালকের মতো। যার হদিশ দিলেন এক ভারতীয় মহিলা জ্যোতির্বিজ্ঞানী। ভি এস বীণা।

Advertisement

বীণার গঙ্গোত্রী

অত্যন্ত ঠান্ডা এবং খুব ঘন কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের এই তরঙ্গ বা প্রবাহ আকাশগঙ্গা ছায়াপথের দুই বাহুর মধ্যে কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় যোগাযোগের সেতু গড়ে তুলেছে। প্রধান গবেষক বীণা এর নাম দিয়েছেন ‘গঙ্গোত্রী’। ভারতের দীর্ঘতম নদী গঙ্গার উৎস হিমবাহের নামেই করা হয়েছে এই নামকরণ।

বীণা ও তাঁর সহযোগীদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।

ছায়াপথের দুই বাহুকে জুড়েছে সুদীর্ঘ তরঙ্গ

জার্মানির কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী বীণা ‘আনন্দবাজার অনলাইন’-কে বলেছেন, ‘‘আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথে এই প্রথম এমন কোনও কাঠামোর হদিশ মিলল। আমি এই কাঠামোর নাম দিয়েছি 'গঙ্গোত্রী'। কারণ এই হিমবাহই ভারতের দীর্ঘতম নদী গঙ্গার উৎসমুখ। ছায়াপথে এই কাঠামোটি ছয় হাজার থেকে ১৩ হাজার আলোকবর্ষ পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে। ছায়াপথের বড় বাহু ‘নর্মা’ থেকে তুলনায় ছোট বাহু পর্যন্ত। দু’টি বাহুকে কেন্দ্রে যেন জুড়ে দিয়েছে এই প্রবাহ। হয়ে উঠেছে ‘গঙ্গোত্রী’। সেখান থেকেই যেন ছায়াপথের দুটি বাহু দু’দিকে বেরিয়ে গিয়েছে। গঙ্গার প্রবাহের মতোই। আমাদের ছায়াপথে গ্যাসের এত বড় কাঠামোর হদিশ এর আগে মেলেনি। আকাশে যেন এ বার গঙ্গার প্রবাহই।’’

বীণা এও জানিয়েছেন, আকাশ গঙ্গার এই গঙ্গোত্রী-র তরঙ্গে দেখা গিয়েছে যথেষ্টই উথালপাথাল। যেন উপরের গ্যাস নীচে আসছে। আর নীচের গ্যাস উপরে উঠে যাচ্ছে।

‘‘সেটা কেন হচ্ছে তার কারণ এখনও জানতে পারিনি’’, বলেছেন বীণা।

গবেষণাপত্র ও ইনসেটে, জার্মানির কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী  ভি এস বীণা। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গবেষণাপত্র ও ইনসেটে, জার্মানির কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী ভি এস বীণা। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

চেন্নাই থেকে কোলনে বীণার যাত্রাপথ

চেন্নাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি মাদ্রাজ) থেকে ২০১১-’১২ শিক্ষাবর্ষে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি করেন বীণা। তার পর পিএইচডি করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইএসটি) থেকে। ২০১৮-য়। এর পরেই ভিজিটিং ফেলো হিসাবে ডাক পান মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর) থেকে। সেখান থেকে যান জার্মানির কোলনে। কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরালের জন্য।

বীণা জানিয়েছেন, আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথে আরও অবাক করা গ্যাসের কাঠামোর হদিশ মিলতে পারে। কী ভাবে ছায়াপথ গড়ে উঠেছিল, কী ভাবে ছায়াপথে নতুন নতুন তারা তৈরি হচ্ছে, সেই সব ইতিহাস জানতে বুঝতে যা খুবই সহায়ক হয়ে উঠবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement