Black Monday 2.0

৩৮ বছর আগে রক্তস্নান করেছিল আমেরিকার শেয়ার বাজার, ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে ফিরবে ‘কালো সোমবার’?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্কনীতির জেরে রক্তাক্ত ওয়াল স্ট্রিট। ৩৮ বছর আগের ‘কালো সোমবার’-এর স্মৃতি ফিরতে পারে বলে সতর্ক করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৫৫
০১ ১৮
Representative Picture

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে ওয়াল স্ট্রিটে হাহাকার। খাদে নেমেছে আমেরিকার শেয়ার সূচক। রাতারাতি কয়েক কোটি ডলার উবে যাওয়ায় মাথায় হাত লগ্নিকারীদের। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। প্রায় চার দশক আগে স্টকের সূচকের রেকর্ড পতনের জেরে অর্থনীতিকে ‘বেসামাল’ হতে দেখেছে আমেরিকাবাসী।

০২ ১৮
Representative Picture

১৯৮৭ সালের ১৯ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের ইতিহাসে দিনটি ‘কালো সোমবার’ (ব্ল্যাক মানডে) হিসাবে পরিচিত। ৩৮ বছর আগে ওই তারিখে এক দিনে ২২.৬ শতাংশ পড়ে যায় ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ। চলতি বছরে ওয়াল স্ট্রিট একই রকমের রক্তপাত দেখবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ। আর এর জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেই দুষছেন তাঁরা।

০৩ ১৮
Donald Trump

গত ২ এপ্রিল রাজধানী ওয়াশিংটনের ঐতিহ্যবাহী ‘শ্বেত প্রাসাদ’-এ (পড়ুন হোয়াইট হাউস) দাঁড়িয়ে পারস্পরিক শুল্কনীতির কথা ঘোষণা করেন বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প। ৯ তারিখ থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর করছে তাঁর প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিক ভাবে নতুন শুল্কনীতি চালু করার আগেই আটলান্টিকের পারে হু-হু করে নামতে থাকে শেয়ার সূচক।

Advertisement
০৪ ১৮
Representative Picture

বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি মুখ খোলেন ওয়াশিংটনের জনপ্রিয় শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ জিম ক্র্যামার। ৬ এপ্রিল আমেরিকান টিভিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সেখানে ক্র্যামার বলেন, পারস্পরিক শুল্কনীতি চালু হলে আর এক বার ১৯৮৭ সালের রক্তক্ষরণ প্রত্যক্ষ করবে ওয়াল স্ট্রিট। ট্রাম্পের শুল্কনীতিকে ‘প্রতিশোধমূলক’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

০৫ ১৮
Representative Picture

শেয়ার বাজারের রক্তপাত এড়াতে ‘ম্যাড মানি’ অনুষ্ঠানে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ক্র্যামার। অবিলম্বে নিয়ম মেনে চলা দেশগুলির সঙ্গে ট্রাম্পকে যোগাযোগের অনুরোধ করেছেন তিনি। পাশাপাশি, ১৯৮৭ সালের ‘কালো সোমবার’-এর কারণ ব্যাখ্যা করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।

Advertisement
০৬ ১৮
Representative Picture

‘কালো সোমবার’-এ আমেরিকার শেয়ার সূচকের মেগা পতনের প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। এর ফলে বিশ্বব্যাপী স্টকের বাজারে আসে মন্দা। ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের আর একটি শেয়ার সূচক এস অ্যান্ড পি ৫০০ কমেছিল প্রায় ৩০ শতাংশ।

০৭ ১৮
Representative Picture

অক্টোবরে শুরু হয়ে ১৯৮৭ সালের নভেম্বরের গোড়া পর্যন্ত ‘কালো সোমবার’-এর প্রভাব অব্যাহত ছিল। ফলে বিপুল লোকসানের মুখে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের লগ্নিকারীরা। ওই সময়ে অধিকাংশ স্টকের দরে ২০ শতাংশ বা তার বেশি পতন দেখা গিয়েছিল।

Advertisement
০৮ ১৮
Representative Picture

৩৮ বছর আগে ওয়াল স্ট্রিট রক্তাক্ত হওয়ার নেপথ্যে একাধিক কারণ ছিল। প্রথমত, ১৯৮২ সাল থেকে আমেরিকায় স্টকের দাম অস্বাভাবিক গতিতে বৃদ্ধি পায়। পাঁচ বছরের মধ্যে অধিকাংশ শেয়ারের দর তিন গুণ বেড়েছিল। বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ তুলে নিলে বাজার আবার নামতে শুরু করে।

