Summer Safety for Kids

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে শিশুদেরও, তীব্র তাপে ছোটদের সুস্থ রাখতে কী করবেন অভিভাকেরা?

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি যে কেবল বড়দের থাকে তা নয়, ছোটদেরও অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। তাই সন্তানকে যত্নে রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হবে অভিভাবকদের।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৫১
How to protect children from heat stroke and keep them hydrated

তীব্র তাপে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে শিশু, বাবা-মায়েরা যা যা মাথায় রাখবেন। ছবি: ফ্রিপিক।

বাইরে বেরোলেই কড়া রোদ। গরমের ছুটি শুরু হয়নি এখনও। তবে সময়ের আগেই তাপমাত্রা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে আর কিছু দিনের মধ্যেই রাজ্যের স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি শুরু হবে। আপাতত রোদের মধ্যেই স্কুলে যেতে হবে ছোটদের। আর তাপপ্রবাহ যে কমতে পারে, সে বিষয়েও এমন কোনও পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের তরফে নেই। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশু বাইরে যাক বা না যাক, গরমের কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি যে কেবল বড়দের থাকে তা নয়, ছোটদেরও অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। তাই সন্তানকে যত্নে রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হবে অভিভাবকদের।

Advertisement

শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের পরামর্শ, গরমের সময়ে জলশূন্যতা ভোগায় অনেক শিশুকেই। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ছোটরা ঠিকমতো জল খায় না। স্কুলের সময়টাতে জল খাচ্ছে কি না, তা দেখার কেউ থাকে না। ফলে শরীরে জলের ঘাটতির পাশাপাশি খনিজ উপাদানগুলি, যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইডের ঘাটতি হতে থাকে। এর থেকে বমি, পেটের গন্ডগোল হতে পারে, জ্বরও আসতে পারে। তাই পর্যাপ্ত জল খাওয়াতে হবে শিশুকে।

দ্বিতীয়ত, টিফিনে ফলের রস করে দিতে পারেন শিশুকে। গরমের সময়ে লেবুর রস, তরমুজের শরবত বা আনারসের শরবত করে দিলে ভাল হয়। জলের পরিমাণ বেশি, এমন ফল খাওয়াতে পারেন। ওআরএস সঙ্গে রাখতেই হবে। শিশুর শরীরে অস্বস্তি হলে বা রোদ থেকে ফিরেই বমি হলে, ওআরএস জলে গুলে খাইয়ে দেবেন।

হিট স্ট্রোক হলে নানা উপসর্গ দেখা দেবে। ঘাম হবে না, ত্বক শুকিয়ে যাবে, মাথা ঘুরবে, ঘন ঘন বমি করতে থাকবে শিশু। শ্বাসপ্রশ্বাসের হার অনেক বেড়ে যাবে, সেই সঙ্গে ডায়েরিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অনেক সময়ে হিট স্ট্রোকের কারণে খিঁচুনিও হয় শিশুদের, এমন লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

গরমের সময়ে নানা রকম জীবাণুর সংক্রমণও হয় ছোটদের। তা থেকে জ্বর, সর্দি-কাশি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই বিষয়ে চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানান, জ্বর হলে হালকা প্যারাসিটামল খাওয়ানো যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। কোনও রকম অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না। তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে, রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। এই সময়ে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির প্রকোপও বাড়ে। কাজেই পরিচ্ছন্নতায় নজর দিতে হবে, বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখবেন।

দুপুরের দিকে সন্তানকে নিয়ে কোথাও না বেরোনোই শ্রেয়। তবে একান্তই যদি বেরোতে হয়, সে ক্ষেত্রে সব রকম সুরক্ষা নিন। শিশুর মাথায় পাতলা সুতির স্কার্ফ জড়িয়ে দিন। কিংবা টুপিও পরাতে পারেন। সানস্ক্রিন মাখাতেও ভুলবেন না। স্কুল থেকে ফেরার পরেই শিশুকে স্নান করিয়ে দিতে হবে।

খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর দিতে হবে এই সময়ে। বাইরের খাবার, ভাজাভুজি খাওয়ানো চলবে না। জাঙ্ক ফুড একেবারেই দেবেন না। এমনকি রাস্তায় যে ফলের রস, শরবত, লস্যি বিক্রি হয়, তা-ও খাওয়াবেন না শিশুকে। বাড়িতে তৈরি হালকা খাবারই খেতে হবে। ভাত, পাতলা করে ডাল, মাছের ঝোল ও বেশি করে সবুজ শাকসব্জি খাওয়াতে পারলে ভাল হয়। জলখাবারে খুব বেশি প্রোটিন দেবেন না। দুধ খেলে তার সঙ্গে কর্নফ্লেক্স বা ওট্‌সের পরিজ় খাওয়া যেতে পারে। না হলে দই-চিঁড়ে, দইয়ের ঘোল দিয়ে তৈরি ওট্‌স খেতে পারেন। ওট্‌সে আছে বিটা-গ্লুকান, যা হার্ট ভাল রাখবে। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মেথির জল, মৌরি-মিছরি ভেজানো জল খাওয়াতে পারেন শিশুকে। এতে পেট ঠান্ডা থাকবে।

Advertisement
আরও পড়ুন