অভিনেত্রী আলিয়া ভট্টের সঙ্গে তার পোষ্য বিড়াল এডওয়ার্ড। ছবি: সংগৃহীত।
কুকুর দেখলেই ভয়ে সিঁটিয়ে যান। তাই সঙ্গীকে একটি পার্সিয়ান বিড়াল উপহার দেবেন বলে মনস্থ করেছেন। এখানকার দেশি বিড়াল আলাদা করে কিনে বাড়িতে আনতে হয় না। তারা মাছের গন্ধে এমনিতেই গেরস্থ বাড়িতে চলে আসে। আর যদি একটু আদর পায়, তা হলে তো কথাই নেই। একেবারে সংসার পেতে বসে। তবে বিশেষ এই প্রজাতির বিড়ালটি কিন্তু আর পাঁচটা সাধারণ প্রজাতির থেকে আলাদা। নাম শুনে আন্দাজ করাই যায় যে পারস্য দেশে এই প্রজাতির জন্ম। তবে এ নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। কেউ বলেন, পশমের মতো লম্বা লোমযুক্ত বিড়ালের এই প্রজাতিটিকে ১৯ শতকে আফগানিস্তান এবং ইরান (সেই সময়ে পারস্য বা পার্সিয়া) থেকে আমদানি করা হয়েছিল।
রানি ভিক্টোরিয়া, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গল থেকে সিনেমার গোয়েন্দা চরিত্র জেম্স বন্ড— সকলের সঙ্গেই পোষ্য হিসাবে দেখা গিয়েছে মধ্য প্রাচ্য থেকে আসা এই প্রজাতির বিড়ালকে। তবে জন্ম যে দেশেই হোক না কেন, ভারতে এখন এই বিড়াল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আলিয়া ভট্টকে তাঁর প্রাক্তন অভিনেতা সিদ্ধার্থ মলহোত্র উপহার দিয়েছিলেন এই জাতীয় একটি বিড়াল। যদিও আলিয়ার পোষ্যে হিমালয়ান এবং সায়ামিজ় রক্তও রয়েছে। আলিয়া এবং রণবীরের বিয়ের ছবি খুঁজলেই তার দেখা মিলবে। শুধু লোম নয়, আকারেও অন্যান্য বিড়ালের চেয়ে বড়। তাই পোষ্য হিসাবে বাড়িতে রাখার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
১) খরচ
পার্সিয়ান বিড়ালেরও বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। যত উন্নত প্রজাতি দামও তত বেশি। এই প্রজাতির বিড়াল কিনতে গেলে বাজেট রাখতে হবে ৮ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত। শরীরের আকার, লোমের মান, চোখের মণির রং, স্বভাব— এর উপর দাম নির্ভর করে।
২) প্রজাতি
‘ডল ফেস’, ‘পেকে-ফেস’, ‘এক্সটিক শর্টহেয়ার’ এবং ‘টিকাপ’— সাধারণত চারটি প্রজাতির বিড়াল দেখা যায়। তার মধ্যে পুতুলের মতো মুখ বিশিষ্ট পার্সিয়ান বিড়ালের কদর বেশি। দামের দিক থেকেও এই প্রজাতিটির স্থান বেশ উঁচুতে।
৩) স্নান
সাধারণত এই প্রজাতির বিড়ালকে মাসে এক বার স্নান করালেই চলে। এই প্রজাতির বিড়ালের জনপ্রিয়তার কারণ তার লোম। তাই আলাদা করে লোমের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তাদের জন্য আলাদা শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করাই ভাল।
৪) খাবার
মাছ পছন্দ হলেও কাঁটা বেছে দিতে হবে। না হলে গলায় বিঁধে যেতে পারে। টুনা, স্যামনের মতো সামুদ্রিক মাছ যেমন প্রিয়। তেমনই টিনজাত খাবার খেতেও ভালবাসে এরা। এ ছাড়া হাড় ছাড়া মুরগি সেদ্ধ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ভাত নৈব নৈব চ।
৫) চিকিৎসা
এই প্রজাতির বিড়ালের প্রথম এবং প্রধান সমস্যা হল চোখ। কারণে-অকারণে সারা ক্ষণ চোখ থেকে জল পড়ার সমস্যা দেখা যায় এদের। নাকও বন্ধ থাকে প্রায় সময়েই। মানুষের মতোই চট করে ঠান্ডা লাগা বা অ্যালার্জির সমস্যা দেখা যায় কোনও কোনও প্রজাতির মধ্যে। তেমন বাড়াবাড়ি কোনও রোগ না হলেও বছরে দু’বার পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া জরুরি।