০৯ ১৮
US Flag

দ্বিতীয়ত, ১৯৮৭ সালে প্রথম বার কম্পিউটারে ওয়াল স্ট্রিটে শুরু হয় লেনদেন। ওই সময়ে বিষয়টি প্রাথমিক অবস্থায় ছিল। ফলে লগ্নিকারী থেকে শিল্প সংস্থা, অনেকেই বিষয়টি বুঝতে পারেননি। এর প্রভাব স্টকের সূচকের উপর পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি বেশি করেছিলেন।

১০ ১৮
Representative Picture

‘কালো সোমবার’-এর ঠিক তিন দিন আগে (পড়ুন ১৯৮৭ সালের ১৬ অক্টোবর) স্টক অপশন, স্টক ইনডেক্স ফিউচার এবং স্টক ইনডেক্স অপশন চুক্তির একসঙ্গে মেয়াদ শেষ হওয়ায় সমস্যা বেড়েছিল। একে সম্মিলিত ভাবে ‘ট্রিপল উইচিং’ বলা হয়। ফলে ১৬ তারিখ শেষ এক ঘণ্টায় মারাত্মক অস্থির হয়ে পড়ে বাজার। আরও বড় ঝড় যে উঠতে চলেছে, তা তখনই বোঝা গিয়েছিল।

১১ ১৮
Representative Picture

চলতি বছরের ৪ এপ্রিল সবচেয়ে খারাপ ট্রেডিং সেশনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে মার্কিন শেয়ার বাজার। ওই দিন প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ নেমে যায় ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ়। কোভিড অতিমারির পর আর কখনও এতটা রক্তাক্ত হয়েনি ওয়াল স্ট্রিট। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার থেকে উবে গিয়েছে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলার।

১২ ১৮
Representative Picture

এই পরিস্থিতিতে ক্র্যামারের ‘কালো সোমবার’ ২.০-র সতর্কবার্তাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন দুনিয়ার তাবড় আর্থিক বিশ্লেষকেরা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রেসিডেন্ট যদি অবস্থান বদল না করেন, তা হলে আমাদের আরও খারাপ দিন দেখতে হবে। নিয়ম মেনে চলা যে সংস্থাগুলির লোকসান হচ্ছে, তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে ‘কালো সোমবার’ আর বেশি দূরে নেই।’’

১৩ ১৮
Representative Picture

ক্র্যামারের সাক্ষাৎকার দেওয়ার দিনে (পড়ুন ৬ এপ্রিল) ডাও জোন্স ১,৪০৫ পয়েন্ট নেমে যায়। এস অ্যান্ড পি ৫০০ ফিউচার ৪.৩ শতাংশ এবং ন্যাসড্যাক-১০০ ফিউচার ৫.৪ শতাংশ কমেছে। এগুলি সবই সম্ভাব্য ‘কালো সোমবার’-এর ইঙ্গিত বহন করছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।

১৪ ১৮
Representative Picture

অন্য দিকে ওয়াল স্ট্রিট রক্তাক্ত হওয়ার প্রভাব এশিয়া-সহ ভারতের বাজারে মারাত্মক ভাবে পড়েছে। ৭ এপ্রিল সেনসেক্সে ২,২০০ পয়েন্টের বেশি পতন দেখা গিয়েছে। নিফটি-৫০ নেমেছে ৭৪৩ পয়েন্ট। আগামী কয়েক দিনে এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

১৫ ১৮
Representative Picture

ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আমেরিকার বাসিন্দারা। কিন্তু নিজের অবস্থান বদলাতে নারাজ বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘ওষুধে কাজ দিচ্ছে।’’

১৬ ১৮
US Statue of Liberty

অন্য দিকে শুল্ক নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ইতিমধ্যেই দর কষাকষিতে নেমে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক কাউন্সিলের অধিকর্তা কেভিন হ্যাসেট জানিয়েছেন, ৫০টিরও বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশও।

১৭ ১৮
Narendra Modi & Donald Trump

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির পাল্টা উচ্চ হারে আমদানি করা মার্কিন পণ্যে কর বসিয়েছে চিন-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনই সেই রাস্তায় হাঁটছে না ভারত। এ ব্যাপারে দু’পক্ষের আলোচনা চলছে।

১৮ ১৮
Representative Picture

সরকার সূত্রে খবর, বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলতে চাইছে নয়াদিল্লি। এ ব্যাপারে পড়শি চিন, ভিয়েতনাম কিংবা ইন্দোনেশিয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি