২০১৩ সালে প্রথম বার এই গবেষণা সামনে আসে। প্রতীকী ছবি।
প্রস্রাব পানের উপকারিতা নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বলেছেন বহুকাল ধরে। কিন্তু প্রস্রাবের এমন বৈদ্যুতিক শক্তির কথা প্রথম বলেছিলেন ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী লোনিস লেরোপৌলস। মানুষের প্রস্রাব দিয়ে যে মোবাইল ফোন চার্জ করা যায় তা তিনি গবেষণাগারে প্রমাণও করেছিলেন। তার পরে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। ৯ বছর আগে সেই গবেষণা অবশ্য বড় সাফল্য পায়নি। ফলে এখনও প্রস্রাবের এমন উপকারিতা কাজে লাগানো যায়নি।
ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল রোবোটিক্স ল্যাবরেটরিতে এই গবেষণা হয়েছিল। সেখানেই দেখা যায় মানুষের প্রস্রাব থেকে তৈরি বিদ্যুৎ মোবাইল ফোনের ব্যাটারি চার্জ করতে পারে। ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ডের অধ্যাপক লোনিস দাবি করেছিলেন, এমন আবিষ্কার বিশ্বে এই প্রথম। আগে কেউ এটা বুঝতে পারেনি। একই সঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘এটা এমন একটি আবিষ্কার যাতে শক্তির উৎস কখনও শেষ হবে না। কারণ, একজন ব্যক্তি নিজের প্রস্রাব দিয়েই নিজের মোবাইলে চার্জ দিতে পারবেন আজীবন।’’ যা নষ্ট হয়ে যায় তাকেই বিদ্যুতের উৎস বানানোর মধ্যে অভিনবত্ব রয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।
তবে ফোনের ১০০ শতাংশ চার্জ হয়ে যাবে এমন দাবি তিনি করেননি। জানিয়েছিলেন, এর মাধ্যমে যেটুকু চার্জ হবে তাতে এসএমএস পাঠানো যাবে, নেট ব্যবহার এবং ফোন করাও যাবে কিছুক্ষণ। তাঁর দাবি ছিল, কথা বলার জন্যই ফোনে সবচেয়ে বেশি ব্যাটারি খরচ হয়। কিন্তু অনেক সময় চার্জ দেওয়ার সুযোগ না থাকলে এই পদ্ধতি কাজে লাগানো যেতে পারে। সেই সময়েই আরও গবেষণার কথা দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, ‘মাইক্রোবায়াল ফুয়েল সেল’ তৈরি করা গেলে পুরোপুরি চার্জও দেওয়া যাবে। বলা হয়েছিল, এই পদ্ধতিতে প্রস্রাবে থাকা ব্যাকটেরিয়া ভাঙতে শুরু করে। তার মধ্যে থাকা নানা রাসায়নিক বিদ্যুতে পরিণত হয়। এই গবেষণা রয়্যাল সোসাইট অব কেমিস্ট্রির জার্নাল অব ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি, কেমিক্যাল ফিজিক্সে প্রকাশিত হয়েছিল।
পরে এই গবেষণা আরও এগিয়েছে। ২০১৬ সাল নাগাদ ব্রিস্টলের ওই গবেষণাগারের তরফে দাবি করা হয়, ৬০০ মিলিলিটার প্রস্রাব থেকে যে পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব তাতে একটি স্মার্টফোন ৬ ঘণ্টা চার্জ দেওয়া সম্ভব। গবেষণা এখনও থামেনি। বিনা খরচের এই চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে এখনও কাজ চলছে বলে দাবি করা হয়েছে ওয়েস্ট ইংল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।