প্রতীকী ছবি।
অনেক সময়েই আমাদের প্রিয় মানুষের সঙ্গে আর মনের মিল হয় না। তখন সম্পর্ক জোর করে টিকিয়ে রাখার চেয়ে দু’জনে আলাদা পথে হাঁটারই সিদ্ধান্ত নেন। একটি গভীর সম্পর্ক ভেঙে গেলে কষ্ট হবেই। যদি আপনি নিজেও এই বিচ্ছেদ চেয়ে থাকেন, তা হলেও কষ্ট হবে। কিন্তু সময়ের নিয়মে তা ধীরে ধীরে মিলিয়েও যায়। আপনারও তাই হবে। কিন্তু বিচ্ছেদের পর কিছু দিন সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হয়। এই সময়টাই পার করা খুব মুশকিল। কী করে ভাল থাকা যায় এই কঠিন পরিস্থিতিতে?
হলিউডেরপ্রেমের ছবির পোকা যাঁরা, তাঁরা এই সময়ে সেই ছবিগুলি ফের দেখা শুরু করেন। আর প্রাক্তনের কথা মনে পড়ে গেলে এক কৌটো আইসক্রিম নিয়ে খেতে খেতে কান্নাকাটি করেন। আবার অনেকে এই ছবিগুলির শেখানো পথে ঘর থেকে বেরোনোই বন্ধ করে দেন। বিছানায় সারা দিন শুয়ে শুয়ে পিৎজ্জা খেতে খেতে হিসাব কষেন, কোন কোন ভুলের জন্য সম্পর্কটা টিকল না।বলিউডের ভক্তরা আবার যত বিরহের গান রয়েছে, তার প্লে-লিস্ট তৈরি করে শোনেন আর কান্নাকাটি করেন। কিংবা চুপচাপ বসে পুরনো ছবি দেখেন।
সিনেমায় বেশির ভাগ সময়ে নায়ক বা নায়িকাকে এ ভাবেই বিচ্ছেদের পর শোকপালন করতে দেখা যায়। এবং চিত্রনাট্যের নিয়ম অনুযায়ী এর পরেই তাঁদের জীবনে নতুন কেউ প্রবেশ করে জীবনটা ফের রঙিন করে দেন। কিন্তু বাস্তব তেমন নয়। বিচ্ছেদের পরের সময়টা সকলের ক্ষেত্রে এমন সিনেমার দৃশ্যের মতো হয় না। এবং সেটা হওয়ার প্রয়োজনও নেই। এ সব ছাড়াই আপনি এই সময়টা অতিক্রম করতে পারবেন। ভাল ভাবেই কাটাতে পারবেন। শুধু প্রয়োজন নিজেকে একটু বেশি সময় দেওয়া এবং ভরসা রাখা। কিন্তু কী ভাবে ভাল রাখবেন নিজেকে? রইল কিছু সহজ উপায়
১। ঘরের জানলা-দরজা বন্ধ না রেখে খুলে দিন। সূর্যের আলো আসতে দিন। মন এমনিই অনেকটা ভাল হয়ে যাবে।
২। যা করতে ভালবাসেন, কিন্তু এত দিন সময় পাননি, তা করুন। নতুন গল্পের বই যা কেনার পর অনেক দিন ধরে পড়েই রয়েছে, সেটা এ বার পড়ে ফেলুন। ছবি আঁকা বা শহরের কোনও জায়গায় যাওয়ার শখ হয়তো অনেক দিন ধরে। এত দিন সময় পাচ্ছিলেন না। এ বার সেগুলি এক এক করে করুন।
৩। নতুন কিছু শুরু করতে পারেন। প্রথম একা বেড়াতে যাওয়া, বা বাগান তৈরি করা? নতুন কোনও ভাষাও শিখে ফেলতে পারেন এই সুযোগে।
৪। সুগন্ধীযুক্ত মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখতে পারেন ঘরে। মন ভাল হবে। নিজের যত্ন নিন। রূপচর্চা বা যোগাসন করতে পারেন মন অশান্ত হয়ে পড়লেই।
৫। নিজের অনুভূতিতে যেমন ভেসে যাবেন না, তেমনই সেগুলি নিজের মধ্যে জোর করে চেপেও রাখবেন না। রাগ, দুঃখ, কান্না, হতাশার মতো কিছু অনুভূতি এই সময়ে স্বাভাবিক। কান্না পেলে কেঁদেনিন। রাগ হলে সেটা কোনও প্রিয় বন্ধুর কাছে প্রকাশ করুন। নিজের মধ্যে যত চেপে রাখবেন, তত সমস্যা পরে বাড়বে।
৬। নিজেকে গুরুত্ব দেওয়া শিখুন। শরীরচর্চা করা, মনের মতো খাওয়াদাওয়া করা, ভাল করে ঘুমোনো— অসম্ভব মনে হলেও এগুলি নিয়মিত করার চেষ্টা করুন। নিজের যত্ন নিন, মনের যত্ন নিন। গান শুনুন, পছন্দের ছবি দেখুন। অনেক সময়ে আমরা রোজের ব্যস্ততায় নিজের শারীরিক অনেক সুবিধা-অসুবিধা অবহেলা করি। এখন সেগুলির দিকে নজর দিন। দন্তচিকিৎসকের কাছে অনেক দিন যাওয়া হয়নি? চোখে ব্যথা হলেও পাওয়ার বেড়েছে কি না দেখে হয়নি? এটাই সেরা সময়, সব কাজ সেরে ফেলুন।