যন্ত্রের সঙ্গে নবশ্রী আর তার শিক্ষিকা আরাধনা ছবি: ফেসবুক
বাড়ির কাজ করতে গিয়ে দিনের অনেকটা সময় কেটে যায় বহু মহিলার। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতীয় মহিলারা গড়ে প্রতি দিন ৩৫২ মিনিট কাটান বাড়ির কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে রান্নাঘরের কাজ, ঘরদোর পরিষ্কারের কাজ। যদি এমন কোনও যন্ত্র থাকে, যা এই সব কাজের পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে দেবে? শ্রম তো বটেই অনেক সময় বেঁচে যাবে বহু মহিলারই।
মধ্যপ্রদেশের কিশোরী নবশ্রী ঠাকুর। তার মা একজন গৃহবধূ, দিনের বড় সময় যাঁর কেটে যেত বাড়ির কাজ করতে করতে। বিশেষ করে রান্নাঘরের কাজ। দীর্ঘ দিন মায়ের এই পরিশ্রম দেখে নবশ্রীর মনে হয়েছিল, যদি সত্যিই এমন কোনও যন্ত্র বানানো যেত, যা মায়ের পরিশ্রম কিছুটা কমাবে। অনেক ভেবে এমন যন্ত্র বানিয়ে ফেলেছে নবশ্রী। সেই যন্ত্রে খুব সহজেই রান্নাঘরের আট রকমের কাজ সেরে ফেলা যাচ্ছে।
কী ভাবে এই যন্ত্র বানিয়েছে নবশ্রী? সংবাদমাধ্যমকে এই কিশোরী জানিয়েছে, প্রাথমিক ধারণাটা মাথায় আসতেই যন্ত্রের নকশা কাগজে এঁকে ফেলে সে। স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষিকা আরাধনা পটেল তাকে সাহায্য করেন। সেই ছবি নিয়ে নবশ্রী হাজির হয় স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে, যিনি কাঠের কাজ করেন। ছবি দেখে তিনিও এমন যন্ত্রটি বানিয়ে দেন।
নবশ্রীর কথায়, ‘‘মশলা বাটা, আনাজ কাটার মতো কাজে মাকে সাহায্য করতে পারে, এমন একটা যন্ত্রের কথা ভেবেছিলাম। স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষিকা সাহায্য করায় যন্ত্রটি বানাতে পেরেছি।’’
কোন কোন কাজ হবে এই যন্ত্রে? নবশ্রীর মা রাজিনি জানিয়েছেন, খুব সহজেই আট রকমের কাজ তিনি এতে করে ফেলতে পারছেন। তার মধ্যে আনাজ কাটা, ফলের রস বার করা, মশলা গুঁড়ো করা, রুটি বেলার মতো কাজ রয়েছে। আগে এই কাজগুলি করতে তাঁর যত সময় লাগত, এখন তার অর্ধেকও লাগে না।
যন্ত্রটি ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় হয়েছে নবশ্রীদের এলাকায়। এমনকি ইন্টারনেটের দৌলতে এটির খবর ছড়িয়ে পড়েছে দেশের নানা প্রান্তে। কেমন খরচ হয়েছে যন্ত্রটি বানাতে? নবশ্রী জানিয়েছে, সেগুন কাঠের তৈরি যন্ত্রটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০০০ টাকা। নবশ্রীকে যন্ত্রটি বানানোর অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে ‘ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউন্ডেশন’। শুধু তাই নয়, তাকে ‘ইনস্পায়ার’ পুরস্কারও দেওয়া হয়েছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের তরফে।