
একাধিক হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন। হিন্দি ছবিতে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যেত তাঁকে। কিন্তু অভিনয়জগতে আর দেখা পাওয়া যাবে না তাঁর। সোমবার রাতে ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন টেলি অভিনেতা ললিত মনচন্দা।

মাত্র ৩৬ বছর বয়স হয়েছিল ললিতের। সোমবার অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।

কেরিয়ার গড়তে মুম্বই গিয়েছিলেন ললিত। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুম্বইয়ে ছিলেন তিনি। একাধিক জনপ্রিয় হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন ললিত। তবে সেই চরিত্রগুলি এতই স্বল্পদৈর্ঘ্যের যে বড় পর্দায় আলাদা ভাবে নজরে পড়েননি তিনি।

এক দশকের বেশি সময় মুম্বইয়ে থাকার পর উত্তরপ্রদেশে ফিরে গিয়েছিলেন ললিত। মেরঠের প্রহ্লাদনগরে স্ত্রী এবং দুই সন্তানের সঙ্গে থাকতেন তিনি। সেখান থেকে সোমবার তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হলেও অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ললিতের কয়েক জন প্রতিবেশীর দাবি, শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁকে দেখে কেউ বুঝতে পারেননি যে, হঠাৎ এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন তিনি।

‘তারক মেহতা কা উল্টা চশমা’ নামের ছোট পর্দার এক নামকরা হিন্দি ধারাবাহিকে শেষ অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল ললিতকে। টেলিপাড়া সূত্রে খবর, সেই ধারাবাহিকে একটি ক্যামিয়ো চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

ছোট পর্দায় ‘কুমকুম ভাগ্য’, ‘ক্রাইম পেট্রোল’-এর মতো টিআরপি-র শীর্ষে থাকা হিন্দি ধারাবাহিকেও অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন ললিত। তবে পুলিশের অনুমান, বিগত কয়েক মাস ধরে আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছিলেন অভিনেতা।

ললিতের মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য অভিনেতার দেহ পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হতাশা এবং আর্থিক অনটনের কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন ললিত।

ললিতকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন ‘ক্যায়সে মুঝে তুম মিল গয়ে’ ধারাবাহিকের অভিনেতা জীতেন্দ্র বোহারা। ললিতের মৃত্যুর নেপথ্যে অন্যতম কারণ আর্থিক অনটন সে কথা স্বীকার করেছেন টেলি অভিনেতাও।

ললিতের ছবি পোস্ট করে শোকপ্রকাশ করার পর জীতেন্দ্র লিখেছেন, ‘‘প্রশিক্ষণ ছাড়া কম পারিশ্রমিক দিয়ে অপেশাদার অভিনেতাদের দিয়ে কাজ করানো হয়। জিনিসপত্রের দাম ক্রমশ বেড়ে চলেছে। কিন্তু বেতনবৃদ্ধির কোনও আশা নেই। শিল্পীদের জন্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। ললিতের এমনটা প্রাপ্য ছিল না।’’

কানাঘুষো শোনা গিয়েছে যে, কোনও এক ওয়েব সিরিজ়ে কাজ করবেন বলে উৎসাহী হয়ে পড়েছিলেন ললিত। পরে তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি তাঁকে।

অল ইন্ডিয়ান সিনে ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইসিডব্লিউএ) সংস্থার তরফে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে যে, ললিতের মৃত্যু নিয়ে দ্রুত তদন্ত শুরু করা হোক।
সব ছবি: সংগৃহীত।