China 6th Generation Fighter Jet

লেজকাটা লড়াকু বিমানের শক্তিতে চক্ষু চড়কগাছ! কিম্ভূত হাতিয়ারে চিন টপকাল আমেরিকাকেও

ষষ্ঠ প্রজন্মের লেজবিহীন কিম্ভূত যুদ্ধবিমান প্রকাশ্যে এনে সারা দুনিয়াকে রীতিমতো চমকে দিয়েছে চিন। বেজিংয়ের শক্তিবৃদ্ধিতে ভুরু কুঁচকেছে আমেরিকা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:০০
০১ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

লেজের লেশমাত্র নেই। তার গর্জনে কান পাতা দায়! আকাশ চিরে এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত কিম্ভূত দেখতে যুদ্ধবিমান উড়িয়ে এ বার ক্ষমতা দেখাল ড্রাগন। সেই দৃশ্য সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই প্রমাদ গুনেছে আটলান্টিকের পারের ‘সুপার পাওয়ার’। কপালে ঘাম জমেছে নয়াদিল্লিরও।

০২ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

চলতি বছরের ২৬ ডিসেম্বর। যিশু দিবসের ঠিক পরের দিনই চিনা চমকে রীতিমতো থ গোটা বিশ্ব! ওই দিন প্রথম বার ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানকে প্রকাশ্যে এনে পেশি ফুলিয়েছে বেজিং। লালফৌজের বায়ুবীরদের অস্ত্রাগারে শামিল হতে চলা নতুন ওই হাতিয়ারের পোশাকি নাম ‘জে-৩৬’।

০৩ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন ধরেই ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনা করছে আমেরিকা। কিন্তু, এখনও তাতে সাফল্য পায়নি যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে বেজিংয়ের কাছে কিস্তিমাত হওয়ায় ওয়াশিংটন যে মুখ ব্যাজার করবে, তা বলাই বাহুল্য। নতুন প্রজন্মের অত্যাধুনিক লড়াকু বিমান হাতে পাওয়ায় যুদ্ধের ময়দানে ড্রাগন বেশ কিছুটা এগিয়ে গেল বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement
০৪ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

পাশাপাশি, চিনের ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করে ফেলা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার ভারসাম্য নষ্ট করবে বলে অনুমান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের একাংশের। ওই জায়গার ক্ষমতার ভরকেন্দ্র বেজিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। ড্রাগনল্যান্ডের প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন মাও জে দং। সেই মাওয়ের জন্মদিনেই নতুন প্রজন্মের অত্যাধুনিক বিমানটি প্রকাশ্যে আনলেন তাঁর উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট তথা চেয়ারম্যান শি জিনপিং।

০৫ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

এর আগে ‘জে-৩৫’ এবং ‘জে-৩৫এ’ নামের পঞ্চম প্রজন্মের দু’টি ফাইটার জেট তৈরি করে চিন। কিন্তু তখন ড্রাগনকে বিশেষ কেউ পাত্তা দেয়নি। কারণ বিশেষজ্ঞদের প্রায় সকলেরই বক্তব্য ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সংস্থা লকহিড মার্টিনের তৈরি ‘এফ-৩৫’ যুদ্ধবিমানটির নকল করে ‘জে-৩৫’ জেট নির্মাণ করেছে বেজিং। শুধু তা-ই নয়, ড্রাগন নির্মিত বিমানের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা।

Advertisement
০৬ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

কিন্তু বেজিং ‘জে-৩৬’ যুদ্ধবিমানকে প্রকাশ্যে আনার পর পশ্চিমি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মুখে আর কথাটি সরছে না। আমেরিকার কাছে ষষ্ঠ প্রজন্মের কোনও হামলাকারী বিমান নেই। ফলে ড্রাগন কারও নকল করেছে, এ কথা মোটেই বলা যাবে না। উল্টে মাঝ আকাশের ‘ডগফাইটে’ যুক্তরাষ্ট্রের জেটগুলিকে চিনা যুদ্ধবিমানটি মাত দিতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।

০৭ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

‘ইউরেশিয়ান টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে ষষ্ঠ প্রজন্মের লড়াকু বিমান তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল বেজিং। মাঝে ২০১৯ সালে এই প্রকল্পে আরও গতি আনার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট শি। অবশেষে ২০২৪ সালের বিদায়বেলায় ক্ষমতা প্রদর্শন করলেন তিনি।

Advertisement
০৮ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

চেয়ারম্যান মাওয়ের জন্মদিনে সিচুয়ান প্রদেশের চেংডুতে ‘ঝুহাই এয়ার শো’র আয়োজন করে চিনের পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি বা পিএলএর বিমানবাহিনী। সেখানেই প্রথম বার আকাশে উড়েছে ষষ্ঠ প্রজন্মের ‘জে-৩৬’। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত লড়াকু বিমানে লেজের মতো একটি অংশ থাকে। ‘জে-৩৬’ জেটে সেটি রাখেননি বেজিংয়ের প্রতিরক্ষা গবেষকেরা।

০৯ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

সূত্রের খবর, নতুন প্রজন্মের চিনা যুদ্ধবিমানে রয়েছে তিনটি ইঞ্জিন। ফলে পঞ্চম প্রজন্মের লড়াকু উড়ানগুলির থেকে এর গতিবেশ অনেকটাই বেশি। ‘জে-৩৬’ জেটে রয়েছে টার্বোফ্যান ইঞ্জিন। লেজের মতো অংশ না-থাকায় কোনও ভাবেই একে চিহ্নিত করতে পারবে না রাডার। অর্থাৎ যুদ্ধবিমানের ‘স্টেলথ’ শক্তি বাড়িয়েছে বেজিং।

