পোষ্য আনবেন ঘরে? তার জন্য প্রস্তুতিও জরুরি। ছবি: ফ্রিপিক।
বিয়ে হয়ে নতুন শহরে এসেছেন তিথি। বিকালবেলা আবাসন চত্বরে হাঁটতে গিয়ে আলাপ কুট্টুসের সঙ্গে। পড়শির পোষ্য সারমেয়, একটি সুন্দর ‘পাগ’। এখন বিকাল হলেই মনে হয়, কখন সেই চারপেয়ে পড়শি মহিলার সঙ্গে হাঁটতে বেরোবে, তিথি তাকে আদর করবেন।
এক মাসে এমন মায়া পড়ে গিয়েছে যে তিথিও একটি পোষ্য ঘরে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এমনটা অনেকেরই হয়। কারও পছন্দ সারমেয়, কারও বিড়াল। কেউ আবার পোষেন খরগোশ। কারও ঝোঁক অ্যাকোরিয়ামের রঙিন মাছে। কিন্তু পোষ্য মানে শুধু খেলার সঙ্গী বা বিনোদনের সামগ্রী নয়, কোনও প্রাণীকে আনা মানে তার দায়দায়িত্ব নেওয়া। নতুন অতিথি ঘরে আনার আগে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন?
সময়: একটি বিড়াল বা কুকুরছানার যত্নআত্তি মনুষ্যশিশুর চেয়ে কম নয়। বরং তার জন্য অনেকটা সময়ই বরাদ্দ করতে হয়। বিশেষত একেবারে ছোট থাকাকালীন তাকে খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো, ওষুধ খাওয়ানো, ভ্যাকসিন, পশু চিকিৎসক দেখানো সবটাই জরুরি। সে বড় হলেও তাকে সময় না দিলে, পোষ্য কিন্তু মনমরা হয়ে থাকবে। তা কখনও কাম্য নয়। ব্যস্ত জীবনে পোষ্যকে ভাল রাখার সময় হাতে আছে কি না, আগে বুঝে নেওয়া দরকার।
খরচ: সারমেয় হোক বা বিড়াল কিংবা অন্য কোনও প্রাণী, তার জন্য খরচ হবেই। শুধু খাওয়ার খরচ নয়, তার চিকিৎসক থেকে ওষুধ, প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার, পোশাক, বিছানা, শখ-আহ্লাদ পূরণ করতে টাকার দরকার। ফলে পোষ্য ঘরে এলে একধাক্কায় পারিবারিক বাজেট বেশ কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। সেই দিকটাও ভেবে নেওয়া প্রয়োজন।
ঘর: পোষ্যের জন্য একটি বিছানা বা ছোট্ট ঘরের ব্যবস্থা করলেই হয় না।, সে বাড়ি জুড়ে খেলে বেড়াবে। বাড়ি অথবা ফ্ল্যাটে এ দিক-ও দিক ঘুরবে সেই জায়গা রয়েছে তো?
জীবনযাপনের সঙ্গে মিলছে তো: এমন পোষ্য ঘরে আনুন যার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না। বয়স্ক দম্পতির পক্ষে দুরন্ত কুকুরছানার দৌরাত্ম্য সামলানো মুশকিল হতে পারে। সেই জায়গায় বিড়াল বেছে নিতে পারেন। আবার অ্যাকোরিয়ামে মাছও রাখতে পারেন।
দায়দায়িত্ব আজীবনের: পোষ্যকে ঘরে এনে সামলাতে না পেরে তাকে অন্য কারও হাতে তুলে দেওয়া কোনও কাজের কথা নয়। সে ক্ষেত্রে পোষ্য এবং তার মনুষ্য ‘বাবা-মা’ দু’পক্ষই কষ্ট পাবে। বরং পোষ্য মানে তাকে আজীবন লালনপালন করা। বিড়াল, কুকুর ৮-১০ বছরের বেশি বাঁচে। সেই সময়ের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া ভাল।