ক্রিকেট বা ফুটবল বিশ্বকাপের মতো চার বছর অন্তর আসে সে-ও। তবে তাকে নিয়ে তেমন উৎসাহ, উদ্দীপনা চোখে পড়ে না। কালের নিয়মেই সে আসে, আবার চলেও যায়।
—ফাইল চিত্র।
বাংলায় যার নাম অধিবর্ষ, ইংরেজিতে তাকেই বলে লিপ ইয়ার। ক্যালেন্ডারের ছকবাঁধা নিয়মে এক চিলতে ব্যতিক্রম নিয়ে চার বছর অন্তর এক বার করে দেখা দেয় এই লিপ ইয়ার।
—ফাইল চিত্র।
সাধারণত, প্রতি বছরে ৩৬৫টি দিন থাকে। লিপ ইয়ারে থাকে এক দিন অতিরিক্ত। সেখানেই তার বিশেষত্ব। লিপ ইয়ারের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই বাড়তি দিনটিকে যোগ করে ২৯ দিনের মাস হিসাব করা হয়।
—ফাইল চিত্র।
কেন লিপ ইয়ার আসে? পৃথিবী সূর্যের চারদিকে যে গতিতে ঘোরে, তার ভিত্তিতে ঋতু পরিবর্তন হয়। বছরের হিসাবও মেলানো হয় পৃথিবীর সেই বার্ষিক গতি অনুসারে। সূর্যকে এক বার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর ৩৬৫ দিন বা এক বছর সময় লাগে।
—ফাইল চিত্র।
তবে এখানে সময়ের সূক্ষ্ম একটি হিসাব রয়েছে। দীর্ঘ দিন যা পৃথিবীর বাসিন্দাদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে। ফলে দীর্ঘ দিন গুলিয়ে ছিল সময় এবং বছরের হিসাব। কেউ তা ঠিক করার প্রয়োজন মনে করেননি।
—ফাইল চিত্র।
হিসাব করে দেখা যায়, সূর্যের চারপাশে এক বার ঘুরে আসতে পৃথিবী ৩৬৫ দিনের চেয়ে সামান্য বেশি সময় নেয়। সময় লাগে আরও এক দিনের এক চতুর্থাংশ। বছরের পর বছর এই এক চতুর্থাংশ দিন হিসাবে ধরা হত না। ফলে তা অতিরিক্ত হিসাবে জমে যেত প্রতি বছর।
—ফাইল চিত্র।
ক্যালেন্ডারের এই গরমিল প্রথম চোখে পড়ে রোম সম্রাট জুলিয়াস সিজ়ারের আমলে। নতুন করে আবার ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়, শুরু হয় নতুন করে দিন গণনা।
—ফাইল চিত্র।
সময়টা খ্রিস্টপূর্ব ৪৫ অব্দ। সিজ়ারই প্রথম চার বছর অন্তর একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করে নতুন ক্যালেন্ডারের প্রচলন করেন। সেই থেকে শুরু হয় লিপ ইয়ারের হিসাব। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে তখন তার নাম লিপ ইয়ার ছিল না।
—ফাইল চিত্র।
জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসাব চলেছিল দীর্ঘ দিন। বাড়তি দিনটি ওই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যুক্ত হত চতুর্থ বছরের একে বারে শেষে। ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে ওই হিসাব আবার খানিকটা বদলে যায়। শুরু হয় নতুন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের গণনা।
—ফাইল চিত্র।
ওই সময়ে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারেও খানিকটা গলদ ধরা পড়েছিল। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবীর আসলে সময় লাগে ৩৬৫.২৪২১৯ দিন। এক চতুর্থাংশের চেয়ে যা আবার সামান্য বেশি। তাতেই গোলমাল বাঁধে।
—ফাইল চিত্র।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওই বাড়তি হিসাব জমা হতে শুরু করে কালের গহ্বরে। ১৫৮২ সাল নাগাদ জানা যায়, ওই বাড়তি সময় জমতে জমতে ১০ দিন অতিরিক্ত হয়ে গিয়েছে। আর মেলানো যাচ্ছে না বছরের হিসাব।
—ফাইল চিত্র।
পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি এই হিসাব মেলানোর জন্য বছরের শেষ থেকে বাড়তি দিনটি নিয়ে আসেন ফেব্রুয়ারি মাসে। একটি বাড়তি দিন পায় ২৮ দিনের ফেব্রুয়ারি। সেই থেকে চার বছর অন্তর ফেব্রুয়ারির দিনসংখ্যা হয় ২৯।
—ফাইল চিত্র।
আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বিশেষ বছরটির নামও ওই সময় থেকেই হয় লিপ ইয়ার। সাধারণত, যে বছরগুলিকে চার দিয়ে ভাগ করা যায়, সেগুলি লিপ ইয়ার। তবে শতবর্ষগুলিতে আবার কিছুটা ব্যতিক্রম রয়েছে।
—ফাইল চিত্র।
যে শতবর্ষগুলি ৪০০ দিয়ে ভাগ করা যায় (যেমন— ১২০০, ২০০০ ইত্যাদি), সেগুলিকে লিপ ইয়ার হিসাবে ধরা হয়। কিন্তু ১৭০০, ১৯০০-র মতো বছরগুলি চার দিয়ে ভাগ করা গেলেও ৪০০ দিয়ে ভাগ করা যায় না। এগুলি তাই লিপ ইয়ার নয়।
—ফাইল চিত্র।
এখনও পর্যন্ত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসাবকেই লিপ ইয়ারের ক্ষেত্রে আদর্শ ধরা হয়। তবে বিশেষজ্ঞেরা জানান, এই ক্যালেন্ডারেও গলদ রয়েছে। আসলে এক সৌরবর্ষ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের চেয়ে ২৬ সেকেন্ড ছোট। সেই হিসাব মেলাতে নতুন ক্যালেন্ডার এখনও তৈরি করা হয়নি।
—ফাইল চিত্র।