Pakistan Blackmail China

বন্ধুর পিঠে ছুরি! বন্দরকে সামনে রেখে ‘পরমাণু ব্ল্যাকমেল’, পাক সেনার বেয়াদবিতে রেগে কাঁই চিন

চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে তৈরি হয় জটিলতা। বালুচিস্তানের গ্বদর সমুদ্রবন্দরকে নৌসেনা ঘাঁটি হিসাবে পেতে হলে দ্বিতীয় স্ট্রাইকের পরমাণু প্রযুক্তি সরবরাহের শর্ত বেজিংয়ের সামনে রেখেছে পাক সেনা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৩২
০১ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

সুযোগ বুঝে ‘বন্ধু’কেই ব্ল্যাকমেলিং! প্রাণের সখার ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্রের ভান্ডার হাতিয়ে নেওয়ার তাল! বিনিময়ে মিলবে আর্থিক করিডরের অন্তর্গত সমুদ্রবন্দরের মালিকানা। এ হেন প্রস্তাব শুনে রেগে কাঁই ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র। কোনও ধরনের ব্ল্যাকমেলিং বরদাস্ত নয়, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তারা। এই ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্কে ভাঙন ধরতে পারে বলেও মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।

০২ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

‘চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’কে (চায়না পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর বা সিপিইসি) কেন্দ্র করে ইসলামাবাদ ও বেজিংয়ের ‘অটুট বন্ধন’-এ জমতে শুরু করেছে সন্দেহের কালো মেঘ। সূত্রের খবর, সিপিইসির অন্তর্গত গ্বাদর বন্দরকে নিয়ে ড্রাগনকে ব্ল্যাকমেলিং শুরু করেছে পাক সেনা। বলা বাহুল্য, বিষয়টি একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। উল্লেখ্য, বেজিংয়ের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’-এর অন্তর্গত এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত লগ্নির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬,২০০ কোটি ডলার। সিপিইসিতে চিনের শিনজ়িয়ান থেকে পাকিস্তানের বালুচিস্তানের গ্বাদর পর্যন্ত চলছে রাস্তা ও অন্যান্য পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ।

০৩ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

পাক সংবাদ সংস্থাগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্বাদর বন্দরের মালিকানা পাওয়ার ক্ষেত্রে বেজিংকে নতুন শর্ত দিয়েছে জেনারেল আসিফ মুনিরের নেতৃত্বাধীন ফৌজ। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্ট্রাইকে সক্ষম পারমাণবিক শক্তি ইসলামাবাদকে সরবরাহ করতে হবে। আণবিক শক্তি দিতে না-চাইলে গ্বাদর বন্দর ভুলতে হবে ড্রাগনকে।

Advertisement
০৪ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

সম্প্রতি আর্থিক করিডরের অন্তর্গত এই বন্দরকে কেন্দ্র করে আলোচনা বন্ধ করেছে দুই দেশ। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে পাক সেনা নতুন শর্ত নিয়ে হাজির হওয়ায় মেজাজ সপ্তম চড়েছে চিনের। এই ধরনের ব্ল্যাকমেল করার জন্য ইসলামাবাদকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে শি-র দেশ।

০৫ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, পাক সেনার পরমাণু অস্ত্র ভান্ডার বৃদ্ধির সক্ষমতা নেই। তা থাকলে এত দিনে আণবিক হাতিয়ারের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়িয়ে নিতে কসুর করত না ইসলামাবাদ। এ ক্ষেত্রে চরম আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও জলের মতো টাকা খরচ করতে পিছপা হত না পাক সরকার বা মুনিরের ফৌজ। আর সেটা যে ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় ঝুঁকি তৈরি করত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Advertisement
০৬ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

কিন্তু ক্ষমতা না-থাকলে কী হবে, সাধ আছে ষোলো আনা! সেই জন্যেই চিনকে ফাঁসিয়ে পরমাণু অস্ত্রের ভান্ডার বৃদ্ধির নোংরা খেলায় নেমেছে ইসলামাবাদ। নেপথ্যে থেকে যাবতীয় কলকাঠি নাড়ছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। এ জন্য দাবার বোড়ে হিসাবে গ্বাদর বন্দরকে ব্যবহার করছে তারা।

০৭ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

অন্য দিকে গ্বাদরে নৌঘাঁটি তৈরির জন্য কয়েক কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে বেজিং। মূলত, ভারতের উপর চাপ তৈরি করা এবং আরব সাগরে প্রভুত্ব স্থাপনই এর উদ্দেশ্য। এই এলাকার নৌঘাঁটি থেকে সহজেই পারস্য উপসাগর, লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে নজরদারি করতে পারবেন ড্রাগনের জলযোদ্ধারা। সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানানো যাবে আমেরিকাকেও।

Advertisement
০৮ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

পাক সেনা সংক্রান্ত খবর গোটা দুনিয়ার সামনে আনার ক্ষেত্রে ‘ড্রপ সাইট নিউজ’ নামের একটি ওয়েবসাইটের খ্যাতি রয়েছে। সেখানেই প্রথম চিনের কাছে মুনির সেনার আণবিক অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়। এই ইস্যুতে বেজিং কথা এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজি নয় বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও সরকারি ভাবে এই নিয়ে কোনও পক্ষই কোনও বিবৃতি জারি করেনি।

০৯ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

কিন্তু গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ভারতের ক্রমাগত সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে আতঙ্কে রয়েছে পাক সেনা। আর তাই যে কোনও মূল্যে পরমাণু হাতিয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে চাইছে তাঁরা। এই পরিকল্পনায় অটল রয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির। দেশের আর্থিক বিপর্যয় তাঁর সিদ্ধান্তে কোনও ফাটল ধরাতে পারবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