১০ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

এ ছাড়া, এক বার জ্বালানি ভরে দীর্ঘ সময় আকাশে থাকতে পারবে ‘জে-৩৬’। পঞ্চম প্রজন্মের লড়াকু বিমানগুলির তুলনায় এর হাতিয়ার বহনক্ষমতাও বেশি। আবার প্রয়োজনে মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরতে পারবেন ‘জে-৩৬’ জেটের পাইলট। শূন্যে কসরত দেখানোর ক্ষেত্রেও এর দক্ষতা আমেরিকা বা রাশিয়ার অতি শক্তিশালী যুদ্ধবিমানগুলির থেকে কোনও অংশ কম নয়।

১১ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

‘জে-৩৬’ লড়াকু বিমানের নির্মাণকারী সংস্থা হল ‘চেংডু এয়ারক্রাফ্ট ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ’। এটি চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। ড্রাগনের এ-হেন শক্তিবৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্র যে হাত গুটিয়ে বসে আছে, তা ভাবা ভুল। ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির কাছাকাছি পৌছে গিয়েছে লকহিড মার্টিন। প্রকল্পটির নাম ‘নেকক্স জেনারেশন এয়ার ডমিন্যান্স’ (এনজিএডি) রেখেছে আমেরিকা।

১২ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

সূত্রের খবর, ষষ্ঠ প্রজন্মের ওই বিমানে থাকবে না লেজের মতো কোনও অংশ। তবে সেখানে মোট ক’টি ইঞ্জিন ব্যবহৃত হবে, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। ২০১৪ সাল থেকে চলা ওই প্রকল্পে গতি আনতে এ বার অতিরিক্ত ডলার বরাদ্দ করতে পারে ওয়াশিংটন।

১৩ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

চিন ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করলেও আমেরিকার তুলনায় বেজিংকে এগিয়ে রাখতে নারাজ পশ্চিমি প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের যুক্তি, ড্রাগনের তৈরি কোনও হাতিয়ার এখনও পর্যন্ত যুদ্ধের ময়দানে দুর্দান্ত সাফল্য দেখিয়েছে, এমনটা নয়। ফলে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ‘এফ-২২’ বা ‘এফ-৩৫’ রাতারাতি রং পাল্টে দিয়েছে পশ্চিম এশিয়া-সহ একাধিক যুদ্ধের।

১৪ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

তা ছাড়া যে কোনও প্রযুক্তি দ্রুত নকল করার ক্ষেত্রে চিনের যথেষ্ট দুর্নাম রয়েছে। ষষ্ঠ প্রজন্মের ‘জে-৩৬’ যুদ্ধবিমান নির্মাণের ক্ষেত্রে বেজিং রাশিয়ার প্রযুক্তি চুরি করেছে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকদের একাংশ। মস্কোর তৈরি ‘এসইউ-২৭’ লড়াকু বিমানের মতো হুবহু দেখতে ‘জে-২০’ নামের একটি বিমান রয়েছে লালফৌজের বায়ুবীরদের কাছে। এর সংখ্যা ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রেসিডেন্ট শি দেড় হাজার করতে চলেছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে মিলেছে খবর।

১৫ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

দ্বিতীয়ত, যুদ্ধবিমান তৈরির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার উপর চিন পুরোপুরি নির্ভরশীল। সেখানে আমেরিকার এই ক্ষেত্র পুরোপুরি বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে রয়েছে। অ্যারো-ইঞ্জিনের নিরিখে বেজিংয়ের থেকে ওয়াশিংটন অনেকটা এগিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

১৬ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

গত ১৮ ডিসেম্বর ‘মিলিটারি অ্যান্ড সিকিউরিটি ডেভেলপমেন্টস ইনভলভিং দ্য পিপল্‌স রিপাবলিক অফ চায়না’ শীর্ষক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকার প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন। ‘ইউরেশিয়ান টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘আকাশপথে আক্রমণের শক্তি ক্রমাগত বৃদ্ধি করে চলেছে চিন। বর্তমানে বেজিংয়ের হাতে যে সমস্ত ড্রোন রয়েছে, সেগুলিকে যুক্তরাষ্ট্রের মানববিহীন উড়ুক্কু যানের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।’’

১৭ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

চিন ষষ্ঠ প্রজন্মের লড়াকু বিমান বানিয়ে ফেলায় চিন্তা বেড়েছে ভারতেরও। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরেই যুদ্ধবিমানের স্বল্পতায় ভুগছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত আমেরিকা বা রাশিয়ার থেকে পঞ্চম প্রজন্মের লড়াকু বিমান কিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে নয়াদিল্লির। প্রাথমিক ভাবে ১১৪টি যুদ্ধবিমান নরেন্দ্র মোদী সরকার কিনবে বলে জানা গিয়েছে।

১৮ ১৮
Chinese 6th generation fighter jet J-36 is a big concern for US and India

এর পাশাপাশি, দেশীয় প্রযুক্তিতে উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান তৈরির দিকেও নজর দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কিছু দিনের মধ্যেই পরবর্তী প্রজন্মের ‘তেজস’ ভারতীয় বায়ুসেনা হাতে পাবে বলে খবর মিলেছে। আসন্ন বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। চিনের শক্তি বৃদ্ধিকেই এর মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি