হিন্দি বিনোদন দুনিয়ায় আবার অকালপ্রয়াণ। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত টেলি দুনিয়ার পরিচিত মুখ অভিনেতা সিদ্ধান্ত বীর সূর্যবংশী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৬।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, জিম করার সময় আচমকাই জ্ঞান হারান অভিনেতা। তার পরই তাঁর মৃত্যু হয়।
হিন্দি টেলিভিশন দুনিয়ায় একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন সিদ্ধান্ত। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া টেলি জগতে।
অন্য চার-পাঁচ জন অভিনেতার মতোই সিদ্ধান্তের জীবনেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। তাঁর প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়া নিয়ে জোর চর্চা হয়েছিল বিনোদন দুনিয়ায়। তার পর দ্বিতীয় বিয়ে নিয়েও বিস্তর চর্চা চলে।
সিদ্ধান্তের প্রথম স্ত্রী ইরা। ২০০০ সালে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। দম্পতির এক কন্যাসন্তান রয়েছে। তার নাম দিজা। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত ইরা।
১৫ বছর ধরে ইরার সঙ্গে সুখের সংসার ছিল সিদ্ধান্তের। কিন্তু ২০১৫ সালে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে থাবা বসায় বিচ্ছেদ।
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের নেপথ্যে সিদ্ধান্তের বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্কের খবর প্রকাশ্যে আসে। যা নিয়ে বিস্তর চর্চা চলে টেলি দুনিয়ায়।
শোনা গিয়েছিল, সহ-অভিনেত্রী প্রিয়া ভাতিজার প্রেমে নাকি হাবুডুবু খাচ্ছিলেন সিদ্ধান্ত। তাঁদের সেই প্রণয়ের জেরেই ইরার সঙ্গে সিদ্ধান্তের ঘর ভেঙেছে।
যদিও বিচ্ছেদের বেশ কিছু সময় পর এক ইংরাজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছিলেন যে, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত একান্তই ব্যক্তিগত। তাঁরা দু’জনেই পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁদের মধ্যে কোনও তিক্ততা নেই।
প্রিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গুঞ্জন নিয়েও ওই সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছিলেন অভিনেতা। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁরা দু’জনে খুব ভাল বন্ধু। তবে প্রেমের সম্পর্ক নেই।
২০১৫ সালে ইরার সঙ্গে সিদ্ধান্তের বিচ্ছেদের দু’বছরের মাথায় আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন অভিনেতা। পাত্রী সুপারমডেল আলেশিয়া রাউত।
২০১৭ সালে আলেশিয়ার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন সিদ্ধান্ত। অভিনেতাকে বিয়ের আগে আলেশিয়া ‘সিঙ্গল মাদার’ ছিলেন। তাঁর এক পুত্রসন্তান রয়েছে। তার নাম মার্ক।
আলেশিয়া ভারতীয় নন। তাঁর জন্ম মস্কোয়। আলেশিয়ার বাবা ভারতীয়, মা রুশ নাগরিক।
আলেশিয়ার সঙ্গে সিদ্ধান্তের আলাপ হয়েছিল অভিনেত্রী যশবীর কউরের মাধ্যমে। যশবীর সিদ্ধান্তের বন্ধু ও সহ-অভিনেত্রী।
এক সাক্ষাৎকারে আলেশিয়া প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন অভিনেতা। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এক বন্ধুর মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল আমাদের দু’জনের। আমরা দু’জনেই সংসার বাঁধতে চেয়েছিলাম। ওকে দেখেই ভাল লেগেছিল।’’ আলেশিয়ার সঙ্গে সিদ্ধান্তের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়েও চর্চা চলেছিল।
সিদ্ধান্তের আসল নাম আনন্দ সূর্যবংশী। তবে সম্প্রতি তিনি নিজের নাম বদলে রেখেছিলেন সিদ্ধান্ত সূর্যবংশী।
‘কুসুম’ নামে একটি ধারাবাহিকের হাত ধরে অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছিল সিদ্ধান্তের। তার পর একাধিক ধারাবাহিকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
‘কসৌটি জিন্দেগি কি’, ‘কৃষ্ণ অর্জুন’, ‘ক্যায়া দিল মেঁ হ্যায়’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছে অভিনেতাকে। তাঁর অভিনীত শেষ দু’টি ধারাবাহিক ছিল ‘কৌন রিস্তোঁ মেঁ কাট্টি বাট্টি’, ‘জিদ্দি দিল’।
অভিনেতার মৃত্যুর খবরটি দেন বন্ধু জয় ভানুশালী। তিনি নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে সিদ্ধান্তের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। গভীর শোকপ্রকাশ করে লেখেন, ‘‘বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গেলে!’’
এর আগে জিম করতে করতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল সলমন খানের বডি ডাবল সাগর পাণ্ডের। মাস কয়েক আগে জিম করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলিউড অভিনেতা রাজু শ্রীবাস্তব। হাসপাতালে বহু দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তবু বাঁচানো যায়নি কৌতুকশিল্পীকে। স্মরণে আসতে পারে অভিনেতা সিদ্ধান্ত শুক্লর কথাও। গত বছর শরীরচর্চা করতে করতে তাঁরও এমনই মর্মান্তিক পরিণতি ঘটে।