Trump’s sanction Romance with China

লাস্যময়ী চিনাদের সঙ্গে সঙ্গম বা প্রেম নয়! ধরা পড়লে যাবে চাকরি, সরকারি কর্মীদের ফরমান ট্রাম্পের

চিনে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের জন্য এ বার কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ড্রাগনভূমির কারও সঙ্গে প্রেম বা সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারবেন না তাঁরা। কিন্তু কেন এই ফরমান?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫ ১০:২৮
০১ ১৮
Donald Trump

‘চালবাজ’ চিনা নাগরিকদের সঙ্গে প্রেম বা সঙ্গম নয়! মার্কিন সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই মর্মে কড়া আদেশ জারি করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন ও বেজিঙের মধ্যে চলা শুল্কযুদ্ধের মধ্যে তাঁর এ-হেন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বৈরিতা বৃদ্ধি করবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ।

০২ ১৮
Donald Trump

চলতি বছরের জানুয়ারিতে চিন ত্যাগ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্নস। সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি দফতর ছাড়ার মুখে এই কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে কাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে, তা স্পষ্ট করেছে আটলান্টিক-পারের ‘সুপার পাওয়ার’।

০৩ ১৮
Representative Picture

ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ড্রাগনভূমিতে কর্মরত আমেরিকার সমস্ত সরকারি কর্মচারীকে সংশ্লিষ্ট নির্দেশ মানতে হবে। শুধু তা-ই নয়, সেখানকার কূটনীতিক, তাঁদের পরিবারের সদস্যেরাও চিনা নাগরিকদের সঙ্গে কোনও রকমের প্রেম বা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারবেন না।

Advertisement
০৪ ১৮
Representative Picture

প্রাথমিক ভাবে বেজিঙের মার্কিন দূতাবাসের জন্য এই কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওয়াশিংটন। পরে চিনের গুয়াংজ়ু, সাংহাই, শেনিয়াং এবং উহানের দূতাবাসেও সংশ্লিষ্ট নিয়ম জারি করা হয় বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, এর আওতাভুক্ত হয়েছেন হংকঙে কর্মরত মার্কিন নাগরিকেরাও।

০৫ ১৮
Representative Picture

তবে কিছু ক্ষেত্রে এই কড়া নির্দেশিকা থেকে ছাড় দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। যে সমস্ত আমেরিকাবাসী চিনের বাইরে অন্য দেশে কর্মরত রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। আবার যে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে আগে থেকেই কোনও ড্রাগনবাসীর সঙ্গম বা প্রণয়ের সম্পর্ক রয়েছে, তাঁরাও এর থেকে ছাড় পাবেন বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement
০৬ ১৮
Representative Picture

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা নতুন নির্দেশিকা অমান্য করলে মার্কিন নাগরিকদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। সে ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের নির্দেশে চাকরি খোয়াতে হতে পারে তাঁদের। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনায় অপরাধের গুরুত্ব বুঝে কাউকে বরখাস্ত বা পদত্যাগে বাধ্য করবে আমেরিকা।

০৭ ১৮
Representative Picture

পদত্যাগের পর মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত চিন ত্যাগের নির্দেশ দিতে পারে মার্কিন প্রশাসন। দেশে ফিরলে তাঁদের গ্রেফতারির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা। অর্থাৎ নিয়ম ভাঙলে বাকি জীবন জেলে কাটাতে হতে পারে চিনে কর্মরত আমেরিকাবাসীদের।

Advertisement
০৮ ১৮
Representative Picture

উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি জারি করার আগে থেকেই এই ধরনের কঠোর নিয়ম মেনে চলছে বেশ কিছু মার্কিন সংস্থা। এর পোশাকি নাম ‘নন-ফ্রেটারনাইজ়েশন পলিসি’ বা ভ্রাতৃত্বহীন নীতি। তবে বিদেশে কর্মরত অবস্থায় আমেরিকার কূটনীতিকদের মধ্যে প্রেম পড়া, ডেটে যাওয়া, এমনকি বিয়ে করার উদাহরণ ভূরি ভূরি।

০৯ ১৮
US China Tariff War (Representative Picture )

চিনে মোতায়েন মার্কিন নাগরিকদের জন্য এ-হেন কড়া নির্দেশিকা অবশ্য প্রকাশ্যে জারি করেনি ওয়াশিংটন। তবে কর্মচারীদের আলাদা করে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, সামরিক শক্তি এবং বিশ্বব্যাপী প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দেশের বিবাদ চরমে উঠেছে।

