সমাজমাধ্যমে শিশুদের অসম্মানজনক কথা বলা, হেনস্থা করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। — প্রতীকী চিত্র।
এখন বাড়িতে বসে পড়াশোনার নিয়ম না থাকলেও অতিমারি পরবর্তী সময়ে ফোন কিংবা ল্যাপটপের প্রতি মোহ কিন্তু কাটেনি। তার উপর সমাজমাধ্যমে শিশুদের অবাধ যাতায়াত সাইবার বুলিংয়ের মতো অপরাধ বাড়িয়ে তুলছে। কিন্তু মুঠোফোন বা ল্যাপটপের ব্যবহার কমিয়ে দেওয়ার উপায়ও নেই। শুধু খেলাধুলো নয়, পড়াশোনার অনেকটাই এখন নির্ভর করে ইন্টারনেটের উপর। ডিজিটাল যুগে এ ধরনের যন্ত্র ব্যবহার না করার মানে পিছিয়ে পড়াও বটে। কিন্তু সমাজমাধ্যমে প্রতিনিয়ত শিশুদের অসম্মানজনক কথা বলা, হেনস্থা করা, তাদের চেহারা বা কাজের ব্যাপারে নিন্দা করা, অশ্লীল ছবি পাঠানোর মতো ঘটনায় সন্তান অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়তেই পারে। সন্তান সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে কি না, তা বুঝবেন কী করে?
১) আচরণে পরিবর্তন
হঠাৎ যদি সন্তানের ব্যবহারে কোনও রকম পরিবর্তন লক্ষ করেন, তা হলে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। দিনের বেশির ভাগ সময়েই যদি সন্তান অবসাদগ্রস্ত হয়ে থাকে, তা হলেও সতর্ক হোন। এমন ক্ষেত্রে ছবি আঁকা, গান শোনা, খেলাধুলো করার মতো শখে ইতি পড়াও অস্বাভাবিক নয়।
২) ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহারে অনীহা বা আসক্তি
পড়াশোনার প্রয়োজনেই হোক বা খেলার প্রয়োজন, মুঠোফোন হাতছাড়া করতে চায় না শিশুরা। সবচেয়ে কাছের মানুষ কিংবা বন্ধুদের থেকেও লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করে। রাতে না ঘুমিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অতিবাহিত করে ফোনের পিছনে। আবার, কোনও কোনও শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায়, তারা ফোন ব্যবহার করতে অনীহা প্রকাশ করছে। সমাজমাধ্যম থেকে অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলার মতো ঘটনাও খুব স্বাভাবিক। মনোরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, এ সবই সাইবার বুলিংয়ের লক্ষণ হতে পারে।
৩) একা থাকার প্রবণতা
একটা বয়সের পর শিশুদের একা শোয়ার অভ্যাস করাতে বলেন অনেকেই। কিন্তু এই একলা থাকার অভ্যাস অতিরিক্ত ফোনের ব্যবহার বাড়িয়ে তুলছে। তার মধ্যে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
৪) সমাজমাধ্যমে পরিবারের কাউকে না রাখা
বয়স ১৮ না হলেও এখন সমাজমাধ্যমে ভুয়ো তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। সমাজমাধ্যমে স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করার জন্য পরিবারের কাউকে রাখতে চায় না শিশুরা। তবে মনোবিদেরা বলছেন, এর পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে। সমাজমাধ্যমে অসম্মানজনক কোনও কিছু যেন পরিবারের কারও চোখে না পড়ে, তাই হয়তো তাঁদের সেখানে রাখতে চায় না।
৫) স্কুলে অনুপস্থিতির হার বেড়ে যাওয়া
শরীর খারাপের অজুহাত দেখিয়ে দিনের পর দিন স্কুলে না যাওয়া কিন্তু সাইবার বুলিংয়ের লক্ষণ হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা কিন্তু বয়ঃসন্ধিতে বেশি দেখা যায়।