জেরুসালেমে এক মন্দিরে চলছে বিরাট অনুষ্ঠান। খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও তাক লাগানোর মতো। মন্দিরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক রক্ষী। কোথাও যেন কোনও গন্ডগোল না হয়, সে দিকে কড়া নজর রখছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর কারণেই লেগে গেল ভয়াবহ সংঘর্ষ।
সেই রক্ষী সামনের দিকে ঝুঁকে সকলকে ভিতরে আসার জন্য স্বাগত জানাচ্ছিলেন। আর তখনই বাতকর্ম করে ফেলেন তিনি।
এই ঘটনায় মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়ায় ঘটনাস্থলে। উপস্থিত সকলে রক্ষীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। তাঁকে ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সকলকে শান্ত হতে বলেন সেখানে উপস্থিত সেনারা।
পাথরের আঘাত থেকে রক্ষীকে বাঁচাতে মন্দিরে উপস্থিত সেনারা তাঁকে ঘিরে ফেলেন।
কিন্তু তাতে ঝামেলা আরও বেড়ে যায়। ঘটনাস্থলে বেশি সংখ্যক সেনা মোতায়েন করা হয়।
দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে পালাতে শুরু করেন।
এত লোকের ভিড়ে বহু মানুষ দমবন্ধ হয়ে মারা যান।
মন্দিরের ভিতর থেকে সকলকে মেরে রাস্তায় বার করে দেওয়া হয়। সৈন্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে অনেকে মারা যান।
জিউ সম্প্রদায়ের ইতিহাসবিদ ফ্লেভিয়াস জোসেফাস তাঁর লেখা ‘ওয়ার অব দ্য জিউস’ বইতে এই ঘটনার উল্লেখ করেছেন।
কোনও কোনও রোমান ইতিহাসবিদের মতে, ফ্লেভিয়াস যে সময়ের বিবৃতি দিয়েছেন তার প্রায় হাজার বছর পর আনুমানিক ৭৫ থেকে ৮০ অব্দের মধ্যে বইটি লিখেছেন। তাই এই ঘটনা কতটা সত্য, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনকের। এমনকি ঠিক কোন সময়ে বা কোন সম্রাটের আমলে এই ঘটনা ঘটেছিল তারও সঠিক বিবরণ নেই ফ্লেভিয়াসের লেখায়।
এমন ঘটনা ঘটলেও পাঠকের বিনোদনের জন্য কিছু ভুল তথ্যও দিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা ইতিহাসবিদদের।
এই সংঘর্ষের ঘটনা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফ্লেভিয়াস জানিয়েছেন, রাজ্যের সকলে অনুষ্ঠানে আনন্দ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে দিন এত লোক প্রাণ হারিয়েছিলেন যে সেই দিন রাজ্যবাসী আনন্দ করার পরিবর্তে শোক পালন করেছিলেন।