Trump Targets Chinese Military

আমেরিকার শুল্ক-বাণে এফোঁড়-ওফোঁড় লালফৌজের বুক! আর্থিক অস্ত্রে পিএলএ বধের খেলায় মত্ত ট্রাম্প?

চিনা পণ্যে এ বার ১২৫ শতাংশ শুল্ক চাপালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর্থিক অবরোধ গড়ে তুলে বেজিঙের লালফৌজকে ধ্বংস করতে চাইছেন তিনি? তুঙ্গে জল্পনা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:১৮
০১ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

শুল্কযুদ্ধে চিন বনাম আমেরিকা। ড্রাগন-পণ্যে আরও কর চাপাল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তাতেও মাথা নত না করে ‘শেষ দেখে ছাড়ার’ হুমকি দিয়েছে বেজিং। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, শুল্ক-বাণের মাধ্যমে চিনের লালফৌজের কোমর ভাঙার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে পরিস্থিতি যে ক্রমশ জটিল হচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।

০২ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

চলতি বছরের ৮ এপ্রিল রাজধানী ওয়াশিংটনের ঐতিহ্যশালী ‘শ্বেত প্রাসাদ’-এ (হোয়াইট হাউস) ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এর পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে চিনের প্রতিরক্ষা বাজেট নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। সেখানে ফৌজ শক্তিতে বেজিঙের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে তীব্র আপত্তি তোলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

০৩ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

ট্রাম্পের যুক্তি, চিন-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বিপুল ঘাটতির মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ওয়াশিংটন। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য বিক্রি করে মুনাফা লুটে সেই অর্থে শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী তৈরি করেছে ড্রাগন। আর তাই বেজিঙের সামনে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের দরজা পুরোপুরি বন্ধ করতে চাইছেন তিনি।

Advertisement
০৪ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর পাশে বসে ট্রাম্প বলেন, ‘‘এখানে ব্যবসা করে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০ হাজার কোটি ডলার নিজের দেশে নিয়ে যায় বেজিং। সেই অর্থ ফৌজের জন্য খরচ করে ড্রাগন। আমরা এটা কখনই হতে দিতে পারি না। চিন সেনাবাহিনীর জন্য আমাদের টাকা খরচ করুক, এটা একেবারেই কাম্য নয়।’’

০৫ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

এর পরই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ড্রাগনকে ফের শুল্ক-হুমকি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। শুধু তা-ই নয়, চিনা প্রেসিডেন্ট তথা চেয়ারম্যান শি জিনপিঙের নাম করে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় তাঁকে। ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমেরিকার অর্থ ফৌজের জন্য খরচ করা বন্ধ করুক বেজিং। প্রেসিডেন্ট শিকে সেই কথা বলেছি। চিন অবাধ্যতা করলে অন্য রাস্তা আছে।’’

Advertisement
০৬ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের দাবি, স্থল, জল এবং বায়ুসেনার নিরিখে বর্তমানে আমেরিকাকে সমানে সমানে টক্কর দিচ্ছে ড্রাগন। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে আমেরিকা। অন্য দিকে সম সংখ্যক নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া এবং চিন।

০৭ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফৌজি শক্তির নিরিখে বিশ্বের ১৫৪টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেন ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’-এর সমীক্ষকেরা। সেখান বলা হয়েছে, আমেরিকার হাতে রয়েছে ২১ লক্ষ ২৭ হাজার ৫০০ সৈনিকের এক বিশাল বাহিনী। দেশের বাইরে অন্তত ১০০টি সেনাঘাঁটি রয়েছে ওয়াশিংটনের। সেখান থেকে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় আক্রমণ শানানোর ক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

Advertisement
০৮ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

চলতি আর্থিক বছরে (পড়ুন ২০২৫-’২৬) প্রতিরক্ষা খাতে ১.৩৯ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে মার্কিন সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরমাণু অস্ত্রাগার। ওয়াশিংটনের আণবিক মারণাস্ত্রের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের বেশি। এ ব্যাপারে প্রথম স্থানে রয়েছে মস্কো। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) পরমাণু হাতিয়ারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি বলে মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা।

০৯ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

অন্য দিকে বেজিঙের ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’ বা পিএলএর মোট সৈন্যসংখ্যা ৩১ লক্ষ ৭০ হাজার বলে জানিয়েছে ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’। শুধু তা-ই নয়, রণতরীর সংখ্যার নিরিখে আমেরিকাকে ছাপিয়ে গিয়েছে ড্রাগনভূমি। দুনিয়ার বৃহত্তম নৌবহরের অধিকারী প্রেসিডেন্ট শি।