১০ ১৮
Joe Biden

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথম ব্যক্তি হিসাবে এমন পদক্ষেপ করলেন, তা কিন্তু নয়। পূর্বসূরি জো বাইডেনও একই রাস্তায় হেঁটেছিলেন। তাঁর আমলে গত বছরের গ্রীষ্মকালে এ ব্যাপারে সীমিত পরিসরে সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন প্রশাসন। ফলে চিনে কর্মরত মার্কিন দূতাবাস ও পাঁচটি দূতাবাসের রক্ষী ও সহায়তা কর্মীদের ড্রাগনবাসীর সঙ্গে প্রেম ও যৌন সম্পর্কে জারি হয় নিষেধাজ্ঞা।

১১ ১৮
Donald Trump

তবে বাইডেনের সময়ে চিনা কর্মরত কূটনীতিকদের এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। দূতাবাসের অন্য কর্মীরাও এর আওতায় ছিলেন না। নিষেধাজ্ঞা ছিল শুধু মাত্র দূতাবাসের রক্ষী ও সহায়তা কর্মীদের উপর। গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেওয়ার পর এ ব্যাপারে আরও কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, তাঁর নীতি কার্যকর হতেই বিষয়টি নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার চালান বেজিঙের তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নস।

১২ ১৮
Representative Picture

গত শতাব্দীর ৬০ এবং ৭০-এর দশকে চলা ঠান্ডা যুদ্ধের সময়ে আমেরিকার কূটনীতিকদের উপর মারাত্মক ভাবে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ওঠে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ান (বর্তমান রাশিয়া) এবং চিনের বিরুদ্ধে। এর সহজতম উপায়টি ছিল তাঁদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ওয়াশিংটনের যাবতীয় গোপন পরিকল্পনা হস্তগত করা।

১৩ ১৮
Representative Picture

ঠান্ডা যুদ্ধের ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করলে দেখা যাবে, মার্কিন কূটনীতিকদের হাতের মুঠোয় নিতে সোভিয়েত গুপ্তচর সংস্থা কেজিবির ছিল লাস্যময়ীদের বিশেষ একটি বাহিনী। ব্যাপার আন্দাজ করতে অবশ্য আমেরিকার গোয়েন্দাদের বেশি সময় লাগেনি। ফলে ওই সময়ে একরকম বাধ্য হয়ে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওয়াশিংটন।

১৪ ১৮
Donald Trump

কিন্তু, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ান ভেঙে গেলে ওই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে মার্কিন প্রশাসন। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ওয়াশিংটনের অনুমান বর্তমানে তাঁদের কূটনীতিক এবং অন্য কর্মীদের উপর ব্যাপক ভাবে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করেছে চিন। আর তাই কালবিলম্ব না করে পুরনো নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়েছেন ট্রাম্প।

১৫ ১৮
Representative Picture

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিনে কর্মরত কর্মীদের গোয়েন্দা তথ্য খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে আমেরিকার প্রশাসন। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সি’ বা সিআইএর দাবি, কূটনীতিকদের প্রলুব্ধ করতে লাস্যময়ী তরুণীদের বার বার দূতাবাসে পাঠানোর প্রমাণ পেয়েছেন তাঁরা।

১৬ ১৮
Representative Picture

ওয়াশিংটনের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ‘দ্য জেমসটাউন ফাউন্ডেশন’-এর সভাপতি পিটার ম্যাটিস জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে এই ধরনের অন্তত দু’টি ঘটনা ঘটে। দু’বারই অবশ্য মার্কিন কূটনীতিক তরুণী চিনা গুপ্তচরের ফাঁদে পা দেননি। ফলে বিপদ এড়ানো গিয়েছে।

১৭ ১৮
Representative Picture

ম্যাটিসের কথায়, ‘‘গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে চিন একাধিক পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। এ ব্যাপারে বলপ্রয়োগ করতেও পিছপা নয় তারা। ফলে মার্কিন কূটনীতিকদের জটিল সমস্যায় পড়া আশ্চর্যের নয়। উপরন্তু তাঁদের সঙ্গে ডেটিং বা সঙ্গম সম্পর্কে থাকা নাগরিকদের থেকে কথা বার করতে শারীরিক নির্যাতনের পথে হাঁটতে পারে বেজিং।’’

১৮ ১৮
Donald Trump

ট্রাম্প কুর্সিতে বসা ইস্তক ওয়াশিংটন ও বেজিঙের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে শুল্কযুদ্ধ। আমদানি করা চিনা পণ্যে ৩৪ শতাংশ কর চাপিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর আরও ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে ড্রাগন-সরকার। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন কূটনীতিকদের উপর এই ধরনের কড়া নিষেধাজ্ঞাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি