দাম্পত্য কলহের পর কোন কাজগুলি করলে অশান্তি আরও বাড়বে? —‘প্রাক্তন’ ছবির দৃশ্য ।
দাম্পত্য জীবনে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকে। এক ছাদের নীচে থাকতে গিয়ে দু’জনের মধ্যে মতের মিল না হওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। ঝগড়া না করে মনের ভিতর রাগ পুষে রাখা মোটেই কাজের কথা নয়। বরং ঝগড়া করলে মন হালকা হয়, জমা কথা এক নিমেষেই গায়েব হয়ে যেতে পারে ঝগড়ার মাধ্যমে। অবসান হয় কত পুষে রাখা রাগ, অভিমানের। এমন অনেক সময়েই শোনা যায় যে, কথা হয়নি বলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে বহু দিনের সম্পর্ক। ঝগড়ার ঠিক পরের মুহূর্তগুলি কিন্তু দাম্পত্য সম্পর্কের সবচেয়ে স্পর্শকাতর সময়। মধুর সম্পর্ক ভেঙে যেতে কয়েকটা ভুলই যথেষ্ট। ঝগড়ার পরমুহূর্তে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই অতিরিক্ত সাবধান হতে হবে। জেনে নিন, ঝগড়ার পর কোন কোন কাজ ভুলেও করবেন না।
১) ঝগড়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিটমাট করতে যাবেন না। একে অপরকে সময় দিন। ঠান্ডা মাথায় ভাবুন ঠিক কী কারণে সমস্যা হয়েছে, কী করলে ঝগড়া এড়ানো যেত। কিছুটা সময় নিলে দু’জনের মন থেকেই ধীরে ধীরে ঝগড়ার রেশ কমে যাবে। ঝগড়া শেষে একে অপরের সঙ্গে বাঁকা কথা বলবেন না। সব সময়ে সঙ্গী ঝগড়া মিটমাট করবেন, এমনটা আশা করবেন না, নিজেও চেষ্টা করুন।
২) ঝগড়ার পরেই দরজায় খিল আটকে বসে থাকেন অনেকে। কথাবার্তা, একে অপরের মুখ দেখাদেখি সব বন্ধ। এই ভুলটা করবেন না। রাগ পুষে রাখলে সমস্যা আরও বাড়বে। বরং নিজেকে শান্ত করে দু’জনই কথা বলতে শুরু করুন। ঝগড়ার পর পর একে অপরের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে সময় লাগে। তাই বলে কথা বন্ধ করে বসে থাকার কোনও অর্থ হয় না।
৩) ঝগড়ার পর একে অপরকে দোষারোপ করা বন্ধ করুন। এতে সমস্যা বেড়ে যায়। ঠান্ডা মাথায় সঙ্গীকে নিজের কথা বোঝানোর চেষ্টা করুন। নিজেও ধৈর্য ধরে তাঁর কথা শুনুন। ঝগড়ার পর যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়, তা–ও সহজে কেটে যাবে। যে কোনও ঝগড়ায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই ভূমিকা থাকে। তাই ঝগড়া শেষে দু’জনই একে অপরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন। এই অভ্যাস কিন্তু যে কোনও ঝগড়া শেষে মিটমাট করার সেরা উপায়।
৪) কাজের চাপ, হতাশা, পারিবারিক অশান্তি— ঝগড়ার জন্য নানা কারণকেই দায়ী মনে হতে পারে আপনার। কিন্তু সঙ্গীর সামনে ঝগড়ার অজুহাত হিসাবে এই তুচ্ছ কারণগুলিকে উপস্থাপন করবেন না। অন্য কোনও চাপের কারণে আপনি সঙ্গীর প্রতি খারাপ আচরণ করে ফেলেছেন, এটি তাঁর কাছে ভাল বার্তা না-ও হতে পারে।
৫) স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার পর সেই কাহিনি আর পাঁচ জনের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই, এতে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। নিজেরাই ঝগড়া মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। বন্ধুবান্ধব কিংবা পরিবারের তৃতীয় কোনও ব্যক্তির কাছে নিজেদের সমস্যার কথা বলার দরকার নেই।