প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
সারা দিনের ক্লান্তির পর বালিশে মাথা দেওয়া মাত্র ঘুমিয়ে পড়বেন, এমন সৌভাগ্য অনেকেরই হয় না। করোনাকালে জীবনের অনিশ্চয়তা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। চাকরি, স্বাস্থ্য, আর্থিক অবস্থা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে নানা রকম দুশ্চিন্তা লেগেই থাকে। ঠিক ঘুমের সময়ে যেন সেগুলি আরও ভিড় করে মনের মাঝে। কিছুতেই মন শান্ত হতে চায় না। রাত ১টা-২টো-৩টে বেজে যায়, কিন্তু চোখে ঘুম নেই। পরের দিন আবার তাড়াতাড়ি ওঠা এবং রোজের ইঁদুর দৌড় শুরু। এই করে দিন দিন ঘুমের সময় কমে যাচ্ছে। তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে স্বাস্থ্যের। যে কোনও প্রাপ্তবয়স্কের সুস্থ থাকতে প্রত্যেক দিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু মুখে বলা যত সোজা, বাস্তবে তা একেবারেই নয়।
যাঁদের উদ্বেগের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ঘুম এমনিতেই কম। কিন্তু যাঁদের নেই, তাঁদেরও এই সমস্যা হতেই পারে। যাঁদের নিয়মিত ইনসোমনিয়ার সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ঘুম হবে না— এই চিন্তা থেকেই আরও বেশি উদ্বেগ তৈরি হয়। তাতে ঘুম আসতে আরও বেশি সমস্যা হয়। কী করলে ঘুম আসবে সহজে, এই নিয়ে নানা রকম গবেষণা চলতে থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কিছু নিয়ম মানলে ঘুম আসার অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। জেনে নিন সেগুলি কী।
রিল্যাক্স করা রপ্ত করুন
যোগ, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা ধ্যান— যা করলে মন শান্ত হয়, ঘুমের আগে তাই করার চেষ্টা করুন। তবে দিনের অন্য কোনও সময়েও আপনি এই অভ্যাসগুলি করতে পারেন। তাতে ঠিক ঘুমের আগে রিল্যাক্স করার বাড়তি চাপ অনুভব করবেন না।
ঘুমের রুটিন মেনে চলুন
তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া এবং সকালে তা়ড়াতাড়ি উঠে পড়ার নানা রকম সুবিধা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু আপনার যদি একটু দেরিতে ঘুমোনোরও অভ্যাস থাকে, তা হলে সেটাই রুটিন করে নিন। রোজ এক সময়ে ঘুম এবং এক সময়ে ওঠা, অত্যন্ত জরুরি। তবেই শরীরে একটা সময়ের পর বুঝতে পারবে কোন সময়ে ঘুমনো প্রয়োজন।
ঘুমের আগে ফাঁকা সময়
২৪ ঘণ্টার রুটিন বাঁধা? একটুও ফাঁক নেই। সারা দিনের ব্যস্ততা যদি ঘুমের ঠিক আগের মুহূর্ত পর্যন্ত চলে, তা হলে কিন্তু ঘুমিয়ে পড়া সহজ নয়। অন্তত ১৫-২০ মিনিট ফাঁকা রাখুন। যে সময়ে কোনও কাজ নেই। বই পড়তে পারেন, ত্বকের যত্ন নিতে পারেন, কিংবা ডায়েরি লিখতে পারেন। তা হলে শরীরও খানিক সময় পাবে ‘শাট ডাউন’ করার।
যন্ত্র থেকে দূর
অনেকে ফোন খাটের পাশের টেবিলে না রেখে দূরে কোনও টেবিলে রেখে দেন। এর দু’রকম সুবিধা রয়েছে। এক, রাতে ঘুমের আগে ফোনে কিছু দেখলে বা নেটমাধ্যমে ঘোরাফেরা করলে এমনিই ঘুমের দফারফা হয়ে যায়। সেই ঝামেলা মিটবে। দুই, সকালে অ্যালার্ম বাজলে উঠে গিয়ে বন্ধ করতে হবে, তাই ঘুম ভেঙে যাবে সহজে। ‘স্নুজ’ টিপে ফের ঘুমিয়ে পড়ার আশঙ্কাও কমবে।
আশঙ্কাগুলি লিখে ফেলুন
যা নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে, তা যদি একটি কাগজে লিখে ফেলতে পারেন, তা হলে উপকার পাবেন। মনের কথা জমিয়ে রাখলে সেগুলি রাতে বিছানায় শুয়ে আরও মনে আসবে। কিন্তু এক বার লিখে ফেলতে পারলে দেখবেন, সেগুলি নিয়ে ততটাও দুশ্চিন্তা হচ্ছে না। বারবার এক চিন্তা মনে আসতে দেবেন না। তার চেয়ে লিখে কাগজগুলি রেখে দিন।