রক্তদান করলে শরীরের কী কী উপকার হতে পারে? ফাইল চিত্র।
রক্তদান করার উপকারিতা অনেক। ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, রক্তদান করলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। বিশেষ করে, রক্তের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়। সেই সঙ্গে ডায়াবিটিসের ঝুঁকিও কমে। লন্ডনের ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউট এই নিয়ে একটি সমীক্ষাও চালিয়েছে।
ষাটের বেশি বয়স, এমন পুরুষ ও মহিলাদের নিয়ে সমীক্ষাটি চালানো হয়। গবেষকেরা দেখেন, যাঁরা বছরে অন্তত তিন বার করে রক্তদান করেছেন, তাঁদের রক্তের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি নেই বললেই চলে। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত। এমনকি হার্টের স্বাস্থ্যও ভাল।
গবেষকদের ব্যাখ্যা, প্রতি বারই রক্তদান করার পরে নতুন রক্তকণিকা তৈরি হয়। ফলে শ্বেত রক্তকণিকা থেকে নতুন প্রতিরোধী কোষও তৈরি হয়। সাধারণত দেখা যায়, রক্তের কোষগুলিতে নিরন্তর মিউটেশন বা রাসায়নিক বদল চলতে থাকে। যদি কখনও এমনই কিছু মিউটেশন অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তখন রক্তের কোষের অনিয়মিত বিভাজন শুরু হয়ে যায়, যা লিউকেমিয়া বা রক্তের ক্যানসারের পূর্বলক্ষণ। কিন্তু যাঁরা রক্তদান করেন, তাঁদের নতুন নতুন কোষ তৈরি হয় এবং সেখানে মিউটেশন অস্বাভাবিক বা অনিয়মিত হতে পারে না। ফলে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিও কমে আসে।
রক্তদান করলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতাও কমে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গেলে তা জমাট বেঁধে ‘থ্রম্বোসিস’-এর কারণ হতে পারে। তখন হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু রক্তদান করলে সেই ঝুঁকি থাকে না। পাশাপাশি, রক্তদান করলে রক্তে আয়রনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে রক্তচাপও বশে থাকে।
রক্তদান করলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি নাকি থাকে না, এমনটাও দাবি করেছেন গবেষকেরা। তাঁদের বক্তব্য, এতে ইনসুলিন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে না। যাঁরা নিয়মিত রক্তদান করেন, তাঁদের শরীরে বয়সের ছাপও কম পড়ে। শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরিও জমতে পারে না। ফলে মেদ কম জমে বলেই দাবি গবেষকদের।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। গবেষণার ফলাফল যা-ই হোক না কেন, সকলের জন্য তা প্রযোজ্য না-ও হতে পারে। বিশেষ কিছু শারীরিক সমস্যা থাকলে রক্তদান করা যায় না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিছু করা ঠিক হবে না।