বলিউডে কান পাতলেই এখন চাপা গুঞ্জন। বিচ্ছেদ হতে চলেছে বচ্চন পরিবারে। আলাদা হতে চলেছেন অভিষেক বচ্চন এবং ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। বিভিন্ন সময়ে তাঁদের সমাজমাধ্যমের পোস্ট, আলাদা গাড়িতে যাতায়াত সেই সব জল্পনার আগুনে আরও ঘি ঢালছে। যদিও বচ্চন পরিবারেরর তরফে এখনও কেউ টুঁ শব্দটি করেননি।
২০০৭ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন অভিষেক এবং ঐশ্বর্যা। তখন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম না থাকার কারণে তারকাদের বিয়ে নিয়ে এত হইচই ছিল না। কিন্তু অভিষেক এবং ঐশ্বর্যার বিয়ের খবর এবং ছবিতে সংবাদমাধ্যমের পাতা ভরে গিয়েছিল।
ঐশ্বর্যা যখন মা হন, তখনও কম মাতামাতি হয়নি। সেই তারকা জুটিরই বিচ্ছেদের জল্পনা এখন বলিপাড়ার অলিগলিতে।
ঐশ্বর্যাকে নিয়ে অনুরাগীদের আগ্রহ বরাবরই বেশি। তা তাঁর সৌন্দর্যের কারণেই হোক বা সুঅভিনেত্রী হিসাবে পরিচিতির কারণে। দীর্ঘ সময় সিনে দুনিয়া থেকে দূরে থাকলেও তাঁকে নিয়ে চর্চা কখনও কমেনি।
ঐশ্বর্যাকে নিয়ে বর্তমানে জল্পনা তো রয়েইছে, তবে অতীতেও তাঁকে নিয়ে জল্পনার সুর এবং বিতর্কের পারদ কিছু কম চড়েনি। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক অভিনেত্রীর প্রেম এবং বিতর্ক পর্বের অধ্যায়।
ঐশ্বর্যার প্রথম প্রেমিক হিসাবে খুঁজলেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং ওয়েবসাইটে যে নামটি উঠে আসে, তা হল রাজীব মুলচন্দানি।
শোনা যায়, মডেল থাকাকালীন রাজীবের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ঐশ্বর্যা। সেই সময় তিনি অভিনেত্রী নন, মডেল হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন পণ্যের জন্য মডেলিং করার পাশাপাশি নামীদামি পোশাকশিল্পীদের জন্য র্যাম্পে হাঁটতেন ঐশ্বর্যা।
সেই সময়েই রাজীবের সঙ্গে আলাপ হয় ঐশ্বর্যার। রাজীবও পেশায় মডেল ছিলেন। শীঘ্রই দু’জন মেলামেশা শুরু করেন। কিন্তু ঐশ্বর্যা বলিউডে পা রাখার পরেই নাকি রাজীবের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে।
সেই সময় জল্পনা রটেছিল, সাফল্যের সিঁড়ি চড়তে শুরু করার পর থেকেই না কি নিজেকে রাজীবের থেকে দূরে সরিয়ে নেন অ্যাশ। পরে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
এর পর বেশ কয়েক বছর কাউকে মন দেননি ঐশ্বর্যা। এর পর ১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবির সেটে সলমন খানের সঙ্গে আলাপ হয় অভিনেত্রীর।
শোনা যায়, একে অপরের প্রেমে পড়ে যান সলমন এবং ঐশ্বর্যা। প্রেমপর্বের কারণে বলিউডের অন্যতম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন তাঁরা।
তবে শোনা যায়, সলমনের অন্য মহিলাদের সঙ্গে ওঠাবসা এবং সব বিষয়ে ছড়ি ঘোরানো না কি ঐশ্বর্যার পছন্দ ছিল না। পাশাপাশি ঐশ্বর্যার উপর সলমনের অধিকারবোধও নাকি অভিনেত্রীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল বলে শোনা যায়।
