Condom

Condom: দেশের ৮৭% পুরুষ এবং ৯৭% মহিলা কন্ডোম ব্যবহারে আগ্রহী নন, বলছে ‘কন্ডোমোলজি’ সমীক্ষা

বহু দেশেই বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে ‘কন্ডোমোলজি’র সমীক্ষা। ভারতে এই প্রথম।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ১৫:১৪
সচেতনতার অভাবেই কন্ডোম ব্যবহারে আগ্রহী নন ভারতীয়রা— বলছে সমীক্ষা।

সচেতনতার অভাবেই কন্ডোম ব্যবহারে আগ্রহী নন ভারতীয়রা— বলছে সমীক্ষা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় পুরুষেরা কন্ডোম ব্যবহারে আগ্রহী নন। ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সি পুরুষদের মধ্যে যাঁরা নিয়মিত যৌন সম্পর্কে লিপ্ত, তাঁদের ৮০ শতাংশই কন্ডোম ব্যবহার করেন না। এমনকি মাত্র ৩ শতাংশ মহিলা কন্ডোম ব্যবহারে ইচ্ছুক। হালের সমীক্ষায় উঠে এল এই তথ্য।

বহু দেশেই বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে ‘কন্ডোমোলজি’র সমীক্ষা। ভারতে এই প্রথম। সেই সমীক্ষাতেই ভারতীয়দের কন্ডোম ব্যবহার নিয়ে বেশ কয়েকটি তথ্য উঠে এসেছে। কী এই ‘কন্ডোমোলজি’? ‘কনজিউমার, কন্ডোম অ্যান্ড সাইকোলজি’— এই শব্দত্রয়কে সংক্ষিপ্ত করে বানানো হয়েছে ‘কন্ডোমোলজি’। কন্ডোমের বাজারের সবচেয়ে বড় অংশীদার এবং তাদের সহযোগী কম্পোনিগুলি মিলিত ভাবে ‘কন্ডোম অ্যালায়েন্স’ নামে একটি দল তৈরি করেছে। দলটি এই বিষয় নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়ে পরিসংখ্যান হাজির করেছে। তার উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে এই ‘কন্ডোমোলজি’র রিপোর্ট।

Advertisement

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে, অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ এড়াতে, সুস্থ যৌনস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কন্ডোম ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ— এই কথা মাথায় রেখে ভারতেও ‘কন্ডোমোলজি’র সমীক্ষা চালানো হয়েছে। এ দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশেরই বয়স ২৪ বা তার নীচে। এমন একটি দেশে কন্ডোম নিয়ে সচেতনতা বা কন্ডোম ব্যবহারে উৎসাহ কতটা? পরিসংখ্যান বলছে, এগুলি একেবারেই তলানিতে।

কোন কোন তথ্য উঠে এসেছে সমীক্ষা থেকে?

  • ২০ থেকে ২৪ বছরের পুরুষদের মধ্যে যাঁরা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন, তাঁদের ৮০ শতাংশই শেষ বার শারীরিক সম্পর্কের সময়ে কন্ডোম ব্যবহার করেননি।
  • ভারতে কন্ডোম ব্যবহারের হার মাত্র ৫.৬ শতাংশ। সামাজিক ভাবধারা এবং নীতিপুলিশির জন্য কন্ডোম ব্যবহারের হার এত কম।
  • বিয়ের আগে সহবাসের সময় মাত্র ২৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৭ শতাংশ মহিলা কন্ডোম ব্যবহার করেছেন।
  • মাত্র ১৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩ শতাংশ মহিলা যৌন সম্পর্কে সব সময় কন্ডোম ব্যবহারে আগ্রহী। অর্থাৎ দেশের ৮৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৯৭ শতাংশ মহিলা কন্ডোম ব্যবহারে আগ্রহী নন।
  • সরকারি ভাবে যৌনস্বাস্থ্য এবং কন্ডোম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচার চালানোর পরেও গত কয়েক বছরে কন্ডোম বিক্রির হার বেড়েছে মাত্র ২ শতাংশ।

২০১৪-১৫ সালে দেওয়া ‘ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে ৪’ (এনএফএইচএস ৪)-এর তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, যৌনতার প্রশ্নে পশ্চিমের দেশগুলির যুবক-যুবতীদের সঙ্গে ভারতের যুবক-যুবতীদের বিস্তর সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক ফারাক রয়েছে। এ দেশে সচেনতার অভাবকেই এর জন্য দায়ী করা হয়েছে। কন্ডোম কখন ব্যবহার করা উচিত, কী ভাবে ব্যবহার করা উচিত এবং সঙ্কোচমুক্ত হয়ে কেনার বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকার ফলে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠেছে। এমনই বলা হয়েছে ‘কন্ডোমোলজি’র রিপোর্টে।

‘কন্ডোম অ্যালায়েন্স’-এর অন্যতম সদস্য রবি ভাটনগর সংবাদমাধ্যকে জানিয়েছেন, ‘‘যৌনস্বাস্থ্য শিক্ষা, অহেতুক উত্তেজনামূলক বিজ্ঞাপন, পাশাপাশি কন্ডোমের বিজ্ঞাপনের উপর বিধিনিষেধ— অনেকগুলি বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে, বদল আনতে হবে। দলের আর এক সদস্য বিথিকা যাদবের বক্তব্য, ‘‘খোলাখুলি, সৎ ভাবে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। সমাজের সকলের সামনে বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্যই এই সমীক্ষা।’’

আরও পড়ুন
Advertisement