ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
নাম ‘পিনাট’। যাকে বাংলায় বলে চিনেবাদাম। নাম যার, সে এক জন আদ্যোপান্ত তারকা। কিংবা সমাজমাধ্যম প্রভাবীও বলা যায়। ইনস্টাগ্রামে ৫ লক্ষ ৩৭ হাজার অনুগামী তার। দৈনন্দিন রিল বা ভিডিয়ো পোস্ট করলেই নিমেষে ভাইরাল হয়। তবে পিনাট কোনও মডেল বা অভিনেতা-অভিনেত্রী নয়। পিনাট আদপে মানুষই নয়। তার শরীর জোড়া ধূসর-কালো পশম। ছোট্ট শরীরের থেকেও বড় বাদামি-কালো মোটা লেজ! পিনাট আসলে কাঠবিড়ালি। গত বুধবার, ৩০ অক্টোবর তাকে ‘নিষ্কৃতি মৃত্যু’ দিয়েছে নিউ ইয়র্ক স্টেটের পরিবেশ সংরক্ষণ দফতর!
খবরটি ইনস্টাগ্রামে দিয়েছেন নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা মার্ক লঙ্গো। তিনি লিখেছেন, ‘‘পিনাটের সঙ্গে গত সাত বছর ধরে ছিলাম আমি। এক পথদুর্ঘটনায় ওর মা মারা গিয়েছিল। আমিই ওকে উদ্ধার করি। বাড়ি নিয়ে আসি। সেই থেকে আমাদের বন্ধুত্ব। ছোট্ট পিনাটকে নিজে হাতে বোতলে দুধ খাইয়ে বড় করেছি। যাঁরা আজ ওর সঙ্গে এটা করল তাদের আমি কোনও দিন ক্ষমা করব না।’’ ওই পোস্টেই লঙ্গো জানিয়েছেন, ঘটনাটিতে তিনি ব্যথিত, বিরক্ত এবং হতচকিত।
কিন্তু কেন নিষ্কৃতি দিতে হল পিনাটকে? নিউ ইয়র্ক স্টেটের ডিপার্টমেন্ট অফ এনভায়রনমেন্টাল কনজ়ারভেশন (ডিইসি) একটি সরকারি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘গত সপ্তাহের শুক্রবার পিনাট এবং একটি রকুনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের বেআইনি ভাবে বাড়িতে রেখে লালনপালন করা হচ্ছিল। দু’টি প্রাণীকেই উদ্ধার করার পরে ভাইরাল রোগ রেবিজ়ের জন্য পরীক্ষা করা হয়। দু’জনেরই শরীরে রেবিজ়ের ভাইরাস ধরা পড়ায় তাদের নিষ্কৃতি মৃত্যু দেওয়া হয়েছে।’’
ডিইসি জানিয়েছে, ওই কাঠবিড়ালি ধরা পড়ার পর এক সরকারি কর্মীকে কামড়েছিল। তার শরীর থেকে রেবিজ়ের ভাইরাস যাতে মানবদেহে সংক্রামিত না হয়, সে জন্যই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদিও বন্ধুকে হারিয়ে ভেঙে পড়া লঙ্গো লিখেছেন, ‘‘অবশেষে ইন্টারনেট, তুমিই জিতলে। আমার থেকে আর এই পৃথিবী থেকে একটা অসাধারণ প্রাণীকে ছিনিয়ে নিলে তোমরা। শুধু তোমাদের স্বার্থপরতার জন্য। যারা পিনাটের ব্যাপারে ডিইসিকে যোগাযোগ করেছিলে, তাদের জানিয়ে রাখি, তোমাদের জন্য ওপারে নরক অপেক্ষা করছে।’’