অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
শহরের এমন চিত্র কেউ আগে দেখেননি!
এক দিকে উৎসবের আবহ। অন্য দিকে, সাত পড়ুয়া চিকিৎসকের আমরণ অনশন! এরই মধ্যে কেউ উদ্যাপনে মেতেছেন। আবার কেউ রয়েছেন প্রতিবাদে, মিছিলে। ১২৪ ঘণ্টা হল জুনিয়র চিকিৎসকেরা অনশনে বসেছেন। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে শহরের উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে কেমন পুজো কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র? অষ্টমীর দুপুরে আনন্দবাজার অনলাইনে নিজের মনের কথা জানালেন অভিনেত্রী। শহরের এই পরিস্থিতি দেখে তিনি বাক্রুদ্ধ। সকালে ঘুম থেকে উঠে জলখাবার খেতেও কষ্ট হচ্ছে তাঁর। শ্রীলেখা বলেন, “উৎসবে তো একেবারেই নেই। কিন্তু প্রতিবাদে আছি।”
১) পুজো নিয়ে তো বাঙালির আবেগ, উচ্ছ্বাস কম নেই। কিন্তু শ্রীলেখার এ বছরের পুজো কাটবে ধর্নামঞ্চে। আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের আশায় যে পড়ুয়া চিকিৎসকেরা আমরণ অনশন করছেন, তাঁদের পাশে থাকাই এই মুহূর্তে তাঁর একমাত্র কর্তব্য বলে মনে হয়। শ্রীলেখা বলেন, “পুজো নিয়ে আলাদা কোনও উচ্ছ্বাস বা আনন্দ কোনওটাই নেই। আলাদা করে মায়ের মুখও আমি দেখিনি। আমাদের আবাসনে পুজো হয়। আসা-যাওয়ার পথে মায়ের মুখ চোখে পড়েছে।”
২) পুজো নিয়ে আলাদা করে কোনও পরিকল্পনা না থাকলেও অষ্টমীতে অভয়ার মা-বাবার কাছে যাবেন শ্রীলেখা। অভিনেত্রী নিজে মা-বাবাকে হারিয়েছেন অনেক দিন। শ্রীলেখার কথায়, “ওঁরা সদ্য মেয়েকে হারিয়েছেন। আর আমার মা-বাবা নেই। অষ্টমীর দিন তাই নির্যাতিতার মা-বাবার ধর্নামঞ্চে যাব। ফেরার পথে আবারও ধর্মতলার অনশনমঞ্চে যাব।”
৩) শহরের এই উত্তাল পরিস্থিতি দেখে অনেকেই স্থির থাকতে পারছেন না। ছোট ছোট শিশুরাও মা-বাবার সঙ্গে ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে এসেছে। ডাক্তার ‘দাদা-দিদিদের’ সঙ্গে প্রতীকী অনশন করতে চায় তারা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের উদাসীন মনোভাব দেখে হতবাক শ্রীলেখা। তাঁর বক্তব্য, “এক বার নবান্ন বা কালীঘাটে যেতে ইচ্ছে করছে। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ঝাঁকিয়ে, জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে, অনশনরত ডাক্তারদের মুখগুলো দেখার পরেও আপনার ইচ্ছে করছে মণ্ডপে গিয়ে ঢাক বাজাতে? ডান্ডিয়া নাচতে?”
শরীর, মন কিছুই ভাল নেই। মন্দার বাজারে খরচ-খরচাও করতে হয় বুঝে। তাই ইচ্ছে হলেও রোজ ধর্নামঞ্চে যেতে পারছেন না শ্রীলেখা। তিনি বলেন, “আমি এই পৃথিবীর জন্য নই। লোকদেখানো সহমর্মিতায় আমি বিশ্বাস করি না। কারও পাশে দাঁড়াতে গেলে ক্যামেরা নিয়েও যাই না। আমি নিজে যেটুকু পারছি, করছি। আর পোষ্যদের নিয়ে দিব্যি আছি।”