১০ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

বিশ্লেষকদের দাবি, ২০৩০ সালের মধ্যে মার্কিন বায়ুসেনাকে ছাপিয়ে যাবে পিএলএ বিমানবাহিনী। গত বছরের ডিসেম্বরে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান উড়িয়ে গোটা দুনিয়াকে চমকে দেয় ড্রাগন। অন্য দিকে, এ ব্যাপারে পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। সম্প্রতি ষষ্ঠ প্রজন্মের লড়াকু জেট নির্মাণের বরাত বিমান নির্মাণকারী বিখ্যাত সংস্থা বোয়িংকে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

১১ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

আমেরিকার মতোই আফ্রিকা, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকায় একাধিক সেনাঘাঁটি রয়েছে চিনা লালফৌজের। যুদ্ধের মোড় ঘোরাতে বেজিঙের আছে শক্তিশালী ড্রোন এবং রকেট বাহিনী। ড্রাগনের পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট শি এই অঙ্ক আরও বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কপালে জমেছে ঘাম।

১২ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

সংখ্যার দিক থেকে যুদ্ধজাহাজ বেশি থাকায় ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় দাদাগিরির অভিযোগ রয়েছে চিনের বিরুদ্ধে। সমুদ্র বাণিজ্যের জন্য এই এলাকা আমেরিকার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্লেষকদের অনুমান, এই কারণেই বেজিঙের ‘গুমর’ ভাঙতে চাইছেন ট্রাম্প। সেই কাজে শুল্ককে হাতিয়ার করেছেন তিনি।

১৩ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

এ বছরের ৯ এপ্রিল কিছু চিনা পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করে ওয়াশিংটন। ফলে সব মিলিয়ে বেজিং থেকে আমদানি করা সামগ্রীর উপর ১২৫ শতাংশ করে কর নেবে ট্রাম্প প্রশাসন। গত ২ এপ্রিল নতুন পারস্পরিক শুল্কনীতি ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। সেখানে ড্রাগন পণ্যে করের পরিমাণ ৩৪ শতাংশ রেখেছিলেন তিনি।

১৪ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

কিন্তু ট্রাম্পের পারস্পরিক শুল্কনীতি মেনে নিতে পারেনি বেজিং। পাল্টা মার্কিন পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপায় চিন। এতে ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ১২৫ শতাংশ কর বসানোর হুমকি দেন। শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য প্রেসিডেন্ট শি-কে ২৪ ঘণ্টা সময় দেন তিনি। বাস্তবে সেই রাস্তাতেই হেঁটেছে তাঁর প্রশাসন।

১৫ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

শুল্কের ব্যাপারে সমাধানসূত্র বার করতে মার্কিন প্রেসিডেন্টর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিল চিন। কিন্তু, সেই আলোচনা যে সম্ভব নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ট্রাম্প। পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। ব্ল্যাকমেল কখনওই বরদাস্ত করবে না বেজিং।’’

১৬ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

এর পাশাপাশি আমেরিকার ছবি দিয়ে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে চিন। সেখানে প্যালেস্টাইনের গাজ়ায় গণহত্যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া শরণার্থী ইস্যুতে রয়েছে ট্রাম্পের নীতির কড়া সমালোচনা। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের অনেককেই ইতিমধ্যে দেশছাড়া করেছেন বর্ষীয়ান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

১৭ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

কুর্সিতে বসা ইস্তক বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। আর তাই সারা দুনিয়ায় প্রচারিত ভিডিয়োয় যুক্তরাষ্ট্রকে সাম্রাজ্যবাদী বলতে ছাড়েনি বেজিং। এই কায়দায় আমেরিকা-বিরোধীদের অভিমুখ নিজেদের দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে চিন, মত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের।

১৮ ১৮
Donald Trump wants to destroy Chinese Military through huge tariff on Beijing

তবে বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, শুল্কযুদ্ধের মাধ্যমে সাময়িক ভাবে চিনকে বিপাকে ফেললেও পিএলকে পুরোপুরি ধ্বংস করা ট্রাম্পের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, গত কয়েক বছরে রাশিয়ার সঙ্গে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে শি প্রশাসনের। পাশাপাশি, ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার বাজারে বাণিজ্য থেকে বেজিঙের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ নেহাত কম নয়।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি