Anuttama Banerjee

Fear of Failure: জীবনে সফল হতে না পারা মানেই ব্যর্থতা নয়! ফের তা মনে করালেন মনোবিদ অনুত্তমা

‘লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এটি ছিল পঞ্চম পর্ব। এ পর্বের বিষয় ‘যদি ব্যর্থ হই।’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২২ ২১:১১
শুধু ব্যর্থ হলেই ব্যর্থতার ভয় জন্ম নেয় না। সফল হলেও সে ভয় থাকে।

শুধু ব্যর্থ হলেই ব্যর্থতার ভয় জন্ম নেয় না। সফল হলেও সে ভয় থাকে। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ

যদি না পারি! জীবনের কোনও না কোনও পর্বে এই ভয়ের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় প্রত্যেককে। সফলতার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে যেন আরও বেশি গ্রাস করে ব্যর্থতার ভয়। অর্জিত সাফল্য ধরে রাখতে পারা নিয়ে এক তীব্র লড়াই চলে নিজের সঙ্গে। সেই সঙ্গে থাকে পারিপার্শ্বিকতার চাপ। পরিবারের প্রত্যাশা। ক্রমশ বাড়তে থাকে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা।

প্রত্যাশা পূরণের এই লড়াইটা আরও কঠিন হয় পড়ে ‘লোকে কী বলবে’ তার ভয়ে। এই লোকের ভয়ে মরি-বাঁচি সফল হতে চাওয়ার কিছু সমস্যা নিয়েই রবিবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউবে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘লোকে কী বলবে! সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এটি ছিল পঞ্চম পর্ব। এ পর্বের বিষয় ‘যদি ব্যর্থ হই’।

সফল হওয়ার সব রকম উপাদান নিজের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন কারণে জন্ম নিয়েছে ব্যর্থতার ভয়। তেমনই কিছু অভিজ্ঞতার কথা উঠে এল রবিবারের আলোচনায়। প্রতি পর্বের আগেই অনুত্তমার কাছে পাঠানো যাবে প্রশ্ন। এই পর্বেও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ই-মেলে তেমনই কিছু প্রশ্ন পেয়েছিলেন মনোবিদ।

Advertisement

শ্রেষ্ঠা জানালেন, তিনি দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বিগত দু’বছরে অনলাইন আর অফলাইন করতে গিয়ে ঘাটতি থেকে গিয়েছে পড়াশোনায়। বোর্ডের পরীক্ষায় উতরে গেলেও জয়েন্টে পাবেন কি না তা নিয়ে রয়েছে দ্বন্দ্ব। অথচ সবাই ভীষণ আশা করে আছে যে সে এ বারেই জয়েন্ট পেয়ে যাবে। এ প্রশ্নের গা ঘেঁষে আরেকটি প্রশ্ন এসেছে।

তিতির জানালেন, তিনি একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। উচ্চমাধ্যমিকের পর সাইকোলজি নিয়ে পড়তে চান। কিন্তু পরীক্ষায় ভাল ফল না করলে শহরের সেরা কলেজে ভর্তি হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। মনের মধ্যে সারা ক্ষণ এই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। শ্রেষ্ঠা এবং তিতির দুজনকেই ধাপে ধাপে এগোনোর পরামর্শ দিলেন মনোবিদ। জীবনে বিকল্প কোনও পথ বেছে রাখা জরুরি সে কথাও মনে করালেন তিনি।

একই সমস্যার অনুরণন পাওয়া গেল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্নাতকোত্তর পাঠরতা এক ব্যক্তির প্রশ্নে। জানালেন, পড়াশোনার পাশাপাশি একটি আইটি সংস্থাতে কাজ করেন। স্নাতকের পরীক্ষাতে স্বর্ণপদকও পেয়েছিলেন। কিন্ত এখন চাকরি ও পড়াশোনা একসঙ্গে সামলাতে গিয়ে এ বারেও সফল হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। পরীক্ষায় প্রথম হতে না পারলে বাড়ির লোকজন কী বলবে তা নিয়েও একটা ভয় আঁকড়ে ধরেছে।

পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করার সাহসকে কুর্ণিশ জানালেন অনুত্তমা। পাশাপাশি তুলে আনলেন এক নির্ভেজাল সত্য। শুধু ব্যর্থ হলেই ব্যর্থতার ভয় জন্ম নেয় না। সফল হলেও সে ভয় থাকে। অনুত্তমার ব্যাখ্যা, প্রথম স্থানটিও পরিবর্তনশীল। আজকে যিনি প্রথম হচ্ছেন কাল অন্য এক জন প্রথম হতে পারেন। এক জনের পক্ষে সব সময় শীর্ষ স্থান অর্জন করা সম্ভব হয় না।

এ তো গেল পড়াশোনা, পরীক্ষায় দারুণ ফলের প্রত্যাশা নিয়ে ছাইচাপা উদ্বেগ। পাশাপাশি উঠে এসেছে শূন্য থেকে শুরু করার পথে ব্যর্থ হওয়ায় আশঙ্কা। অয়ন জানিয়েছেন, তিনি এখন পড়াশোনা করছেন। সেই সঙ্গে চাকরির চেষ্টা করছেন। বন্ধুরা সবাই চাকরি পেয়ে গেলেও তিনি এখনও কর্মহীন। সরাসরি না হলেও চাপ আসতে শুরু করেছে পরিবার থেকে। আত্মবিশ্বাসটাও যেন কোথাও একটা গিয়ে টাল খেয়ে যাচ্ছে। অয়নকে পরামর্শ এবং ভরসা দিলেন মনোবিদ। অনুত্তমা বললেন, ‘‘সব কাজের ক্ষেত্রে চাই সঠিক পরিকল্পনা আর নিজের দক্ষতার উপর বিশ্বাস। অনুকূল পরিস্থিতিতে ব্যর্থতার বোধকে কী ভাবে সামলাচ্ছেন তার উপর অনেকটা নির্ভর করছে সাফল্য।’’

আরও পড়ুন
Advertisement