১০ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

গত কয়েক বছর ধরেই চিনকে ‘সবচেয়ে কাছের বন্ধু’ বলে ঢাক পিটিয়ে এসেছে পাকিস্তান। দুই দেশের সম্পর্ক ‘হিমালয়ের চেয়ে উঁচু এবং সমুদ্রের চেয়ে গভীর’ বলে দাবি করে বেজিংয়ের সুনজরে থাকার চেষ্টা চালিয়েছে ইসলামাবাদ। কিন্তু সূত্রের খবর, মুখে বন্ধুত্বের কথা বললেও গ্বদরে ড্রাগনের নৌঘাঁটি হোক, তা একেবারেই চাইছেন না জেনারেল মুনির ও তাঁর অধস্তন সেনা অফিসারেরা।

১১ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

চলতি বছরের গোড়ার দিকে গ্বদরে নৌসেনা ঘাঁটি নির্মাণ নিয়ে পাক সেনা ও সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা চালায় বেজিং। ওই সময়ে চিনের ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’র নৌসেনাকে বালুচিস্তানের বন্দরটি ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ইসলামাবাদ। কিন্তু পরে এই ইস্যুতে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায় ভারতের পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশ।

১২ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অবশ্য দাবি, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বদল না-করে পাকিস্তানের কাছে দ্বিতীয় কোনও উপায়ও নেই। কারণ, গ্ব

১৩ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে হাতে রাখতে বেজিংকে বেকায়দায় ফেলার রাস্তাই বেছে নিয়েছে ইসলামাবাদ। পাশাপাশি, গ্বাদরের লোভ দেখিয়ে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগকেও হাতছাড়া করতে চাইছেন না জেনারেল মুনির। সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের সমান ক্ষমতার অধিকারী হতে যাবতীয় সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহের শর্তও ড্রাগনের সামনে রেখেছেন তিনি।

১৪ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

পাক সেনার যুক্তি, ভারতের সঙ্গে ফের যুদ্ধ বাধলে নয়াদিল্লি অতি সহজেই তাঁদের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার ধ্বংস করবে। তখন প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে না ইসলামাবাদের। আর তাই দ্বিতীয় স্ট্রাইকের আণবিক অস্ত্র প্রযুক্তি চিনের থেকে হাতিয়ে নিতে চাইছেন তাঁরা।

১৫ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

দ্বিতীয় স্ট্রাইকের আণবিক প্রযুক্তি হল প্রকৃতপক্ষে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ডুবোজাহাজ। সমুদ্রের গভীরে থেকে এটি শত্রু দেশের উপর আণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে আক্রমণ শানাতে পারে। এই ধরনের ডুবোজাহাজকে চিহ্নিত করা খুবই কঠিন। আমেরিকা, রাশিয়া, চিন এবং ভারত-সহ বিশ্বের গুটি কয়েক দেশের কাছে রয়েছে এই প্রযুক্তি।

১৬ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

বর্তমানে ভারতের কাছে এই ধরনের দু’টি ডুবোজাহাজ রয়েছে। সেগুলি হল, আইএনএস অরিহান্ত ও আইএনএস অরিঘাট। পরমাণু শক্তিচালিত এই দুই ডুবোজাহাজে রয়েছে ‘কে-৪’ আণবিক ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই ধরনের আরও একটি ‘নিঃশব্দ ঘাতক’ তৈরি করেছে নয়াদিল্লি। সেটির নাম আইএনএস অরিদমন। বর্তমানে তার সামুদ্রিক পরীক্ষা চলছে।

১৭ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের মতো মোট চারটি জায়গা থেকে পরমাণু হাতিয়ার ব্যবহারের সক্ষমতা রয়েছে ভারতীয় ফৌজের। ভূমি ও আকাশের পাশাপাশি রণতরী এবং ডুবোযান থেকে এই অস্ত্র শত্রুর উপর প্রয়োগ করতে পারবে এ দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী। সেনাবাহিনীর পরিভাষায় একে বলা হয় ‘পারমাণবিক ত্রয়ী’ বা ‘নিউক্লিয়ার ট্রায়েড’।

১৮ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

চলতি বছরের জুনে ভারত ও পাকিস্তানের হাতে থাকা আণবিক হাতিয়ারের সংখ্যা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুইডিশ সংস্থা ‘স্টকহোলম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট’। তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ ব্যাপারে ইসলামাবাদের থেকে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে নয়াদিল্লি। এই রিপোর্ট পাক সেনাকর্তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।

১৯ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

স্টকহোলম ইন্টারন্যাশনালের দাবি, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের হিসাবে ভারতের হাতে ১৭২টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। অন্য দিকে পাকিস্তানের আণবিক হাতিয়ারের সংখ্যা ১৭০। অর্থাৎ, দু’টি হলেও ওয়ার হেডের নিরিখে ইসলামাবাদকে পিছনে ফেলেছে নয়াদিল্লি।

২০ ২০
Pakistan army started blackmailing to China for providing second strike nuclear capability instead of Gwadar port

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল সংখ্যা দিয়ে পরমাণু অস্ত্রের উপযোগিতা বিচার করা যায় না। তা কত কিলোটনের, তার উপরেই কার্যকারিতা নির্ভর করে। বর্তমানে ভারত ভূমি, আকাশ ও জল থেকে পরমাণু হামলা চালানোর উপযোগী ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ও মান ক্রমাগত বাড়াচ্ছে বলেও জানিয়েছে ‘স্টকহোলম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট’।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি