প্রতীকী ছবি।
‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে, কে কোথা ধরা পড়ে কে জানে...’! প্রেমের ক্ষেত্রে এর চেয়ে অমোঘ সত্যি বোধহয় আর কিছু হয় না। তাই আশ্বিনে পুজো আসে, আর আসে পুজো স্পেশ্যাল প্রেমও। পাড়ার যে ছেলেটার দিকে কখনও সেই ভাবে তাকাননি, মণ্ডপে পাঞ্জাবি গায়ে তার দিকে তাকাতেই এক অন্য রকম অনুভূতি তৈরি হল। ছেলেটির অবস্থাও তথৈবচ। অনভ্যস্ত শাড়িতে অঞ্জলি দেওয়া অবস্থায় মেয়েটিকে সে যেন নতুন করে দেখল। অতএব ‘শুধু দুজনের আঁখিতে আঁখিতে...’। চোখের এই ভাষাহীন ভাষা কাজে রূপ পেতে দেরি হয় না। উঠতি বয়স, কাজেই আপনি ধরেই নিলেন প্রেম একেবারে প্রবল সমারোহে উপস্থিত!
কাট টু! মেসেঞ্জার ঘাঁটতে ঘাঁটতে করতে করতে ‘হাই’ পাঠালো আপনার ‘ক্রাশ’। পুজোর কয়েকদিন চ্যাটে-ভিডিও কলে আড্ডা, সব কথা একে-অপরকে বলা... যেন কত দিনের পরিচিত! প্রেম হল বলে... কিন্তু পুজো মিটতেই একেবারে বেপাত্তা!
ঘটনাগুলি চেনাচেনা লাগছে না? পুজোর প্রেম ব্যাপারটাই এই রকম, তাকে একেবারে সত্যি ভেবে বসেছেন তো মুশকিল!
কেন পুজোর প্রেমকে গুরুত্ব দেবেন না?
১) পুজোর মরসুমে আমরা একটু বেশিই আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি। দিনভর খাওয়াদাওয়া, অনেকটা ফাঁকা সময়। সেই রকম কোনও মুহূর্তে কারও সঙ্গে আলাপ হলে তাকে ভাল লাগতেই পারে। আর যেহেতু পুজো মানেই অখণ্ড অবসর। চেপে বসতে পারে তাকে জানার আগ্রহও। হয়তো সেই আগ্রহের ছলে সময় কাটাতে, একটা সাময়িক ঘোর তৈরি হয়েছে।
২) আমারও ‘পার্টনার’ আছে— এই জিনিসটা প্রমাণ করার তাগিদেও পুজোর প্রেম করার ইচ্ছে প্রবল হতে পারে। আশপাশে তার সব বন্ধু-বান্ধবী হয়তো খেতে যাচ্ছে বা ঠাকুর দেখতে যাচ্ছে, এটা দেখে তার মনে হচ্ছে আমারও কেন সঙ্গী থাকবে না! সারা বছর কাজের মধ্যে নিঃসঙ্গতা নিয়ে না ভাবলেও পুজোর সময় এই ‘সিংগল সিনড্রোম’ হয়তো সাময়িক প্রেমের জন্ম দিতে পারে। তবে এই সম্পর্কগুলি একেবারেই ভেবেচিন্তে হয় না কিন্তু!
৩) পুজোর সাজগোজে আপনাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়ে গেল? এটাও কিন্তু বড্ড সাময়িক। পুজো মিটলে সাধারণ পোশাকে আপনি তার সামনে দাঁড়ালে, হতেও পারে তার সেই অনুভূতি আর তৈরি হল না।
শেষে বলি, পুজোয় প্রেম করুন। চুটিয়ে। কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু শরতের শিউলির মতো এই প্রেমের আয়ুও বড় অল্প। মুহূর্তের এই প্রেমকে জীবনের সর্বস্ব ভেবে ফেলবেন না।