হাঁপানির টান নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। ফাইল চিত্র।
দোলের দিন আর কতই বা মাস্ক পরে থাকা যায়! রং না খেললেও শুকনো আবিরের গুঁড়োয় অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ে অনেকের। বিশেষ করে, বাড়ির বয়স্কদের হাঁপানি বা সিওপিডি থাকলে তা বেড়ে যেতে পারে। চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, দোলের পরে অনেকেই আসেন, যাঁদের হাঁপানির টান বেড়েছে। হয়তো তাঁরা দোল খেলেননি, কিন্তু বাতাসে ভেসে থাকা আবিরের গুঁড়োয় বা রাসায়নিক দেওয়া রঙের গন্ধে সমস্যা বেড়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়?
ঋতু পরিবর্তনের এই সময় এমনিতেও হাঁপানির প্রকোপ বাড়ে। দূষিত বাতাস, ফুলের রেণু, ধোঁয়া, ধুলোয় শ্বাসের সমস্যাও বাড়ে। আর আবিরের গুঁড়োয় যে পরিমাণে অভ্র, লেডের মতো ভারী ধাতু মিশে থাকে, তাতে শ্বাসের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানাচ্ছেন, হাঁপানি বা সিওপিডির সমস্যা বেড়ে গেলে দিন কয়েক সাবধানে থাকতে হবে। তার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
কী কী নিয়ম মানা জরুরি?
১) অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিজ়িজ়ের ক্ষেত্রে ইনহেলার আর কাজ করে না। তখন নেবুলাইজ়ারের সাহায্য নিতে হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তা করতে হবে।
২) সাধারণ অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলা কিংবা মাস্ক পরে ধুলোবালি এড়ানো তো বটেই, ধূমপায়ীদের কাছ থেকেও দূরে থাকতে হবে।
৩) রোজের খাওয়া এমন হতে হবে, যাতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে। ফুসফুসের জোরও বাড়াতে হবে। প্রোটিন রাখতেই হবে রোজের খাদ্যতালিকায়। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ, বাদাম, শাক ইত্যাদি প্রোটিনে সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত জল খেতে হবে, যাতে শরীর আর্দ্র থাকে।
৪) ঘন ঘন দুধ চা বা কফি খাবেন না। বাইরে বেরোলে নরম পানীয়, ঠান্ডা শরবত বা আইসক্রিম ভুলেও খাবেন না। যদি শ্বাসকষ্ট হয় বা হাঁপানির টান ওঠে, তা হলে ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটে নুন ফেলে খেতে পারেন। তাতেও আরাম পাবেন।
৫) যে সব বয়স্ক মানুষ হাঁপানিতে ভুগছেন, তাঁদের প্রত্যেকের উচিত বাধ্যতামূলক ভাবে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়া।
৬) কনকনে ঠান্ডা জল বা ঠান্ডা পানীয় বর্জন করুন। ঈষদুষ্ণ জলেই স্নান করা ভাল।
৭) শ্বাসনালি ও ফুসফুস ভাল রাখতে নিয়ম করে ব্রিদিং এক্সারসাইজ় করুন। সারা বছরই হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এর জন্য অনুলোম-বিলোম করতে পারেন। প্রথমে ডান দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজ করতে হবে। পরে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, ডান দিক দিয়ে শ্বাসগ্রহণ ও বর্জনের অভ্যাস করতে হবে।