
পরিবারের কেউ অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে শৈশব থেকেই বড় পর্দার একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। তার পর ইন্ডাস্ট্রি থেকে হঠাৎ ‘উধাও’ হয়ে যান তিনি। ২১ বছর ধরে তাঁর অভিনয় দেখা যায়নি। এখন কী করছেন আনন্দ বর্ধন?

সঙ্গীতশিল্পী পিবি শ্রীনিবাসের নাতি আনন্দ। কন্নড়, তামিল এবং তেলুগু ভাষায় গান গেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন শ্রীনিবাস। আনন্দের পিতা পেশায় ছিলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট।

শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল আনন্দের। শ্রীনিবাস চাইতেন তাঁর নাতি ফিল্মজগতে কেরিয়ার গড়ে তুলুক। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন আনন্দের বাবা-মা।

১৯৯৩ সালে জন্ম আনন্দের। তাঁর জন্মের পর থেকেই আনন্দের পিতা তাঁকে রামায়ণ পড়ে শোনাতেন। তাই কম বয়স থেকেই রামায়ণের চরিত্রগুলি আত্মস্থ করে ফেলেছিলেন আনন্দ।

মাত্র চার বছর বয়স থেকে অভিনয় শুরু করেন আনন্দ। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘প্রিয়ারাগালু’ নামের তেলুগু ভাষার একটি ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু করেন আনন্দ।

যে রামায়ণ শুনে আত্মস্থ করে ফেলেছিলেন, পরবর্তী কালে ভাগ্যের নিয়মে রামায়ণ নির্ভর একটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান আনন্দ। তেলুগু ভাষার ছবি ‘রামায়ণম’-এ বাল্মীকি এবং হনুমানের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় আনন্দকে।

কেরিয়ার শুরুর প্রথম দু’বছর শুধুমাত্র তেলুগু ভাষার ছবিতে অভিনয় করেন আনন্দ। ছবির তালিকায় ছিল ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তেলুগু ছবি ‘সূর্যবংশম’। এই ছবির হিন্দি রিমেকেও অভিনয়ের সুযোগ পান আনন্দ।

১৯৯৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তারকাখচিত হিন্দি ছবি ‘সূর্যবংশম’। বলিউডের ‘শাহেনশা’ অমিতাভ বচ্চনকে এই ছবিতে দ্বৈতচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। অমিতাভের পাশাপাশি এই ছবিতে অভিনয় করেন বাঙালি নায়িকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌন্দর্যা, জয়াসুধা, কাদের খান, অনুপম খেরের মতো তারকারা।

‘সূর্যবংশম’ ছবিতে শিশু অভিনেতা হিসাবে অভিনয়ের সুযোগ পান আনন্দ। ছবির চিত্রনাট্য অনুযায়ী অমিতাভ এবং সৌন্দর্যার পুত্রের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

‘সূর্যবংশম’ ছবিতে কখনও অমিতাভের পিঠে চেপে, কখনও আবার অন্য কোনও দৃশ্যে অভিনয় করেন আনন্দ। কম বয়সে আনন্দের অভিনয় দেখে প্রশংসা করেছিলেন অনেকে।

কিন্তু ‘সূর্যবংশম’-এর পর আর কোনও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি আনন্দকে। আবার দক্ষিণী ফিল্মজগতে পা রাখেন তিনি।

তেলুগু ছবির পাশাপাশি কন্নড় ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেন আনন্দ। ২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নেনুন্নানু’ নামের তেলুগু ভাষার ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে। তার পর আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি আনন্দকে।

২০০৪ সালের পর বড় পর্দা থেকে একেবারেই ‘উধাও’ হয়ে যান আনন্দ। আনন্দের যখন মাত্র ১১ বছর বয়স, তখন অভিনয় থেকে সরে যান তিনি। মন দেন পড়াশোনায়।

স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পর হায়দরাবাদের একটি কলেজে ভর্তি হন আনন্দ। সেই কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ে ২০১২ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

২১ বছর অভিনয়জগৎ থেকে বিরতি নেওয়ার পর আবার বড় পর্দায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন আনন্দ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘নিদুরিঞ্চু জাহাপনা’ নামের তেলুগু ভাষার ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে আবার ‘কামব্যাক’ করেছেন তিনি।
সব ছবি: সংগৃহীত।