তিনি প্রখ্যাত র্যাপ গায়ক। একাধিক জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ মিলিয়ে ইতিমধ্যেই গোটা দেশে সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। তবে পঞ্জাবের সেই আদিত্য প্রতীক সিংহ সিসৌদিয়া ওরফে বাদশা এ বার রেস্তরাঁ ব্যবসাতেও নাম লেখালেন।
ব্যবসায়ী ববিতা পুরী গুপ্ত এবং উদয়বীর গুপ্তের সঙ্গে যৌথ ভাবে তিনটি রেস্তরাঁর মালিকানা হাতে নিয়েছেন বাদশা। পঞ্জাব এবং হরিয়ানার রাজধানী চণ্ডীগড়েই রয়েছে এই তিনটি রেস্তরাঁ।
তার মধ্যে একটি রেস্তরাঁর অন্দরের ছবি সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেটির অপূর্ব কারুকাজ, অত্যাধুনিক ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেটাগরিকদের নজর কেড়েছে।
রেস্তরাঁটির আলোকসজ্জারও প্রশংসা করেছেন সকলে। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের উৎসাহিত করতে রঙিন আলোর খেলা, গানের সঙ্গে আলোআঁধারি পরিবেশ তৈরির চেষ্টা— এই সব ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
ওই রেস্তরাঁর একটি পানীয় ইতিমধ্যেই ক্রেতাদের কাছে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাদশার নামের সঙ্গে তাল মিলিয়েই পানীয়টির নামকরণ করা হয়েছে ‘বাদশাহি’।
পানীয়টি অবশ্য বাদশাহি মেজাজেই তৈরি করেন সেখানকার রন্ধনকারেরা। সুস্বাদু পানীয়টিতে দুধ, গোলাপ ছাড়াও দেওয়া হয় সোনার গুঁড়ো, ক্রিম, শুকনো ফল ইত্যাদি।
জানা গিয়েছে, প্রাচীন স্পেনীয় শহরগুলিতে থাকা পান্থশালার অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে রেস্তরাঁটিকে। রেস্তরাঁর ভিতরে রয়েছে কাঠ দিয়ে নির্মিত নানা স্থাপত্য, পাথরের মেঝে।
রাতের আকাশ দেখতে দেখতে যদি কেউ নৈশভোজ সারতে চান, তবে সেই ব্যবস্থাও রয়েছে বাদশার রেস্তরাঁতে। রেস্তরাঁর এক দম উপরে রয়েছে বিশেষ আলো দিয়ে সজ্জিত সুবিশাল একটি খাবার জায়গা।
৯০০০ বর্গফুটের রেস্তরাঁটিতে যেমন থাকছে ভারতের নানা প্রদেশের মুখরোচক খাবার, তেমনই থাকছে বিদেশের নানা সুস্বাদু পদও।
রেস্তরাঁর ভিতরে যে বসে খাবার জায়গা, সেটিকে সাজানো হয়েছে টেরাকোটার মূর্তি, সোনা দিয়ে নির্মিত মূর্তি এমনকি নানা দামি পাথর দিয়ে।
এই রেস্তরাঁর কিছু জনপ্রিয় ভারতীয় পদের নাম হল ‘সোনা মুর্গ কাবাব’, ‘লগান কা মুর্গ’, ‘ডাল মাখানি’, ‘ছুপা রুস্তম কাবাব’। অনেকেই মনে করছেন নিজের গানগুলির মতো পদের নামকরণের ক্ষেত্রেও চমক দিয়েছেন বাদশা।
তবে রেস্তরাঁতে গেলে মিলবে লেবানন, এশিয়ার অন্তত ১২টি দেশের নানারকম মনোমুগ্ধকর পদ। এই পদগুলি তৈরি করতে যে সমস্ত মশলা লাগে, সেগুলি ঘরোয়া ভাবেই তৈরি করা হয়ে থাকে বলে জানা গিয়েছে।
গায়ক, সঙ্গীত পরিচালক, গান লিখিয়ে ছাড়াও সমাজসেবী হিসাবে খ্যাতি আছে বাদশার। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, রেস্তরাঁগুলি থেকে আয় বাবদ যে টাকা আসবে, সেই টাকার একাংশও তিনি সমাজসেবামূলক কাজে ব্যয় করবেন।
গত ১৯ নভেম্বর ৩৮তম জন্মদিন পালন করেন বাদশা। তবে জাঁকজমক করে নয়, সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া ৫০০ জন শিশুর সঙ্গে জন্মদিন পালন করেন তিনি। ওই ৫০০ জনকে নিজের অর্থে ভরপেট খাওয়ানও।
মনে করা হচ্ছে, গানের পাশাপাশি বাদশার এই ব্যবসায় নামার নেপথ্যেও রয়েছে একটি কারণ। আর তা হল এই ধরনের সমাজসেবামূলক কাজকে আরও প্রসারিত করা। আরও শিশুর দু’বেলা খাওয়া এবং বিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালানোর দায়দায়িত্ব নিতে চান পঞ্জাবের এই গায়ক।