চলতি বছরে বলিপাড়ায় পা রেখেছেন নায়িকা। ছবি তেমন সফল না-হলেও নায়িকা নজর কেড়েছেন দর্শকের। অভিনয় থেকে নৃত্য, দু’টোতেই পারদর্শী অভিনেত্রী আবার বলিউডে আত্মপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিয়েও করে ফেলেছেন। ‘বেবি জন’-এর নায়িকা কীর্তি সুরেশকে নিয়ে তাই চার দিকে চলছে আলোচনা।
১৯৯২ সালের ১৭ অক্টোবর তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে জন্ম কীর্তির। বাবা-মা এবং দিদির সঙ্গে সেখানেই থাকতেন তিনি। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর তিনি পরিবার-সহ কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে চলে যান।
স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর ফ্যাশন ডিজ়াইনিং নিয়ে পড়বেন বলে চেন্নাইয়ের একটি কলেজে ভর্তি হন কীর্তি। স্নাতক হওয়ার পর ফ্যাশন নিয়ে লন্ডন এবং স্কটল্যান্ডে প্রশিক্ষণও নেন তিনি।
কীর্তির বাবা জি সুরেশকুমার দক্ষিণী ফিল্মজগতের প্রযোজকদের মধ্যে অন্যতম। সুরেশকুমারের সহপাঠী ছিলেন দক্ষিণী পরিচালক প্রিয়দর্শন এবং মালয়ালম অভিনেতা মোহনলাল। তিন জনের ভাল বন্ধুত্ব ছিল। কীর্তির মা-ও অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন কীর্তির মা। তাই শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল কীর্তির।
মাত্র সাত বছর বয়স থেকে একাধিক দক্ষিণী ধারাবাহিকের পাশাপাশি দক্ষিণী ছবিতেও অভিনয় করেন কীর্তি। ‘পাইলটস’, ‘কুবেরান’-এর মতো একাধিক মালয়ালম ছবিতে শিশু অভিনেত্রী হিসাবে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
২০০৪ সালে মা মেনকা সুরেশ এবং দিদি রেবতীর সঙ্গে ‘ভেত্তম’ নামের একটি মালয়ালম ছবি প্রযোজনা করেন কীর্তি।
অভিনয়ের কারণে কীর্তির পড়াশোনায় যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে তার জন্য অভিনয় থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কীর্তির বাবা-মা। ১১ বছর বড় পর্দা থেকে বিরতি নেওয়ার পর আবার অভিনয় শুরু করেন কীর্তি।
স্কুলজীবনে থাকাকালীন সাঁতার শেখেন কীর্তি। সাঁতারের প্রতিযোগিতায় যোগদান করে বিজয়ীও হন তিনি। তবে কলেজের গণ্ডি না-পেরোতেই আবার অভিনয় শুরু করেন।
তিনি যখন তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তখন তাঁকে বড় পর্দায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেন প্রিয়দর্শন। ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গীতাঞ্জলি’ ছবিতে দ্বৈতচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় কীর্তিকে। পড়াশোনা সামলে শুটিং সারতেন তিনি।
‘রজিনী মুরুগান’, ‘নেমো’, ‘রিং মাস্টার’, ‘মহানতি’র মতো একাধিক হিট ছবি দক্ষিণী ফিল্মজগতকে উপহার দিয়েছেন কীর্তি। মালয়ালম ভাষার ছবির পাশাপাশি তামিল এবং তেলুগু ছবিতে অভিনয় করেও জনপ্রিয়তা পান কীর্তি।
চলতি মাসে মুক্তি পাওয়া ‘বেবি জন’ ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ করেন কীর্তি। বলি অভিনেতা বরুণ ধওয়ানের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, কীর্তির সঙ্গে রয়েছে বলিউডের ‘বাদশা’ শাহরুখ খানের যোগও। কীর্তির দিদি রেবতী পেশায় ভিএফএক্স বিশেষজ্ঞ। শাহরুখের প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করতেন রেবতী।
দক্ষিণী ফিল্মপাড়ার নামকরা অভিনেত্রী। তবুও ১৫ বছর ধরে লোকচক্ষুর আড়ালে সম্পর্কে ছিলেন তিনি। ঘুণাক্ষরেও তা প্রকাশ্যে আনেননি কীর্তি।
ডিসেম্বর মাসে গোয়ায় আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবের উপস্থিতিতে দীর্ঘকালীন প্রেমিক অ্যান্টনি থাত্তিলকে বিয়ে করেন কীর্তি। অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত নন অ্যান্টনি। পেশায় ব্যবসায়ী কীর্তির স্বামী।
কানাঘুষো শোনা যায়, ২০০৮-’০৯ সাল থেকে অ্যান্টনির সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন কীর্তি। সেই সময় কীর্তি স্কুলে পড়তেন এবং অ্যান্টনি কলেজে। দীর্ঘ দিনের প্রেম হলেও তা নিয়ে কখনও প্রকাশ্যে কিছু বলেননি কীর্তি।
কীর্তি এবং অ্যান্টনির ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা তাঁদের সম্পর্কের কথা জানতেন। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে অ্যান্টনির সঙ্গে ছবি দিয়ে কীর্তি জানান যে, তাঁরা ১৫ বছর ধরে সম্পর্কে রয়েছেন।
‘বেবি জন’ ছবি মুক্তির আগে বিয়ে সারেন কীর্তি। ছবির প্রচারের সময় মঙ্গলসূত্র পরতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
বলিপাড়ায় কীর্তির অভিনয়ের পাশাপাশি নাচের প্রশংসাও শোনা যেতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অভিনেত্রীর অনুরাগীর সংখ্যাও বেড়েছে। বর্তমানে ইনস্টাগ্রামের পাতায় কীর্তির অনুগামীর সংখ্যা দেড় কোটির গণ্ডি পার করে ফেলেছে।
সব ছবি: সংগৃহীত।