আগামী শনিবার অযোধ্যার নতুন বিমানবন্দরের উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের আগে নতুন করে সেজে উঠছে অযোধ্যা। নতুন করে তৈরি করা হয়েছে রেলস্টেশন এবং বিমানবন্দর।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে প্রকাশ, নতুন করে রেলস্টেশন এবং বিমানবন্দর তৈরি করা হলেও তাতে রয়েছে রামায়ণের ছোঁয়া। বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে নতুন বিমানবন্দরের নামেও রয়েছে রামায়ণের প্রভাব।
উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় যে নতুন বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে, তার নাম রাখা হতে পারে রামায়ণের স্রষ্টা মহর্ষি বাল্মীকির নামে। বিমানবন্দরের নতুন নাম হতে পারে ‘মহর্ষি বাল্মীকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অযোধ্যাধাম’।
অযোধ্যার বিমানবন্দরটি আগে ‘মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রী রাম অযোধ্যা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ হিসাবে পরিচিত ছিল। শনিবার বিমানবন্দর উদ্বোধনের দিন থেকেই এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগোর বিমান চলাচল শুরু হবে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে দিল্লি, মুম্বই এবং আমদাবাদ থেকে পুরোদমে অযোধ্যার বিমানবন্দর পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগো বিমান সংস্থার তরফে বিমান চলাচলের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, রামমন্দিরের ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে অযোধ্যার বিমানবন্দরের অন্দরসজ্জায়। শুধুমাত্র বিমানবন্দরের ভিতরেই নয়, বিমানবন্দরের বহির্গঠনেও রয়েছে রামমন্দিরের আদলের ছোঁয়া।
রাবণ বধ করার পর অযোধ্যায় ফিরেছিলেন রাম এবং যুদ্ধজয়ের পর যে উল্লাস, যে অনুভূতি— তা যেন সকল বিমানযাত্রীরাই উপভোগ করতে পারেন সে কথা মাথায় রেখে নতুন আদলে তৈরি করা হয়েছে অযোধ্যার বিমানবন্দর।
অযোধ্যার বিমানবন্দরের মাথায় রয়েছে প্রচুর শিখর। এক একটি শিখরের উচ্চতা এক এক রকম। শিখরের উপর কারুকার্যগুলিও দেখার মতো।
অযোধ্যার বিমানবন্দরের টার্মিনালটি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যার পরতে পরতে রামায়ণ মহাকাব্যের ছোঁয়া। বিমানবন্দরের এক আধিকারিক সূত্রে খবর, কোনও যাত্রী যদি পুরো বিমানবন্দরটি হেঁটে ঘুরে দেখেন, তা হলে তিনি রামের সম্পূর্ণ জীবনকাহিনি বিমানবন্দরের দেওয়ালে চাক্ষুষ করতে পারবেন।
টার্মিনালের অন্দরসজ্জায় রামায়ণের পাশাপাশি অযোধ্যার প্রাসাদের পরিবেশও তৈরি করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে ছ’হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবন।
ব্যস্ত সময়ে অযোধ্যার বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনে অন্তত ৬০০ জন যাত্রী অপেক্ষা করতে পারবেন। সারা বছরে এর যাত্রীধারণ ক্ষমতা ১০ লক্ষেরও বেশি।
অযোধ্যা বিমানবন্দরের প্রথম পর্যায়ের নির্মাণকার্যে আনুমানিক ১,৪৫০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। সূ্ত্রের খবর, দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও একটি টার্মিনাল ভবন তৈরি করা হবে অযোধ্যা বিমানবন্দরে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে যে টার্মিনাল ভবনটি প্রায় ৫০ হাজার বর্গমিটার এলাকা নিয়ে তৈরি করা হবে, সেই টার্মিনাল ভবনে ব্যস্ত সময়ে অন্তত তিন হাজার যাত্রী থাকতে পারবেন। বছরে তার যাত্রীধারণ ক্ষমতা হবে ৬০ লক্ষ।
নতুন টার্মিনাল ভবনের রানওয়েও প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণের সময়েই রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হবে।
৩৭৫০ মিটার এলাকা জুড়ে বাড়ানো হবে নতুন টার্মিনাল ভবনের রানওয়ে। এই রানওয়ের উপর কোড ই বি-৭৭৭ এয়ারক্রাফ্ট নামতে পারবে।
রানওয়ের পাশাপাশি নতুন টার্মিনাল ভবনে থাকবে সমান্তরাল ট্যাক্সি ট্র্যাক এবং অতিরিক্ত ১৮টি এয়ারক্রাফ্ট পার্কিংয়ের সুবিধাও।
ছবি: পিটিআই এবং সংগৃহীত।