বাড়িতে পিঠে বানানোর সময় নেই, তাই নিয়ম রক্ষার্থে দোকানই ভরসা! ছবি: সংগৃহীত।
পৌষ মাসের শেষ দিনটি পৌষ সংক্রান্তি। বাঙালির পৌষপার্বণ। পিঠের পরব বললেও ভুল হবে না। এই দিনটি কৃষিজীবী বাঙালির কাছে এই দিনটির গুরুত্ব অনেক। এই দিলেই পালিত হয় নতুন ধানের উৎসব। এর ঠিক আগের দিন গ্রামবাংলার গেরস্তবাড়ির উঠোন পরিষ্কার করে নিয়ে সেখানে চালের গুঁড়ো দিয়ে চমৎকার সব আলপনা দেওয়া হত। যার মধ্যে কুলো, লক্ষ্মীর পা, প্যাঁচা এবং অবশ্যই ধানের ছড়ার আলপনা বেশি প্রচলিত ছিল। মা লক্ষ্মী ঘরে আসবেন বলেই হয়তো করা হত এত তোড়জোড়। এ বাংলায় এই আচারটিকে লোকায়ত ভাষায় আউনি-বাউনি পুজোও বলে। পুজোর পাশাপাশি চলত পিঠেপুলি তৈরির কাজ। তবে এখন ব্যস্ততার যুগে পিঠেপুলি বানানোর চল উঠতে বসেছে বাঙালি বাড়িতে। বাড়িতে পিঠে বানানোর সময় নেই, তাই নিয়ম রক্ষার্থে দোকানই ভরসা! কোথায় গেলে পাবেন সুস্বাদু পিঠের অনবদ্য স্বাদ, রইল তার হদিস।
পিঠে বিলাসী: বিভিন্ন স্বাদের পিঠে চেখে দেখতে হলে একবার ঘুরে আসুন পিঠে বিলাসী থেকে। বারো মাস পিঠে বিক্রি হয় এই দোকানে। মকর সংক্রান্তির জন্য বিশেষ আকর্ষণ ভাপা পুলি, নারকেল ভাপা পুলি, রাঙা আলুর পুলি, বেক পুলি। এ ছাড়াও ১৪ রকমের পিঠেপুলি পাওয়া যাচ্ছে। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, সল্টলেকে পূর্ত ভবনের কাছে ও আর্মহার্ট স্ট্রিটে সিটি কলেজের পাশে পিঠে বিলাসী রেস্তরাঁ রয়েছে। বারো মাস আমিষ পিঠেও পাওয়া যায় এই রেস্তরাঁয়। তবে সংক্রান্তিতে শুধুই নিরামিষ পিঠে পাওয়া যায়।
মিষ্টি হাব: একসঙ্গে একাধিক দোকানের পিঠে চেখে দেখতে হতে আপনাকে যেতে হবে নিউটাউনের মিষ্টি হাব-এ। গাঙ্গুরামের দুধপুলি থেকে বাঞ্ছারামের নারকেল ও ক্ষীরের পাটিসাপটা আর গোকুল পিঠে সবই পাবেন এক ছাদের তলায়। সংক্রান্তির দিনে ‘পিঠেমুখ’ করতে ঢুঁ মারতেই পারেন এই ঠিকানায়।
বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিক: শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিক। জানুয়ারি মাস জুড়েই মিলবে এই দোকানে মেলে পিঠে, পুলি, পাটিসাপটা। পিঠের স্বাদ বেশ ভাল। বাড়িতে পিঠে না হলে ঘুরে আসতেই পারেন এই দোকান থেকে।
কসবার রাজডাঙ্গায় পিঠে উৎসব: ভোজনরসিক বাঙালিদের শুরু হয়েছে রাজডাঙার পিঠেপুলি উৎসব ২০২৩। ১৬ জানয়ারি পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। পিঠেবিলাসিতায় থাকছে সাবেকি ও আধুনিকতার মেলবন্ধন। এই মেলায় নারকেল বা ক্ষীরের পাটিসাপটা, চকোলেট বা ফ্রুট পাটিসাপটা, দুধপুলি, গোকুল পিঠে, সুইসরোল পিঠে, রাঙা আলুর রসমতি অথবা পুরপাতুরি— হরেক স্বাদের পিঠে চেখে দেখতে পারেন।
হিন্দুস্থান সুইটস: ক্ষীরে ডোবানো পাটিসাপটার স্বাদ চেখে দেখতে চাইলে হিন্দুস্থান সুইটস থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। যাদবপুর, টালিগঞ্জ কিংবা রাসবিহারি অ্যাভেনিউ শহরে নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে এই মিষ্টির দোকানটি। এই মিষ্টির দোকানের যাদবপুর শাখায় পাবেন সোনার পিঠে, রুপোর পিঠের মতো একেবারে দুষ্প্রাপ্য সব পিঠে। মিলবে খাঁটি সোনা-রুপোর তবক দিয়ে তৈরি করা পাটিসাপটা পিঠের সম্ভার। যার স্বাদ ভোলার নয়। তাই উৎসবের দিনে মিষ্টিমুখ করতে আপনার পছন্দের তালিকায় এই দোকানটি রাখতেই পারেন।