এর পরেই সলমনের জীবন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ঐশ্বর্যা। শোনা যায়, এই ছাড়াছাড়ি হওয়ার বিষয়ে মত ছিল না সলমনের। আর তাই তিনি নাকি ঐশ্বর্যা অভিনয় করছিলেন, এমন একটি ছবির সেটে গিয়ে তোলপাড় করেন।
এ-ও শোনা যায়, সলমন যে ছবির সেটে গিয়ে গন্ডগোল বাধান, সেই ছবিটি ছিল শাহরুখ অভিনীত ‘চলতে চলতে’। প্রযোজকও ছিলেন স্বয়ং কিং খান। বিরক্ত হয়ে শাহরুখ সেই সিনেমায় ঐশ্বর্যার বদলে রানি মুখোপাধ্যায়কে নিয়েছিলেন বলেও শোনা যায়।
কানাঘুষো রয়েছে, তাঁকে ছবি থেকে বাদ দেওয়ার কারণে শাহরুখের সঙ্গে ১০ বছরেরও বেশি সময় কথা বলেননি ঐশ্বর্যা। যদিও পরে তাঁদের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছিল।
এর পর সলমনের প্রতি তিতিবিরক্ত হয়ে মুখ খোলার সিদ্ধান্ত নেন ঐশ্বর্যা। দাবি করেন, সলমন তাঁদের বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারছেন না এবং তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন। সলমনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর এবং কুকথা বলার অভিযোগও করেন ঐশ্বর্যা। যদিও সলমন সেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
মনে করা হয়, সলমন-ঐশ্বর্যার সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়ে যখন, অভিনেত্রীর জীবনে বিবেক ওবেরয়ের প্রবেশ ঘটে। সেই সময় ঐশ্বর্যার প্রেমে বিবেক এমনই হাবুডুবু খাচ্ছিলেন যে, তিনি অভিনেত্রীর ৩০তম জন্মদিনে ৩০টি উপহার পাঠিয়েছিলেন।
বেশ কয়েকটি জায়গায় বিবেক এবং ঐশ্বর্যাকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। এর ফলে সলমন এবং ঐশ্বর্যার পারস্পরিক সম্পর্কের রসায়ন আরও জটিল হয়।
এর পর সাংবাদিক সম্মেলন করে বোম ফাটান বিবেক। তাঁর অভিযোগ ছিল, ঐশ্বর্যার সঙ্গে মেলামেশার জন্য সলমন তাঁকে মারার হুমকি দিচ্ছেন। সেই সব অভিযোগও অস্বীকার করেন সলমন।
তবে এত কিছুর পর বিবেকের সঙ্গেও ঐশ্বর্যার সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। সাংবাদিকদের ডেকে বৈঠক করার ‘ফল’ও তাঁকে ভুগতে হয়েছিল। কোনও পরিচালক বা প্রযোজক বিবেকের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হতেন না। গুজব ওঠে, সলমনের নাড়া কলকাঠিতেই বিবেকের কেরিয়ার ধ্বংস হয়ে যায়।
এর পর অভিষেকের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়ে যায় ঐশ্বর্যার। তবে বিতর্ক বাধে ‘ধুম-২’ ছবির একটি দৃশ্য নিয়ে।
ওই ছবিতে হৃতিক রোশন এবং ঐশ্বর্যার একটি চুম্বনের দৃশ্য ছিল। শোনা যায়, সেই দৃশ্য ভাল ভাবে নেয়নি বচ্চন পরিবার। কারণ অভিষেক এবং ঐশ্বর্যার বিয়ের প্রস্তুতি তখন তুঙ্গে ছিল। এই দৃশ্যের জন্য আইনি নোটিসও পান ঐশ্বর্যা।
এ-ও রটেছিল যে, ব্যবসায়ী অনিল অম্বানীর সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল ঐশ্বর্যার। যদিও অভিনেত্রী তা গুজব বলে উড়িয়ে দেন।
ছবি: সংগৃহীত।